নাস্তিকদের লিখালিখির কিছু কৌশল
অনলাইনে নাস্তিকদের লেখালেখির কিছু নির্দিষ্ট কৌশল রয়েছে। তারা প্রথমেই এমন একটি বিষয়ের অবতারণা করে, যা দেখে মুসলমানরা ঘাবড়ে যায় এবং তর্কের শুরুতেই দুর্বল হয়ে যায়। এতে করে মুসলমানদের ওপর চড়াও হতে নাস্তিকদের অনেক সুবিধা হয়। নাস্তিকদের সেসব কৌশলের মধ্যে একটি বিশেষ কৌশল হলো, নিজেকে ধার্মিক পরিবারের সন্তান বলে দাবি করা।
প্রত্যেক নাস্তিকই দাবি করে, তারা নাকি সবাই এক একটা বিরাট ‘ধার্মিক পরিবার’ থেকে আগমন করেছে। তাদের ‘ধার্মিক’ পরিবার এ ধর্মের ‘কুৎসিত রূপ’ দেখেই নাকি তারা ধর্ম ছেড়ে নাস্তিকতার পথ বেছে নিয়েছে। কোন কোন নাস্তিক আবার দাবি করে, সে নাকি দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়তো। এখন পড়াশোনা করে হয়ে নাস্তিক হয়ে গেছে!
বলা বাহুল্য, নাস্তিকদের এসব দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। নাস্তিকেরা প্রত্যেকেই নাস্তিক পরিবার থেকে আগমন করলেও তারা এসব মিথ্যা দাবি করে থাকে মুসলমানদের মধ্যে হীনম্মন্যতা সৃষ্টি করার জন্য। প্রমাণস্বরূপ আমি প্রথমেই তসলিমা নাসরিনের বই ও ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে কিছু উদাহরণ তুলে ধরবো।
তসলিমা নাসরিন তার বইতে পরিবারকে দেখিয়েছে ধার্মিক হিসে্বে। যেমন ‘আমার মেয়েবেলা’ বইতে তসলিমা নাসরিন লিখেছে-
“ঈদের সকালে কলপাড়ে এক এক করে বাড়ির সবাই লাল কসকো সাবান মেখে ঠান্ডা জলে গোসল সারেন।...বাড়ির ছেলেরা শাদা পাজামা পাঞ্জাবি আর মাথায় টুপি পরে নেন। তাঁদের কানেও আতরের তুলো। সারা বাড়ি সুগন্ধে ছেয়ে যায়। বাড়ির পুরুষদের সঙ্গে আমিও রওনা দিই ঈদের মাঠে। সে কি বিশাল মাঠ! বড় বড় বিছানার চাদর ঘাসে বিছিয়ে নামাজে দাঁড়ান বাবা, দাদা ছোটদা, আর সব মামারা” (লিঙ্ক: https://goo.gl/OAVbwd)
এ পর্যন্ত পড়ে আপনার মনে হতে পারে, তসলিমা নাসরিনের বাবা, ছোটদা সবাই ‘জল’ দিয়ে ‘গোসল’ সেরে (‘জল’ই যখন লিখেছে, তখন ‘গোসল’ বাদ দিয়ে ‘স্নান’ লিখলেই তো পারতো) ঈদের নামায পড়তে যেতো। অথচ তসলিমা নাসরিন ফেসবুক স্ট্যাটাসে তার বাবাকে নিয়ে লিখেছে-
“নামাজ পড়তেন না। কোরান হাদিস পড়তেন না। টুপি জোব্বা পরতেন না। কখনও দাড়ি রাখেননি। ছোটবেলায় মা'র চাপে কোরান নিয়ে বসলে বাবা আমাকে ধমকে উঠিয়ে দিতেন। বলতেন, 'যাও পড়ার টেবিলে গিয়ে ইস্কুলের বই পড়ো, বিজ্ঞান পড়ো, যা পড়লে কাজে দেবে তা পড়ো'। “ (https://goo.gl/7gZ015)
তসলিমা তার বইতে লিখেছে তার বাবা ঈদের নামায পড়তে যেতো, আবার স্ট্যাটাসে লিখেছে তার বাবা কুরআন শরীফ পড়াই সহ্য করতো না। পাঠক হয়তো দ্বিধায় পড়তে পারে, কোনটা সত্যি? উপরের লিঙ্কে গিয়ে দেখুন, তসলিমার স্ট্যাটাসে তার ছোট বোন Rokshana Yasmin ও কমেন্ট করে সহমত জানিয়েছে। দুই বোন একইসাথে ফেসবুকে স্বীকার করেছে যে, তাদের বাবা ইসলামবিদ্বেষী ছিলো।
মূলত তসলিমার পুরো পরিবারটিই একটি নাস্তিক পরিবার। তসলিমা তার বইতে ঈদের জামাতের বর্ণনায় যেই ছোটদার উল্লেখ করেছে, এই বছরের মাঝামাঝি সেই ছোটদা ক্যান্সারে মারা যায়। তসলিমা তার ছোটদার মৃতদেহের ছবি দিয়ে একটি স্ট্যাটাসও দেয়। (লিঙ্ক:https://goo.gl/Z89izj)
উপরের লিঙ্কে গিয়ে তার সেই ছোটদা Rezaul K Kamal এর একাউন্টে ঢুকে দেখুন, দেখবেন সেও তার বোনের মতো কট্টর ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক। তসলিমা রিসেন্ট একটা স্ট্যাটাস দিয়েছে, সেখানে সে দেখিয়েছে সে গত ২০০৬ সালে তার বোনকে কলকাতার সমস্ত হিন্দু লেখক ও গায়কদের সাথে দেখা করিয়ে দিয়েছে। (https://goo.gl/8DG0s5) মূলত তসলিমা নাসরিনের সাথে তার ভাইবোনের সম্পর্ক এখনও টিকে রয়েছে, কারণ তার ভাইবোনেরাও নাস্তিক। মুসলমান হলে তারা অবশ্যই তসলিমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতো।
আমাদের দেশে নাস্তিকদের গুরু মানা হয় হুমায়ূন আহমেদের ভাই জাফর ইকবালকে। তাদের মা আয়েশা ফয়েজ ছিলো তার ছেলেদের চেয়েও বড়ো ইসলামবিদ্বেষী ও নাস্তিক। এই ঘোমটাপরা মহিলাকে দেখে বোঝার উপায় নেই, সে তার বইতে এতোটা ইসলামবিরোধী কথাবার্তা লিখতে পারে। (লিঙ্ক: http://goo.gl/rEI4hu)
পাঠকরা এখন নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে, নাস্তিকেরা যেই দাবি করে থাকে ‘ধার্মিক পরিবার’ থেকে উঠে এসে নাস্তিক হওয়ার, তা পুরোটাই ধাপ্পাবাজি ও মিথ্যাচার। নাস্তিকেরা নাস্তিক পরিবার থেকেই উঠে আসে, ধার্মিক পরিবার থেকে নয়। মূলত নাস্তিকদের গোড়াতেই গলদ থাকার জন্য তারা নাস্তিক হয়ে থাকে।
সবাইকে লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
(ছবি: তসলিমা নাসরিন, তার বোন ইয়াসমিন ও ভাই কামালের একত্র ছবি)
কে বলেছে তাসলিমার পরিবার নাস্তিক ছিল?? মটেও না ওর বাবা মা ধার্মিক ছিল।
ReplyDeleteআর কে বলেছে যে নাস্তিক রা নাস্তিক পরিবার থেকে উঠে আসে?? আমার পরিবার তো ধার্মিক তাহলে আমি নাসতিক হলাম কেন??? আমি তো ছোটো ব্যালায় সন্ধা দিয়েছি, পূজা কোরেছি। মা কালির ডেকেছি, মানত প্রজনতো কররেছি। তবুও আমি এখন ধর্ম ত্যাগি। ঈশ্বর এ বিশ্বাস করিনা। কেন?? আর খুব কম মানুষ নাস্তিক পরিবার থেকে আসে কারন দিন দিন নাস্তিক বারছে। তবে নাস্তিক পরিবার থেকে সবই নাস্তিক হয়। আর নামাজ, পূজা যারা করেনা তারা যে নাস্তিক সেটা ভাবা ভুল, কারন কোরান যারা পরেনা তারাও কিন্তু ঈশ্বর মানে। কোনার বাদে যদি কেউ বলে school এর বই পরতে, তার মানে তিনি যে নাস্তিক এটার প্রমান হয় না। আপনার ধারনা গুলি ভুল, আর নাস্তিক দের পরিবারের সম্পর্ক থাকবে না এটাও ভুল, আমার তো পরিবারের সাথে খুবি ভালো সম্পর্ক ।