১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ
৭১ এ বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিলো কেন ?
ধর্মনিরপেক্ষতা জন্য, নাকি স্বাধীন হয়ে আরো বেশি করে ইসলাম পালনের জন্য ?
উত্তর হবে- স্বাধীন হয়ে আরো বেশি করে ইসলাম পালনের জন্য। ইতিহাস বলে-
দ্বি-জাতি তত্ত্বে পাকিস্তান নামক স্বাধীন মুসলিম ভূমি সৃষ্টি হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছিলো এই বাংলাদেশের মুসলমানরাই। যে বাংলাদেশী (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) মুসলমানরা পৃথক মুসলিম ভূমির জন্ম দিলো, সেই বাংলাদেশীরা কি না মুসলিম রাষ্ট্রথেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ধর্মনিরপেক্ষ হওয়ার জন্য যুদ্ধ করে ?
এটাতো মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি এক চরম অপবাদ।
দ্বি-জাতি তত্ত্বে পাকিস্তান নামক স্বাধীন মুসলিম ভূমি সৃষ্টি হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছিলো এই বাংলাদেশের মুসলমানরাই। যে বাংলাদেশী (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) মুসলমানরা পৃথক মুসলিম ভূমির জন্ম দিলো, সেই বাংলাদেশীরা কি না মুসলিম রাষ্ট্রথেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ধর্মনিরপেক্ষ হওয়ার জন্য যুদ্ধ করে ?
এটাতো মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি এক চরম অপবাদ।
ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে- পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিলো মুসলমানদের জন্য। কিন্তু পাকিস্তান সৃষ্টির পর দেখা গেলো- যে উদ্দেশ্যে পাকিস্তান সৃষ্টি হলো তার পুরোটা সার্ভ করতে পারছে না দেশটি। পাকিস্তানী শাসক হিসেবে যারা ক্ষমতায় বসে ছিলো তারা মোটেও ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করার যোগ্য নয় এবং ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থও তারা রক্ষা করছিলো না। বরং ইসলামের নামে মুনাফিকি (বিশ্বাসঘাতকতা) করাই তাদের স্বভাব। তারা মুখে ইসলামের কথা বলে, আর সেই ইসলামের নাম দিয়েই বাংলাদেশের মুসলমানদের শোষণ করতো। মূলত: সেই বিশ্বাসঘাতকদের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে আরো ভালোভাবে ইসলাম পালন করার জন্য বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির সৃষ্টি হয়।
এ সম্পর্কে একটি দলিল আপনাদের সামনে উপস্থিত করছি, ১৯৭১ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সরকারের প্রচার দপ্তর থেকে ‘মোনাফেকদের ক্ষমা নাই’ শিরোনামে একটি প্রচারপত্র জারি হয়, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র তৃতীয় খণ্ড, ৩২৫ পৃষ্ঠায় সন্নিবেশিত আছে। সেখানে স্পষ্ট লেখা আছে-
“বাংলার মানুষ যখনই তাদের হক আদায়ের দাবি জানিয়েছে, ইনসাফের আওয়াজ তুলেছে , সুখে শান্তিতে মর্যাদার সাথে বাচতে চেয়েছে, তখনই পশ্চিম পাকিস্তানী গোষ্ঠী তাদেরকে দেশদ্রোহী, বিচ্ছিন্নতাবাদী, ভারতের দালাল বলে কুৎসা রটনা করে বাংলার সহজ সরল মানুষের মনে ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টির চেষ্টা করেছে।
অদৃষ্টের কি নির্মম পরিহাস ! যে দেশের সিংহপুরুষ মরহুম একে ফজলুল হক লাহোর প্রস্তাব উত্থ্যাপন করলো, যে দেশের মানুষ তাদের প্রিয় নেতা মরহুম হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে পাকিস্তানের পক্ষে নিরঙ্কুশ সমর্থন দিয়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠাকে সুনিশ্চিত করেছিলো, যে দেশের মানুষ তাদের প্রাপ্য আসন কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, মরহুম লিয়াকত আলী খান, চৌধুরী খালিকুজ্জামান, চৌধুরী মোহাম্মদ আলী, খান আব্দুল কাইয়ুম খানকে ছেড়ে দিয়েছিলো, সে দেশের মানুষ ও তাদের নেতৃবৃন্দের দেশপ্রেমে কটাক্ষ করা হয়েছে। অদৃষ্টের নির্মম পরিহাস ! যে দেশের আবাল আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা, নিজেদের অটুট ধর্মবিশ্বাসে পাঞ্জেগানা নামাজ আদায়ে ভুল করে না, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে মদ খেয়ে বেহুশ হয়ে থাকে না, কামুক নারীর উলঙ্গ নৃত্য ও উৎকট শুনে ক্লাবে ক্যাবারেতে আল্লাহর শান খুজে ফেরে না, ধর্মীয় বিধান মেনে যারা জিঘাংসাকে সংযত করে প্রীতি ও সৌহার্দের বাণী প্রচার করে, যে দেশের মানুষ পশ্চিম পাঞ্জাবী শোষণ ও শাসনকে ছোট ভাইয়ের উৎপাত বলে মনে করে নির্যাতনের অবসান কামনায় তাদের উপর আল্লাহ তায়ালার হেদায়েত বর্ষণের প্রার্থনা জানায়, সেই বাংলাদেশের মানুষের ধর্ম বিশ্বাসে সন্দেহ সৃষ্টি করার অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে ও হচ্ছে।”
(দ্রষ্টব্য: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধর দলিলপত্র তৃতীয় খণ্ড, ৩২৫ পৃষ্ঠা)
“বাংলার মানুষ যখনই তাদের হক আদায়ের দাবি জানিয়েছে, ইনসাফের আওয়াজ তুলেছে , সুখে শান্তিতে মর্যাদার সাথে বাচতে চেয়েছে, তখনই পশ্চিম পাকিস্তানী গোষ্ঠী তাদেরকে দেশদ্রোহী, বিচ্ছিন্নতাবাদী, ভারতের দালাল বলে কুৎসা রটনা করে বাংলার সহজ সরল মানুষের মনে ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টির চেষ্টা করেছে।
অদৃষ্টের কি নির্মম পরিহাস ! যে দেশের সিংহপুরুষ মরহুম একে ফজলুল হক লাহোর প্রস্তাব উত্থ্যাপন করলো, যে দেশের মানুষ তাদের প্রিয় নেতা মরহুম হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে পাকিস্তানের পক্ষে নিরঙ্কুশ সমর্থন দিয়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠাকে সুনিশ্চিত করেছিলো, যে দেশের মানুষ তাদের প্রাপ্য আসন কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, মরহুম লিয়াকত আলী খান, চৌধুরী খালিকুজ্জামান, চৌধুরী মোহাম্মদ আলী, খান আব্দুল কাইয়ুম খানকে ছেড়ে দিয়েছিলো, সে দেশের মানুষ ও তাদের নেতৃবৃন্দের দেশপ্রেমে কটাক্ষ করা হয়েছে। অদৃষ্টের নির্মম পরিহাস ! যে দেশের আবাল আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা, নিজেদের অটুট ধর্মবিশ্বাসে পাঞ্জেগানা নামাজ আদায়ে ভুল করে না, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে মদ খেয়ে বেহুশ হয়ে থাকে না, কামুক নারীর উলঙ্গ নৃত্য ও উৎকট শুনে ক্লাবে ক্যাবারেতে আল্লাহর শান খুজে ফেরে না, ধর্মীয় বিধান মেনে যারা জিঘাংসাকে সংযত করে প্রীতি ও সৌহার্দের বাণী প্রচার করে, যে দেশের মানুষ পশ্চিম পাঞ্জাবী শোষণ ও শাসনকে ছোট ভাইয়ের উৎপাত বলে মনে করে নির্যাতনের অবসান কামনায় তাদের উপর আল্লাহ তায়ালার হেদায়েত বর্ষণের প্রার্থনা জানায়, সেই বাংলাদেশের মানুষের ধর্ম বিশ্বাসে সন্দেহ সৃষ্টি করার অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে ও হচ্ছে।”
(দ্রষ্টব্য: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধর দলিলপত্র তৃতীয় খণ্ড, ৩২৫ পৃষ্ঠা)
পাঠক ! ১৯৭১ সালের এই প্রচারপত্র দ্বারা কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট হয়-
১) মুক্তিযুদ্ধ ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য নয় বরং ইনসাফ কায়েমের জন্য হয়েছিলো।
২) ঐ সময় বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সুযোগ-সুবিধা চাইতো, কিন্তু সেই চাওয়াটাকে অর্ধম বলে মিথ্যা রটনা করতো পাকিস্তানী শাসকরা।
৩) বাংলাদেশের মুসলমানরা মদ, নারী, নাচ-গান থেকে দূরে থাকতো এবং নামাজসহ সকল ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতো। কিন্তু এরপরও নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী মুসলমানদের ধর্মবিশ্বাস নিয়ে অপপ্রচার চালাতো।
১) মুক্তিযুদ্ধ ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য নয় বরং ইনসাফ কায়েমের জন্য হয়েছিলো।
২) ঐ সময় বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সুযোগ-সুবিধা চাইতো, কিন্তু সেই চাওয়াটাকে অর্ধম বলে মিথ্যা রটনা করতো পাকিস্তানী শাসকরা।
৩) বাংলাদেশের মুসলমানরা মদ, নারী, নাচ-গান থেকে দূরে থাকতো এবং নামাজসহ সকল ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতো। কিন্তু এরপরও নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী মুসলমানদের ধর্মবিশ্বাস নিয়ে অপপ্রচার চালাতো।
অর্থাৎ
বর্তমানে নাস্তিক্যবাদী ও হিন্দুদের সাথে ঐ সময় পাকিস্তানী শাসকদের স্বভাব একেবারে মিলে যায়। বর্তমানের নাস্তিক ও হিন্দুরা নিজেদের স্বার্থ আদায়ের জন্য প্রচার করে মুক্তিযোদ্ধারা ধর্মনিরপেক্ষতা চেয়েছিলো, আর ঐ সময় পাকিস্তানী শাসকরা নিজেদের স্বার্থ আদায়ের জন্য প্রচার করতো বাংলাদেশের মুসলমানরা নাস্তিক/ হিন্দু হয়ে গেছে। অর্থাৎ বর্তমান নাস্তিক-হিন্দু এবং অতীতের যুলুমবাজ পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী একই পথের পথিক ও মুক্তিযুদ্ধের উপর অপবাদ লেপনকারী।
বর্তমানে নাস্তিক্যবাদী ও হিন্দুদের সাথে ঐ সময় পাকিস্তানী শাসকদের স্বভাব একেবারে মিলে যায়। বর্তমানের নাস্তিক ও হিন্দুরা নিজেদের স্বার্থ আদায়ের জন্য প্রচার করে মুক্তিযোদ্ধারা ধর্মনিরপেক্ষতা চেয়েছিলো, আর ঐ সময় পাকিস্তানী শাসকরা নিজেদের স্বার্থ আদায়ের জন্য প্রচার করতো বাংলাদেশের মুসলমানরা নাস্তিক/ হিন্দু হয়ে গেছে। অর্থাৎ বর্তমান নাস্তিক-হিন্দু এবং অতীতের যুলুমবাজ পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী একই পথের পথিক ও মুক্তিযুদ্ধের উপর অপবাদ লেপনকারী।
পরিশেষে বলতে চাই-
ইতিহাসই স্বা্ক্ষ্য দিচ্ছে- ঐ সময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মধ্যে ছিলো মদ-নারী, নাচ-গান থেকে দূরে থাকা ও ধর্মপালন করার স্পৃহা । অথচ আজকে একটি গোষ্ঠী সেই মদ-নারী আর নাচ-গান ও অধর্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা খুজে ফেরছে ও প্রকাশ করছে। সত্যিই ইতিহাসের কি এক নির্মম বিকৃতি।
ইতিহাসই স্বা্ক্ষ্য দিচ্ছে- ঐ সময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মধ্যে ছিলো মদ-নারী, নাচ-গান থেকে দূরে থাকা ও ধর্মপালন করার স্পৃহা । অথচ আজকে একটি গোষ্ঠী সেই মদ-নারী আর নাচ-গান ও অধর্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা খুজে ফেরছে ও প্রকাশ করছে। সত্যিই ইতিহাসের কি এক নির্মম বিকৃতি।
No comments