হিন্দুত্ববাদী শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের প্রতিবাদ
নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে ইসলাম বিরুদ্ধ পাঠ্য পুস্তক সংযোজন করার প্রতিবাদে শুক্রবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী ছাত্রসেনা। তাঁরা অবিলম্বে ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপ বন্ধে সরকারের প্রতি আহব্বান জানান।
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বর্তমান শিক্ষানীতির উদাহরণ দিয়ে বলতে গিয়ে অনেক কথাই চলে আসবে, সরকার কর্তৃক প্রকাশিত তার নিজেস্ব ওয়েবসাইটে শিক্ষানীতির পূর্ণাঙ্গ গেজেটে আপনারা তা দেখতে পারবেন। কিছু না বললেই নয়, দ্বিতীয় শ্রেনির বাংলা বই থেকে বাদ দেয়া হয়েছে সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’এর জীবন চরিত,তার সাথে বাদ দেয়া হয়েছে খলিফা হযরত আবু বকর রাঃ শিরোনামে একটি সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত,বাদ দেওয়া হয়েছে ৫ম শ্রেনিতে পঠিত কাজী কাদের নেওয়াজের “শিক্ষা গুরুর মর্যাদা’ নামক একটি কবিতা। যা বাদশাহ আলমগীর মহত্ব বর্ণনা উঠে এসেছে এবং শিক্ষক ও ছাত্রের মধ্যে আদব কেমন হওয়া উচিত তা বর্ণনা করা হয়েছিলো।
৯ম শ্রেনিতে পঠিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা বিখ্যাত ‘উমর ফারুক’ কবিতা সহ অসংখ্য পাঠ্যসমুহ বাদ দেয়া হয়েছে। শুধু কি তাই? ৫ম শ্রেনির বাংলা বইতে অন্তর্ভুক্ত করা হল স্বঘোষিত নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ লিখিত ‘বই’ নামক একটি কবিতা, যা মূলত মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআন বিরোধী কবিতা,৯ম-১০ম শ্রেনির বাংলা বইতে প্রবেশ করানো হয়েছে ‘সাকোটা দুলছে’ শিরোনামের কবিতা, যেখানে ৪৭ এর দেশভাগকে হেয় করা হচ্ছে, যা দিয়ে কৌশলে ‘দুই বাংলা এক করে দেওয়া’ অর্থাৎ বাংলাদেশকে ভারতের অন্তর্ভূক্ত হতে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে, আর প্রবেশ করানো হয়েছে ‘সুখের লাগিয়া’ নামক একটি কবিতা, যা হিন্দুদের রাধা-কৃষ্ণের কেন এমনটি করা হল?
পবিত্র ধর্ম ইসলাম কে কেন এভাবে হেয় করা হল! ইসলাম আমাদের মূল্যবোধ শিখায়, আদব কায়দা শিখায়,ইসলাম থেকে দূরে থাকার জন্য আজ সমাজে এতো অন্যায় অবিচার চলছে।
প্রধান বক্তা ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক এডভোকেট মুহাম্মদ শাহীদ রিজভী বলেন, ইসলাম বিদ্বেষীদের কারণে শিক্ষক নামের কলঙ্গ পরিমলদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া আজকাল স্কুল-কলেজে নারীদের ফরজ পর্দা-হিজাবকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। এরই সাথে ঘটে গেল আরেকটি ন্যাক্কার জনক ঘটনা, এই বছরে অনুষ্ঠিত হওয়া এইচ.এস.সি পরীক্ষায় বাংলা ১ম ও ২য় প্রশ্নপত্রে করা হল ইসলাম বিদ্বেষী সৃজনশীল প্রশ্ন! ৬ষ্ঠ শ্রেণির ‘ ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা ‘ বইয়ে অসংখ্য ভুল। যেখানে প্রায় ২৪টি স্থানে মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআন শরীফের আয়াত ও হাদীসের রাসূল এর মাঝে প্রায় ৪৪ টি অংশে ভুল রয়েছে। প্রতিটি পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় পবিত্র আল-কোরআন ও হাদীস হরীফের ভুল উচ্চারণ তুলে ধরা হয়েছে, আরবি হরফ গুলো বিকৃত করে উপস্থাপন করা হয়েছে। এইভাবে ইসলামের শত্রুরা পবিত্র ধর্ম ইসলামের পিছনে উঠে পড়ে লেগেছে।
সরকারকে আমরা জানিয়ে দিতে চাই অবিলম্বে এই শিক্ষানীতি আমাদের আলেম সমাজকে সাথে নিয়ে পরিমার্জন করে তৈরি করতে হবে, ৬ষ্ঠ শ্রেণির’ ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা ‘ বইয়ে ভুল এবং বিকৃত ভাবে কোরআন-হাদীস উপস্থাপনের দায়ে “শিক্ষামন্ত্রী” কে পদত্যাগ করতে হবে ও সংশ্লিষ্ট জড়িতদের আইনের কাঁঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে শাস্তি প্রদান করতে হবে,এইচ.এস.সি পরীক্ষায় ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক উস্কানীমূলক প্রশ্নপত্র করায় সংশ্লিষ্ট জড়িতদের আইনের কাঁঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে শাস্তি প্রদান করতে হবে এবং ভবিষ্যতে ইসলামের শত্রুরা যাতে এমন ধৃষ্টতা না দেখাতে পারে অবিলম্বে সেইরূপ যথার্থ ব্যবস্থা নিতে হবে, প্রয়োজনে আমদের আলেম সমাজ কে সাথে কাজ করতে হবে।
No comments