গুলশানের হামলা যাদের স্বার্থে
অমুক নর্থ সাউথের ছেলে জঙ্গীপনা করেছে
তমুক স্কলাস্টিকার ছেলে হামলা করেছে
অমুক জঙ্গীটা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত
তমুক হামলাকারী ধনীর দুলাল........ইত্যাদি ইত্যাদি
আসলে আমার দৃষ্টিতে এসব আলোচনা মানে সময় অপচয়। হামলাকারী কে এটা নিয়ে এত সময় অপচয় করার পক্ষপাতি আমি নই। কারণ যারা হামলা করেছে, তারা অবশ্যই কারো ভাড়াটে সন্ত্রাসী নয় (এদের টাকার অভাব নেই তাই), তাদেরকে ব্রেইনওয়াশ করে কারো উদ্দেশ্য হাসিল করা হয়েছে । আর যাদের ব্রেইন ওয়াশ করা হয়েছে তাদের এত খুচিয়েও লাভ নেই। কারণ এদের বা তাদের পিতা-মাতার মাধ্যমে তার উপরের নিয়ন্ত্রকদের ঠিকানা কখনই বের করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
আমার মনে হয়,
এখন সেটাই আলোচনা করা দরকার যে-
-এ সকল ছেলেকে ব্রেনওয়াশ করে সামনে এগিয়ে দিচ্ছে কোন মাস্টারমাইন্ড কমিউনিটি ?
- তাদের উদ্দেশ্যই বা কি ?
- এবং এ ঘটনা আমাদেরকে কি মেসেজ দিলো ?
তবে দুঃখজনক হলেও সত্য- এখন যেটা সবাই আলোচনা করছে সেটা শুধুই মুখরোচক আলোচনা, আলোচনা করে মজা নেওয়া, ব্যস এতটুকু। কিন্তু আসল দিকে কেউ যেতে চায় না।
সাধারণত এ ধরনের হামলার পেছনে যে সব মাস্টারমাইন্ড থাকে, তারা একটি ঘটনা দিয়ে অনেকগুলো উদ্দেশ্য হাসিল করে। যেমন আমরা যদি গুলশানে হামলার ঘটনার ফলাফলগুলো বিবেচনা করি, তবে পরবর্তী উদ্দেশ্যগুলো ক্লিয়ার হবে। যেমন-
১) এ হামলার অনেকগুলো উদ্দেশ্য’র মধ্যে অন্যতম ছিলো জাপানের সাথে বাংলাদেশের বানিজ্যিক সম্পর্ক খারাপ করা এবং ইতিমধ্যে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে মারাত্মক ক্ষুব্ধ হয়েছে বলেও খবর এসেছে। ইতিমধ্যে জাপান বাংলাদেশে বানিজ্যিক সফর বন্ধ করার ঘোষণাও দিয়ে দিয়েছে। এর পেছনেও একটা লুকায়িত কারণ আছে, তা পরে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
২) গার্মেন্টস বায়ারদের হত্যা করে গার্মেন্টস শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করা। উল্লেখ্য গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংস করার জন্য বহুদিন ধরে ষড়যন্ত্র চলছিলো, এবং এমনও ঘোষণা চলছিলো বাংলাদেশের বায়ারদেরকে টানতে চাইছে ভারত। এ ঘটনার ফলে বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাত ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা সর্বাধিক।
৩) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- পুরো সময় সিএনএন ঘটনা সম্প্রচার করেছে। অর্থাৎ চেষ্টা করা হয়েছে- বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা এবং বাংলাদেশে জঙ্গীরাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণ করা। বাংলাদেশকে জঙ্গীরাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণ করতে পারলে সম্রাজ্যবাদীদের লাভ এবং বাংলাদেশের দালাল মিডিয়াগুলোর সহায়তায় কাজটি করেছে সিএনএন ওরফে সিআইএ।
৪) মার্কিনপন্থী মিডিয়া প্রচার করছে বাংলাদেশে আইএস আছে, কিন্তু বাংলাদেশ সরকার বলছে আইএস নাই। এক্ষেত্রে ভারত সরকারের উচিত ছিলো, আওয়ামী সরকারের সাথে সম্পর্কের ভিত্তিতে বলা- বাংলাদেশে আইএস না্ই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে- মোদি সরকারের লোকজন ও সরকারি মিডিয়া-ই আমেরিকার সাথে তাল মিলিয়ে প্রচার করছে বাংলাদেশে আইএস আছে। অর্থাৎ আমেরিকা ও মোদি সরকার এখন এক ট্র্যাকে, যা সমূহ বিপদ নির্দেশ করে।
৫) আমি কয়েকদিন আগেই বলেছিলাম- বাংলাদেশে মাইনাস-টু কার্যকর হতে যাচ্ছে। ১/১১ এর সময় যেটা হয় নাই, এখন সেটা হতে যাচ্ছে। গুলশানের ঘটনা মাইনাস টু কার্যকর হওয়ার একটা বড় ধাপ। আর মাইনাস টু করে বাংলাদেশে ড. ইউনুসের মত আমেরিকান কোন ভৃত্য যে সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছে সেটাও অনুমান করা যাচ্ছে।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য ভবিষ্যত নিয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করার দরকার আছে। সময় পেলে করবো, অপেক্ষা করুন।
No comments