ইসলাম ধর্মের বিরোধীতা করার নামই কি হিন্দুধর্ম ??
হিন্দু ধর্ম আসলে কি ? বাস্তবিক প্রয়োগে হিন্দু ধর্মে যা পাওয়া যায় তার পুরোটাই মুসলমানদের বিরোধীতা। মানে ইসলাম ধর্মের বিরোধীতা করলেই হিন্দুধর্ম পালন হয়।
যেমন ধরুন- ভারত উপমহাদেশে গরু নিয়ে কতকিছুই না করছে হিন্দুরা। মুসলমানদের ঘরে গরুর মাংশ আছে, ব্যস এতটুকু শুনলেই তাকে ঘর থেকে টেনে হিচড়ে হত্যা করছে, ধর্ষণ করছে, পিটিয়ে তক্তা বানাচ্ছে। অথচ খোদ হিন্দু ধর্মে কিন্তু গরু খাওয়ার বিপক্ষে কিছু বলা নাই, বরং পক্ষে বলা আছে। যেমন, হিন্দুধর্মে গরু খেতে বলা হয়েছে তার প্রমাণ -
গরু-বৃষের মাংস [বেদ:১/১৬৪/৪৩], মহিষের মাংস [বেদ: ৫/২৯/৮], অজের মাংস [বেদ:১/১৬২/৩] খাওয়া হত। আরও বলা হয়েছে পরস্বিনী গাভী মানুষের ভজনীয় [বেদ:৪/১/৬]। গো-হত্যা স্থানে গাভীগণ হত্যা হত [বেদ:১০/৮৯/১৪]। ইন্দ্রের জন্য গোবৎস উৎসর্গ করা হয়েছে। [ঋকবেদ: ১০: ৮৬: ১৪]। এমনকি উপনিষদ বলছে: ‘বেদজ্ঞান লাভ করতে হলে, স্বাস্থ্যবান সন্তান লাভ করতে হলে ষাঁড়ের মাংস খাওয়া জরুরি।” [সূত্র: বেদ; ২য় প্রকাশ, পৃ: ১৩, ৬৭; হরফ প্রকাশনী , কলিকাতা]
অর্থাৎ গরু খাওয়া হিন্দু ধর্মে নিষিদ্ধ নয়, শুধুমাত্র মুসলমানদের সাথে একটি সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব তৈরী করার জন্য গরুর উপর এত নিষেধাজ্ঞা।
গরু নিষিদ্ধের ব্যাপারটা যে পুরোটাই সাম্প্রদায়িক ইস্যু এর জন্য আপনি যদি ভারতের গরু জবাইয়ের আইনের দিকে তাকান তবে স্পষ্ট হবে। যেমন- তারা দাবি করছে গরু হিন্দু ধর্মে নিষিদ্ধ, তাই আগে প্রয়োজন হিন্দুদের গরু খাওয়া থেকে বিরত রাখা, মুসলমানদের নয়। অথচ ভারতের কর্নাটকে (যেখানে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ৮৩%) গরু জবাই করলে শাস্তি ৬ মাসের কারাদণ্ড, হিমাচলে (যেখানে হিন্দু জনগোষ্ঠী ৯৫%) গরু জবাই করলে ২ বছরের কারাদণ্ড। অথচ মুসলিম অধ্যুষিত জম্মু কাশ্মীরে গরু জবাই করলে ১০ বছরের কারাদণ্ড। অর্থাৎ হিন্দু জনগোষ্ঠীর থেকে মুসলিম জনগোষ্ঠীকে গরু থেকে বিরত রাখাই হিন্দুদের মূখ্য উদ্দেশ্য।
(দেখতে পারেন- https://en.wikipedia.org/wiki/Cattle_slaughter_in_India)
শুধু এটাই নয়, বর্তমানে বিশ্বে গরুর মাংশ রফতানিকারণ শীর্ষ দেশের নাম ভারত এবং শীর্ষ গরুর মাংশ রফতানিকারক কোম্পানির মালিকগুলোও পর্যন্ত হিন্দু।
(দেখতে পারেন- http://www.noyonchatterjee.com/2016/09/blog-post_18.html) উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি মার্কন্ডেয় কাটজু বলেছিলো- ‘আমি হিন্দু, গরুর মাংস খেয়েছি, আবার খাব’ (http://www.ntvbd.com/world/9581//print)
মানে হিন্দুরা গরু জবাই করলে দোষ নাই, মুসলমানরা করলেই দোষ।
গরুর বিষয়টি যে পুরোটাই মুসলিম বিরোধীতা কেন্দ্রীক, অন্য কোন ধর্মকে সেখানে টার্গেট করা হয় নাই। ভারতের গরু বিরোধী আইনের দিকে তাকালে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়। যেমন- উপজাতি অধ্যূষিত অরুনাচল, মনিপুর, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড ও মিজোরামে গরু খাওয়া আইনত বৈধ, গরু জবাইয়ের উপর সেসব স্টেটে কোন নিষেধাজ্ঞা নাই। অর্থাৎ গরুর বিরোধীতা শুধু মুসলমানদের জন্য, অন্য ধর্মের লোক গরু খেলে হিন্দুদের কোন সমস্যা হয় না।
আবার দেখবেন, হিন্দুরা বার বার বলে- “গরু নয় শুকর খান”। এর পেছনেও কিন্তু রয়ে গেছে মুসলিম বিরোধীতা, কারণ ইসলাম ধর্মে শুকর খাওয়া নিষিদ্ধ। অথচ শুকরও হিন্দুদের দেবতা। বরাহ (বন্য শুকর) হলো হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর অবতার https://bn.wikipedia.org/wiki/বরাহ)।
বিষয়টা দাড়াচ্ছে- গরু খাওয়া হিন্দু ধর্মে সিদ্ধ হলেও সেখানে তারা বাধা দিচ্ছে, কারণ মুসলমানরা তা খায়। আবার শুকর খাওয়াতে উৎসাহিত করছে, কারণ শুকর ইসলামে নিষিদ্ধ।
(দেখতে পারেন- মুসলমানদের বিরোধীতা করতে হিন্দুদের শুকর খাওয়ার উৎসব-
https://goo.gl/cFA9VN)
উপরের আলোচনা দ্বারা এটা স্পষ্ট- মুসলমানদের বিরোধীতা করাই বর্তমান হিন্দুদের ধর্মীয় অনুসঙ্গ হয়ে দাড়িয়েছে। সোজা ভাষায়- ইসলাম ধর্মের বিরোধীতা করার নামই হচ্ছে হিন্দুধর্ম।
No comments