পাঠার কাজ পাঠামি করা, ইসলাম ধর্ম বুঝা তো অনেক দূরের কথা
শুসু পাঠা উল্টোপাল্টা পাঠাতত্ত্ব জাহির করে ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে বলে যাচ্ছে, কিন্তু সে নিজেও বুঝে না সে কতবড় বোকা। এক স্ট্যাটাসে (http://bit.ly/2jihaXm) সে দাবি করছে- সৌদির আরবসহ পুরো মিডলইস্ট থেকে নাকি নারী শ্রমিকরা প্রেগনেন্ট হয়ে ফিরছে, এর কারণ- ইসলামে ঝি-দাসির সাথে শারীরিক সম্পর্ক বৈধ ।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, গাধাটা জানেই না দাসী কাকে বলে আর কাজের মহিলার মধ্যে তফাৎ কি ? এখানে কয়েকটি বিষয় জানা প্রয়োজন-
১) ঐ সময় আরবে যে দাসী, আর বর্তমানে কাজের মহিলা কখনই এক নয়। কাজের মহিলা/নারী শ্রমিক আর ঐ সময়কার দাসী সিস্টেম সম্পূর্ণ ভিন্ন ।দাসী হচ্ছে এমন এক নারী, যে সম্পূর্ণ তার মালিকের অধীন বা মালিকের সম্পত্তি বলে বিবেচিত হয়। ঐ দাসীর কোন স্বামী থাকতে পারবে না, তাকে আলাদা বেতন দিতে হয় না, তাকে শুধু ক্রয় করে নিয়ে আসলেই হয়। অপরদিকে বর্তমানে কাজের মহিলা বা নারী শ্রমিক কিন্তু দাসী নয়। ঐ কাজের মহিলা বা নারী শ্রমিকের স্বামী, পরিবার সব আছে। তাকে বেতন-ভাতা দিতে হয়, সে চাকুরে। বর্তমানে কাজের মহিলাকে যদি কেউ দাসী হিসেবে চালিয়ে দিতে চায়, তবে তা সম্পূর্ণ ভুল, এবং ইসলাম ধর্ম সেটা মোটেও স্বীকার করে না।
২) বর্তমানে ইসলামে আর দাস-দাসী প্রথা অবশিষ্ট নেই এবং আরো হাজার বছর আগেই তা ইসলামী দেশগুলো থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এর কারণ অবশ্য মুসলমানদের শেষ নবীর বিভিন্ন নিদের্শ। তিনি দাস-দাসীদের মুক্ত করার উপর আলাদা ধর্মীয় পুরুষ্কার (ফজিলত) বর্ণনা করেছেন। তাই ধিরে ধিরে মুসলিম সমাজ থেকে এই সিস্টেমটা উঠে যায়।
৩) অনেকে বলতে পারেন, দাসী সিস্টেমটা বন্ধ না করে নিরুৎসাহিত হলো কেন ? এর উত্তর- আসলে ঐ সময়কার সামাজিক অবস্থা বর্তমান সময়ের মত ছিলো না। মানুষ দাস-দাসী প্রথায় অত্যন্ত অভ্যস্ত ছিলো। কারণ তখন যুদ্ধ-বিগ্রহ লেগেই থাকতো, ফলে দাস-দাসী খুব স্বাভাবিক বিষয় ছিলো। অন্য ধর্মগুলো তেও তার তাকে সমর্থন দিতো। যেমন মদীনায় শর্ত ভঙ্গ করার কারণে বনু কুরায়জা গোত্রের ৭০০ ইহুদীকে হত্যা এবং তাদের নারী শিশুদের দাসী হিসেবে গ্রহণের বিষয়টি কিন্তু ইসলাম ধর্ম থেকে আসেনি। বরং এটা ইহুদী ধর্মের আইন অনুসারে হয়। সাহাবী সা'দ বিন মু'আয ইহুদী ধর্ম অনুসারে শর্ত ভঙ্গের শাস্তি স্বরূপ এই আইন প্রদান করেছিলেন। এর দ্বারা প্রমাণ হয়- ইসলাম আসার আগে দাস-দাসী প্রথা ছিলো। শুধু তাই নয়, সাহাবী সালমান ফারসী, প্রথম মুয়াজ্জিন সাহাবী বেলাল প্রত্যেকেই দাস ছিলেন। পরে তাদেরকে ইসলামে নিয়ে মুক্ত করা হয়। এক্ষেত্রে পরিস্থিতি বিবেচনা করলে- ইসলাম বরং কোরআন হাদীস দিয়ে দাস-দাসীদের অধিকার দিয়েছে। কারণ ঐ সময় দাস-দাসীদের উপর মালিকরা কঠিন যুলুম-অত্যাচার করতো, কিন্তু ইসলাম এসে দাস-দাসীদের অধিকার সংরক্ষণ করে এবং তাদের উপর যুলুম নির্যাতন বন্ধ করার আইন করে দেয় এবং দাস-দাসী মুক্ত করারে ভালো কাজ বর্ণনা করে সমাজ থেকে এই খারাপ প্রথা তুলে দেয় ।
৪) দাস-দাসী প্রথার জন্য ইসলামকে কেন দায়ী করা হবে ? ইসলাম যেখানে ১৪০০ বছর আগে দাস-দাসী প্রথাকে নিরুৎসাহিত করেছে, সেখানে আজকেও হিন্দু ধর্মে দাসী প্রথা রয়ে গেছে। ভারতে এখনও অনেক এলাকায় সেবাদাসী বা দেবদাসী প্রথা চালু আছে। সেবাদাসী বা দেবদাসী হচ্ছে মন্দিরের পুরোহিতদের ভোগের বস্তু। হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী অনেক কিশোরী বয়ঃপ্রাপ্তি হলে তাদের মন্দিরের পুরোহিতদের ভোগের জন্য রেখে আসা হয়। শুধু হিন্দু ধর্ম নয়, ব্রিটেনে আজ থেকে ১০০ বছর আগেও দাস-দাসীর ক্রয় বিক্রয় খুব প্রসিদ্ধ ব্যবসা ছিলো। ব্রিটিশ পানিদস্যুরা জাহাজগুলোকে আক্রমণ করতো আর নাবিকদের দাস হিসেবে বিক্রয় করতো। আফ্রিকায় ইউরোপী কলোনি স্থাপন করে কালো মানুষদের দাস হিসেবে বিক্রয় করার কথা সবাই জানে। ইউরোপীয়রা যখন আমেরিকায় গেলো, তখন রেড ইন্ডিয়ানদের ধরে ধরে দাস হিসেবে বিক্রি করতো। শুধু তাই নয়, দাসের মাংশ সে সময় খুব উপাদেয় খাদ্য ছিলো। তাই দেখা যাচ্ছে, ইসলাম যেখানে হাজার বছর আগে দাসপ্রথা থেকে সরে আসতে পেরেছে সেখানে হিন্দু-খ্রিস্টানসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা এখনও দাস-দাসী প্রথা থেকে সরে আসতে পারেনি। তাহলে দাস প্রথার জন্য ইসলামকে দায়ী করা হবে কেন ?
৫) আরবে গেলে নারী শ্রমিকরা নির্যাতিত হয়, কিন্তু অন্য দেশে গেলো কি হয় না ?? অবশ্যই হয়। নারী শ্রমিক তো অনেক দুর্বল জিনিস, আমেরিকায় নারী আর্মি অফিসাররা পর্যন্ত তাদের সহকর্মীদের ধর্ষণ থেকে রেহাই পায় না, বাকিরা দূরে থাক। আর বতর্মানে আরবের মধ্যে কেউ খারাপ কাজ করলে সেটা ঐ ব্যক্তি দোষ, এর জন্য ঐ ব্যক্তিকে দোষ দিতে হবে, কিন্তু ইসলাম এখানে দায়ী, এমন কোন প্রুভ কেউ দেখাতে পারবে না।
৬) সৌদি আরবে গেলে নারী শ্রমিকরা নির্যাতিত হয়, তাই সব সৌদি আরবের দোষ। কিন্তু যে নারী শ্রমিক টাকার লোভে সৌদি গেলো তার কি কোন দোষ নেই ?? ঐ নারী যদি মুসলমান হয়, এবং সে যদি ইসলাম ধর্ম অনুসরণ করে তবে সেখানে তো একাকী যেতে পারে না। এমনকি গেলে মান-সম্ভ্রম নষ্ট হতে পারে, এমন খবর পাওয়ার পর কোন ভালো মানুষের তো সেখানে যাওয়ার কথা না। বাংলাদেশে কি চাকুরীর অভাব পড়েছে ? আসলে সৌদি গেলে ৫০-৬০ হাজার টাকা বেতন পাওয়া যাবে এই লোভে ঐ মহিলাগুলো যায়, পরে যখন টাকা পায় না, তখন চরিত্রের দোহাই দিয়ে ফেরত আসে। যে সমস্তু সৌদি পুরুষ নারীদের উপর নির্যাতন চালায়, তারা যেমন দুশ্চরিত্র, ঠিক তেমনি যেসব বাঙালী নারী টাকার লোভে বিদেশে পাড়ি জমায় তারাও কম দুশ্চরিত্র নয়।
যাই হোক, লেখা অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে, তবুও শেষে সংক্ষেপে বলছি- পাঠার কাজ পাঠামি করা, জ্ঞানের চর্চা করা নয়। তাই গোমূত্র খোররা কিবোর্ড চাপতে পারলেই লেখক হয়ে যাবে, এমনটা না ভাবাই উচিত।
---------------------------------------------------
--আমার নতুন পেইজ Noyon Chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
--আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6 (https://www.facebook.com/202647270140320/)
No comments