দূর্গা পূজা নয়, আদিবাসী হত্যা দিবস বলুন
আজকাল অনেকেই আদিবাসী হত্যার বিরুদ্ধে সবর হয়েছে। ইউরোপীয়ারা আমেরিকায় গিয়ে আদিবাসী রেড ইন্ডিয়ানদের হত্যা করেছে এ ইতিহাস অনেকেরই জানা। আবার ইউরোপীয়রা অস্ট্রেলিয়াতে গিয়েও আদিবাসীদের হত্যা করেছিলো। একই ঘটনা ঘটেছে ভারত উপমহাদেশেও। পারস্য বা ইরান থেকে আগত আর্যরা হত্যা করেছিলো এ অঞ্চলের আদিবাসী সাওতালদের। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, সেই আদিবাসী হত্যা দিবস আজকে দূর্গা পূজা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
দুর্গা সাঁওতাল ভাষায় পুংলিঙ্গ। এর স্ত্রীলিঙ্গ শব্দটি দূর্গী। সাঁওতালী লোকসাহিত্যে উল্লেখ রয়েছে যে, তাঁদের রাজা দুর্গার কণ্ঠস্বর ছিল বজ্রের(হুদুড়) মত। তিনি পরাক্রান্ত বীর। আর্য সেনাপতি ইন্দ্র চাইচম্পাগড় আক্রমণ করে হুদূর দুর্গার হাতে পর্যুদস্ত হয়। পরপর সাতবার আক্রমণ করে পরাজিত হওয়ার পরে ইন্দ্র বুঝতে পারেন যে সরাসরি যুদ্ধে হুদুড়দুর্গাকে পরাজিত করা সম্ভব নয়। তাই ছলনা এবং কৌশলের আশ্রয় নেন ইন্দ্র। হুদুড়ের রণকৌশলের মধ্যে কোন দুর্বলতা আছে কিনা এই খোঁজ শুরু করেন ইন্দ্র। ইন্দ্র জানতে পারে যে অসুর নিয়ম অনুসারে এ দেশের রাজারা আশ্রিতের সাথে, শিশুর সাথে, দিবাবসানে, রাত্রে এবং নারীর সঙ্গে যুদ্ধ করেন না। সুযোগ পেয়ে যায় ইন্দ্র। সে লাবণ্যময়ী বারাঙ্গনা “দেবী”কে উপঢৌকন হিসেবে হুদূরদুর্গার কাছে প্রেরণ করে। এক মহিষী থাকতে দ্বিতীয় নারীকে গ্রহণ করা যায় না এই অসুরনীতি মেনে দেবীকে প্রত্যাখ্যান করেন হুদূরদুর্গা। ইন্দ্র এবার নিজেই সন্ধির প্রস্তাব দেন। ঠিক হয় বৈবাহিক সম্পর্কের মাধ্যমে তাঁরা বৈরিতা দূর করবেন। বিশ্বাস অর্জনের জন্য দেবীর সাথে হুদুড়দুর্গার বিয়ের প্রস্তাব দেন ইন্দ্র। হুদুড়দুর্গা আবার এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। ইন্দ্র জানান যে হুদুড়দুর্গা দেবীকে প্রত্যাখ্যান করলে লোকে তার পৌরুষ নিয়ে প্রশ্ন তুলবে। উপায়ান্তর না ভেবে হুদূড়দুর্গা দেবীকে বিয়ে করতে রাজি হয়। ইন্দ্রের আসল উদ্দেশ্য ছিল দেবীর মাধ্যমে হুদুড়দুর্গার দুর্বল মুহূর্তগুলির খোঁজ নেওয়া এবং সেই সুযোগে তাকে হত্যা করা। দেবীর মাধ্যমেই ইন্দ্র জানতে পারে যে একমাত্র রাতের বেলায় ঘুমাতে যাবার আগে হুদুড়দুর্গা শস্ত্র খুলে রাখে এবং তার দুর্ধর্ষ রক্ষীরা কাছে থাকে না। বিয়ে করার অষ্টম দিনে হুদূড়দুর্গাকে হত্যা করার কৌশল ঠিক করে নিলো ইন্দ্র। সে দেবীকে জানালো যে নবমীর রাতেই হুদূড়কে হত্যা করতে হবে। তাকে কামাসক্ত করে সুরাসক্ত করে মহাঘোরের মধ্যেই হত্যা করতে হবে। আদিবাসীদের বিশ্বাস নবমীর রাতেই দেবী নিজে আকন্ঠ সুরাপান করে এবং হুদুড়দুর্গাকে সুরাসক্ত অচৈতন্য করে তার বুকে খঞ্জর বসিয়ে দেয় এবং পরেরদিন ভোর রাতে তার দেহকে ইন্দ্রের শিবিরে নিয়ে আসে। হুদুড়দুর্গাকে হত্যা করার ফলে তার নাম হয় “দেবীদুর্গা” ।
অপরদিকে হিন্দুদের মতে, ইরান থেকে আগত আর্য দূর্গাবাহিনী এ অঞ্চলের অনার্য মহিষাশুর বাহিনীকে পরাজিত করার ঘটনাকেই তারা দূর্গা পূজা হিসেবে গ্রহণ করেছে। সাওতাল বর্ণিত ছলনার আশ্রয়কে তারা এড়িয়ে যায়। তবে বহিরাগত বাহিনী যে এ অঞ্চলের আদিবাসীদের হত্যা করার ঘটনাকে দূর্গা পূজার রুপ দিয়েছে, তা হিন্দুরাও অস্বীকার করতে পারবে না।
মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব কোরবানী ঈদের সময় কাউকে কাউকে বলতে শুনেছি-
“প্রাণী হত্যা দিবসকে কিভাবে ধর্মীয় উৎসব হতে পারে ?”
একই ভাবে চিন্তা করলে- আদিবাসী হত্যা দিবস কিভাবে একটি ধর্মীয় উৎসব হতে পারে ?
তাও আবার অনেকের ভাষায়- সার্বজনিন আদিবাসী হত্যা দিবস ।
কথিত আদিবাসী প্রেমীদের চুপ থাকা সত্যিই পীড়াদায়ক।
---------------------------------------------------
--আমার ফেসবুক মূল পেইজ Noyon Chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
--আমার ফেসবুক ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6 (https://www.facebook.com/202647270140320/
No comments