বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে নারী লাঞ্চনা ও আমার গোয়েন্দাগিরি
মাঝে মাঝে গোয়েন্দাগিরি করতে ভালো লাগে। তাই শখের বশে মাঝে মাঝে করি, এই আর কি। এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে নারী লাঞ্চনা নিয়ে আমার বার বার মনে হয়েছে গোয়েন্দাগিরি করা দরকার। কারণ এ ধরনের ঘটনা কে ঘটাতে পারে তা বের করা জরুরী। এ গোয়েন্দাগিরির জন্য সবচেয়ে উপকারি হয়েছে গতকালের একাত্তর টিভির ভিডিওটি (http://goo.gl/Qkk8Ea)। এ ভিডিওটি নিয়ে একটু এ্যানালাইসিস করলে ক্লু দিয়ে সহজেই ধরা পড়ে মূল কালপ্রিট কে ?
কি জানতে চাচ্ছেন, ঐ দিনের ঘটনায় মূল কালপ্রিট কে ??
মূল দায়ি ৩ জন এবং পুরুষ্কার প্রাপ্ত হচ্ছে ১ জন।
১) ছাত্র ইউনিয়ন
২) একাত্তর টিভি
৩) প্রথম আলো
২) একাত্তর টিভি
৩) প্রথম আলো
এবং অভিনয়ে অস্কার পাওয়ার যোগ্য হচ্ছে লিটন নন্দী।
কি ক্লু জানতে চাচ্ছেন ? ধৈর্য ধরেন বলছি:
ক্লু-১: দাড়িওয়ালা পাঞ্জাবি পরা লোকটি এক জায়গায় এক ঘন্টার উপর দাড়িয়ে আছে, কেননা সে জানে তাকে ঐ স্থানেই সিসিটিভির নিচেই ঘটনা ঘটাতে হবে। সে শুধু অপেক্ষা করছিলো সন্ধা নামার জন্য।
ক্লু-২: দাড়িওয়ালা গ্রুপ আগেই তৈরী ছিলো, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে একই ধরনের দাড়ি। যারা দাড়ি রেখেছিলো তাদের জামায়াত-শিবির স্ট্যাইল, মানে চাপ দাড়ি ফলো রাখতে বলা হয়েছিলো, কিন্তু বিষয়টি বেশি সস্তা বুদ্ধি হয়ে যায়। বর্তমানে শিবির সদস্যরা বেশিরভাগ দাড়ি রাখে না। এবং দশ জনে দশ জনের দাড়ি আছে শিবিরের মধ্যে এমন নাই। (বি: দ্র: লেলিনের মুখেও কিন্তু দাড়ি ছিলো)
ক্লু-৩: ১০-১৫ জন টিমের মাথায় গামছা ছিলো, কারণ তারা জানতো তাদের সিসিটিভিতে ধারণ করা হচ্ছে, তাই ঘটনার পরে দাড়ি কাটা মাথার গামছা সরালে আর চেনা সম্ভব হবে না।
ক্লু-৪: প্রথম আলো ১০০ ভাগ দায়ি। এবং বিষয়টি লুকানোর জন্য সে প্রথমে খবরটা প্রকাশ করেনি, ইসলামপন্থী মিডিয়াগুলো দিয়ে প্রকাশ করে। আরো সতর্ক হওয়ার জন্য প্রায় ২৮ ঘন্টা পর প্র্রথম খবর করে। এমন ভাব যে, সে ঘটনা জানতোই না। তবে ‘দাড়ি তত্ত্ব’ কিন্তু সেই প্রথম প্রকাশ করে।
ক্লু-৫: লিটন নন্দী প্রথম মানবন্ধনে বলেছিলো, তার মোবাইল দিয়ে কোথাও কল যাচ্ছে না। এই ‘মোবাইল বন্ধ’ ক্লুই প্রমাণ করে এটা সাজানো ঘটনা এবং লিটন নন্দী একজন পাকা অভিনেতা। লিটন নন্দী ইচ্ছা করেই মোবাইল বন্ধ রেখেছিলো। কেননা সে জানতো ঘটনার পর মোবাইল ট্রাকিং হবে। আর মোবাইল ট্রাকিং হলে সে ধরা খাবে। আর মোবাইল সাথে থাকলে সে কোথায় কোথায় গিয়ে পরিকল্পনা করেছিলো তা ধরা পরে যাবে। এছাড়া ঘটনার উত্তেজনায় যে কেউ ফোন করে জিজ্ঞেস করতে পারে ‘কাজ কতদূর’। তাই সমূহ বিপদ থেকে বাচতে সে আগেই মোবাইল সিম খুলে রাখে এবং এ জন্যই কোথাও কল যাচ্ছিলো না। তবে প্রথম দিনের মানববন্ধনে লিটন নন্দীর স্পিচটা ছিলো সত্যি পারভেক্ট অভিনয়।
ক্লু-৬: ঘটনার মূল উদ্দেশ্য ছিলো সাম্প্রদায়িক। মানে ঘটনাটা শেষে গিয়ে পৌছাবে এরকম “সংখ্যাগুরু মুসলমানরা নারীদের ইজ্জত নষ্ট করে, আর সংখ্যালঘু হিন্দুরা নারীদের ইজ্জত রক্ষা করে।” এজন্য ঘটনার জন্য সামনে আনা হয় তিন জন সংখ্যালঘু হিন্দুকে (লিটন নন্দী, সুমন সেন গুপ্ত ও অমিত দে) ।
ক্লু-৭: ‘পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে’ এ কথা বার বার বলা হচ্ছে। আসলে যারা ঘটনা ঘটায়, তারা খুব ভালো করেই জানে, ঘটনার মোড় অন্যদিকে নিতে হয় কিভাবে । এ বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। আশরাফুল নামক ঐ পুলিশ ছাত্র ইউনিয়নের এ দাবি অস্বীকার করেছে।
কি কারণে তিনজন (প্রথম আলো+একাত্তর টিভি+ছাত্র ইউনিয়ন) মঞ্চস্থ করলো এ নতুন ‘জজ মিয়া নাটক’:
১) মূল উদ্দেশ্য মার্কিন সৃষ্ট তালেবান কিংবা আইসিস নাটকের মত। নিজেরাই সাপ হয়ে কেটে পরে ওঝা হয়ে ঝেড়ে দেবে। এর মাধ্যমে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হবে: “সংখ্যাগুরু মুসলমানরা নারীদের ইজ্জত নষ্ট করে, আর সংখ্যালঘু হিন্দুরা নারীদের ইজ্জত রক্ষা করে।”
২) মুসলমানদের মধ্যে অনেকেই এবার পহেলা বৈশাখের বিরুদ্ধচারণ করছিলো। তাই এ ঘটনার মাধ্যমে তাদের ফাদে ফেলা ও মুখ বন্ধের একটা কৌশল ছিলো।
৩) এ ঘটনার পর কথিত নারীবাদীরা নতুন নতুন মতবাদ অনলাইনে ছেড়ে দিতে সক্ষম হয়।
৪) আওয়ামীপন্থী প্রক্টরের উপর ছাত্র ইউনিয়ন আগে থেকেই ক্ষেপা, কারণ ছাত্র ইউনিয়নের অনেক অপকর্মে সহযোগীতা সে দেয় না। তাকে এ ঘটনার মাধ্যমে অপসারণ করাও একটা উদ্দেশ্য ছিলো।
৫) প্রথম আলো ও ছাত্র ইউনিয়ন আওয়ামী সরকারের ঘোর বিরোধী। এ ঘটনার মাধ্যমে তারা সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চেয়েছিলো, প্রমাণ করতে চেয়েছিলো সরকার অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, নতুন করে সরকারের সাথে ইসলামপন্থীদের লাগিয়ে দেওয়াও একটা উদ্দেশ্য ছিলো। এছাড়া অভিজিত-ওয়াশিকুরের মৃত্যু, গনজাগরণ মঞ্চ হাতছাড়া হওয়া, বইমেলায় নাস্তিকদের উপর কড়াকড়ির জন্য সরকারের উপর প্রতিশোধ নেওয়াও একটা উদ্দেশ্য ছিলো।
এখন মূল ঘটনার সূত্র কিভাবে খুজে বের করা যেতে পারে:
ক) প্রথমেই লিটন নন্দীর হাতের ব্যান্ডেজ খুলে এক্সরে করুন এবং দেখুন আদৌও তার কোন হাড় ভেঙেছে কিনা।
খ) প্রত্যেক ছাত্র ইউনিয়নের সদস্যদের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করুন, এবং
গ) প্রথম আলো ও একাত্তর টিভি কর্মকর্তাদেরও মোবাইল ট্র্যাকিং করুন।
ব্যস আমি নিশ্চিত থলের বেড়াল এখানেই বের হয়ে আসবে।
ক) প্রথমেই লিটন নন্দীর হাতের ব্যান্ডেজ খুলে এক্সরে করুন এবং দেখুন আদৌও তার কোন হাড় ভেঙেছে কিনা।
খ) প্রত্যেক ছাত্র ইউনিয়নের সদস্যদের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করুন, এবং
গ) প্রথম আলো ও একাত্তর টিভি কর্মকর্তাদেরও মোবাইল ট্র্যাকিং করুন।
ব্যস আমি নিশ্চিত থলের বেড়াল এখানেই বের হয়ে আসবে।
আমার মনে হয়, বাংলাদেশে সব মানুষ এ ঘটনার দোষী সম্পর্কে জানতে চায়। আমিও চাই মূল দায়ি বের হয়ে আসুক। বাংলাদেশ থেকে চিরতরে নিষিদ্ধ হউক-
ছাত্র ইউনিয়ন, প্রথম আলো ও একাত্তর টিভি।
ছাত্র ইউনিয়ন, প্রথম আলো ও একাত্তর টিভি।
No comments