পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাস বিকৃত, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহাসিক ভিত্তি বিকৃতি
পাঠ্যপুস্তককে নানান কায়দায় করা হচ্ছে ইতিহাস বিকৃত, ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহাসিক ভিত্তি
কয়েকদিন আগে ভারতের রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) প্রধান মোহন ভগবত বলেছিলো “পুরো ভারতীয় উপমহাদেশই আসলে হিন্দু জাতির বাসস্থান। এই উপমহাদেশের বাসিন্দারা যে যেখানেই বসবাস করুক না কেনো, বা যে নামেই নিজেকে পরিচয় দিক না কেনো, সে আসলে হিন্দুস্তান এবং হিন্দু জাতীয়তাবাদের অংশ। শুধু ভারতই নয়, এর বাইরে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানও হিন্দুস্তানের অংশ।” (http://goo.gl/jtPqe7)
উগ্রহিন্দুত্ববাদী আরএসএস অখণ্ড ভারত তত্ত্বে বিশ্বাসী, এ কারণে তারা বারবার নানান কায়দায় বাংলাদেশ-পাকিস্তানকে ভারতের সাথে মিশে যেতে বলে। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস কিন্তু সেটা বলে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস বলে ভিন্ন কথা। ইতিহাস বলে বাংলাদেশের মানুষ সর্বদা মুসলিম হিসেবে পৃথক অস্তিত্ব চেয়েছিলো, সাপোর্ট করেছিলো দ্বিজাতি তত্ত্বকে। যার ফলশ্রুতিতে সৃষ্টি হয়েছিলো ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি আলাদা রাষ্ট্র।
বলাবহুল্য দ্বিজাতি তত্ব জিন্নাহ প্রকাশ করলেও এই তত্ত্বের উপর পুরোপুরি সমর্থন ছিলো বাংলার নেতাদের। এজন্য কেউ কখনো দেখাতে পারবে না হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক কিংবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কখন দ্বিজাতি তত্ত্বের বিরোধীতা করেছেন, এই বিরোধীতার কথা বলাটাও আসলে হাস্যকর, কারণ বাংলার এই নেতারা দ্বিজাতি তত্ত্বের উপর ভিত্তি করেই পৃথক রাষ্ট্র গড়ার জন্য আন্দোলন করেছিলেন। এ কারণে পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রস্তাবক একজন বাঙ্গালী (শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক)।
অথচ সকল ইতিহাসকে দুমড়ে মুচড়ে ফেলে আ্রএসএস’র দেওয়া ইতিহাস এখন বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকে পড়ানো হচ্ছে। পড়ানো হচ্ছে দ্বিজাতি তত্ত্বে ভুল ছিলো। এই ইতিহাস পড়ানোর মাধ্যম বাংলাদেশের ভবিষ্যত প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করে দেওয়া হচ্ছে। নষ্ট করা হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল ভিত্তি। বিষয়টি যে কত ভয়াবহ, তা বোধকরি বাংলাদেশের মানুষ এখনও অনুধাবন করতে পারে নাই। সব শেষে শুধু এতটুকু বলবো, যে জাতি তার ১০০ বছর আগের্ ইতিহাস ভুলে য়ায়, সে জাতি আগামী ১০০ বছর টিকে থাকতে পারবে নাকি তাতে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
No comments