পহেলা বৈশাখ : বাঙালীর চুনুপুনু বিনোদনের খোরাক

চুনুপুনু শব্দটা নতুন । তবে এ অনুভূতিটার সাথে অনেকে পরিচিত। ‘চুনুপুনু বিনোদন’ দ্বারা অনেকটা সফট কোরের যৌন আনন্দ বুঝায়। আরো সহজ ভাষায় প্রকাশ করলে লুচুমি শব্দটা ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে ‘চুনুপুনু’ শব্দটা দ্বারা আধো, কোয়ার্টার ও মনে মনে লুচুমি করাকেই বোঝায়।

সত্যিই বলতে, ইউরোপ-আমেরিকায় ড্যান্সবার নাইট ক্লাব এভেইলেবল থাকায় তারা নিজের অনৈতিক চাহিদাকে নানাভাবে প্রশমন করার সুযোগ পায়। কিন্তু বাংলাদেশে সে রকম নাই। তাই বাংলাদেশের এ ধরনের কোন সুযোগ পেলে একটি গোষ্ঠী সব সময় লুফে নেয়, কোথা থেকে আসলো তা দেখার প্রয়োজন বোধ করে না।এ কারণে সাম্প্রাতিক সময়ে বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখ, পানিকেলী, থার্টি ফাস্ট নাইট, ভ্যালেন্টাইন ডে, হোলি পূজা, সরস্বতী পূজা, দূর্গা পূজা ইত্যাদি চুনুপুনু বিনোদন নেওয়ার মত দিবসগুলো বেশি বেশি দেখা যাচ্ছে। এর প্রধান কারণ বাংলাদেশে একটি মুসলিম নামধারী সমাজ আছে যারা এ চুনুপুনু বিনোদন লাভ করতে চায়, এ দিবসগুলোতে তারা সে সুযোগটাকে কাজে লাগায়। এদের সংখ্যাও অবশ্য কম নয়। মূলত তাদের ব্যাপক চুনুপুনু চাহিদার কারণেই এ দিবসগুলো বাংলাদেশে স্থায়ীত্ব লাভ করছে। এ শ্রেনীর জনগোষ্ঠীর মধ্যে যুবক-যুবতী, কিশোর-দিশোরী, বিবাহিত-অবিবাহিত সবই আছে। মেয়েরা সাদা শাড়ি লাল পাড় পরবে, কপালে ইয়া বড় টিপ দিয়ে ইরোটিক ইরোটিক ভাব নেবে, ঠোটে গাঢ় লালচে লিপিস্টিক লাগবে, খোপায় ফুলের তোড়া লাগাবে, ইয়া বড় ব্লাউজের পিঠ হবে, গানের তালে তালে পেট দেখিয়ে নাচবে, কেউ ভীড়ের মধ্যে চাপ দিবে, কেউ চাপ খাবে। এরা কেউ হাত দিয়ে ধরতে চায়, কেউ হাতের স্পর্ষ অনুভব করতে চায়, কেউ চোখ দিতে দেখতে চায়, কেউবা অপরকে দেখতে দিয়ে আনন্দিত হয়। সবটাই চুনুপুনু বিনোদনের অংশ। তবে কেউ একটু বেশি উত্তেজিত হয়ে চুনুপুনু’র বর্ডার ক্রস করলেই ‘ বর্ষবরণে নারী নিপীড়িত হয়েছে’ টাইপের কথা শোনা যাবে।

এখানে মনে রাখতে হবে, যতই বাঙালী সংষ্কৃতি, হাজার বছরের ঐতিহ্য, আবহমান সংষ্কৃতি ইত্যাদি বলে ভাঙ্গা রেকর্ড বাজানো হোক না কেন, সবটাই ভুয়া কথা । সব কাজের পেছনের কাজ আছে ঐ চুনুপুনু বিনোদন। বিশ্বাস না হয়, আপনি আজকেই চুনুপুনু বিনোদনের উৎসগুলো বন্ধ করে দিন, দেখবেন কালকেই বাঙালীর হাজার বছরের ঐতিহ্য পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গেছে। তখন তারাই বলবে- “কি দরকার, এ সব অপ্রয়োজনীয় কাজ করার। সব শুধু সময় আর অর্থ অপচয়।যত্তসব, বাদ দাও তো !