Header Ads

ad728
  • Breaking News

    নারায়নগঞ্জে হিন্দু শিক্ষক কতৃক ইসলাম অবমাননা এবং আমার কিছু কথা

    প্রসঙ্গ: কথিত শিক্ষকের কানে ধরে উঠবস- সম্মান যদি পেতে চাও, তবে অপরকে সম্মান দাও আগে সম্প্রতি নারায়নগঞ্জে ধর্ম অবমাননাকারী এক হিন্দু শিক্ষককে গণপিটুনি দেওয়ার পর কান ধরে উঠবস করা নিয়ে নাস্তিক ও হিন্দুদের মধ্যে কান্নাকাটি শুরু হয়েছে। তারা শ্লোগান দিচ্ছে- “শুধু একজন শিক্ষক নয়, কানে ধরে উঠবস করেছে পুরো বাংলাদেশ”।আজকে দৈনিক প্রথম আলো মন্তব্য কলাম ছেপেছে- “শিক্ষক কান ধরেছেন, আর আমাদেরটা কাটা গেছে” তারা যাই বলুক, মূল ঘটনা কিন্তু সেটা নয়। একজন শিক্ষক অবশ্যই সম্মান পাবার যোগ্য, কিন্তু ঠিক ততক্ষণ তিনি সম্মান পাবেন, যতক্ষণ তিনি অপরকে সম্মান দিবেন। তিনি নিজেই যখন সম্মান দিতে ভুলে যাবেন, তখন কিন্তু তিনি সম্মান পাওয়ার যোগ্য নন। স্কুল লাইফের কথা আমার মনে আছে, আমি সকল শিক্ষককে সম্মান দিতাম। আমাদের মধ্যে একটা কথা প্রচলিত ছিলো- “যে ছাত্র তার শিক্ষককে সম্মান দিতে জানে না, সে কখনই মানুষ হতে পারে না, উন্নতি করতে পারে না।” কিন্তু এই কথাটার মধ্যেও একটা ‘কিন্তু’ ছিলো। যে সকল শিক্ষক প্রকৃত অর্থেই সৎ ছিলেন, তারা কিন্তু সব ক্ষেত্রেই সম্মান পেতেন। আবার কিছু শিক্ষক ছিলো যারা ছাত্রদের সাথে এমন কিছু আচরণ করতো যে, ইচ্ছা-অনিচ্ছায় ঐ সকল ছাত্র দ্বারাই সে নাজেহাল হতো। যেমন কিছূ শিক্ষক ছিলো যারা তার কাছে প্রাইভেট না পড়লে নম্বর কম দিতো, পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ারও নজির আছে। এতে ছাত্ররা ঐ শিক্ষকের উপর ক্ষেপে যেতো, এবং সুযোগ মত নাজেহাল করতো। কিছু শিক্ষক ছিলো অযথা মারতো। পড়া না পারলে সামান্য বেত দিয়ে মারা একটা কথা। কিন্তু স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক ছিলো বিকৃতভাবে মারতো। এমনভাবে মারতো, সোজা ভাষায় বলতে ‘নৃশংস’। ঐ ছাত্র যদি তার সন্তান হতো তবে কখনই এমনভাবে মারতে পারতো না। পরে অবশ্য জানতে পারতাম ঐ সকল শিক্ষকের ফ্যামিলিতে অশান্তি, তারা ছাত্রদের মেরে ফ্যামিলি লাইফের রাগ প্রশমন করতো। স্কুল লাইফে খুব ভালো ছাত্র ছিলাম বলে পুরো স্কুল চিনতো, স্যাররা খুব আদর করতো। ক্লাস নাইনের কথা, একটা সাবজেক্ট আমার ছিলো না, আমি ক্লাস থেকে বের হয়ে গেলাম, এমন সময় বারান্দায় ঐ সাবজেক্ট শিক্ষক আমাকে ধরলো, বললো- কিরে ক্লাসের বাইরে কেনো ?” আমি বলতে চাইছিলাম- “স্যার, এটা আমার সাবজেক্ট নয়”, কিন্তু সেটা বলার সুযোগ ঐ শিক্ষক আমাকে দিলো না। আমার মুখের মধ্যে সজোরে আঘাত করা শুরু করলো এবং কয়েক মিনিট ধরে চললো তার তাণ্ডব। কয়েক মিনিটের মধ্যে আমার পুরো মুখ ফুলে ঢোল হয়ে গেলো। আমি প্রায় জ্ঞান হারানোর মত অবস্থা। এর মধ্যে আমার আব্বাকে খবর দেয়া হয়েছে। আমার সহপাঠি ও আব্বা আমাকে নিয়ে হেড স্যারের রুমে গেলো- স্যার বললো- “বিষয়টি বিচার হবে”। কয়েকদিন পর পুরো কমিটির সামনে ঐ স্যার ক্ষমা চাইলো। বিষয়টি নিয়ে আমার আব্বা খুব রাগারাগি করলো। এটা স্বাভাবিক, কারণ একজন পিতা কখনই চাইবে না, তার আদরের সন্তান এভাবে আহত হোক। সে তার সন্তানকে স্কুলে দিয়েছে পড়ালেখা শেখানোর জন্য, নৃশংসতার শিকার হওয়ার জন্য নয়। স্যাররা শুধু নিজেরা সম্মান চাইবে, এটা কেমন কথা ? তাদের মনে রাখতে হবে- প্রত্যেকটি ছাত্র-ছাত্রী তার কাছে আমানত, কোন পিতা-মাতার আদরের সন্তান। পিতা-মাতা স্কুলে দিয়েছে পড়ালেখা শেখানোর জন্য, মারধর করার জন্য নয়। সম্প্রতি নারায়নগঞ্জে যে ঘটনাটি ঘটেছে তার সূত্রপাতও কিন্তু ছিলো এক ছাত্রকে মারধর করা নিয়ে। ঐ হিন্দু শিক্ষক রিফাত নামক এক ছাত্রকে এমনভাবে মারধর করলো যে ঐ ছেলে জ্ঞান পর্যন্ত হারিয়ে ফেলে (http://goo.gl/seNQYn)। বিষয়টি কতটুকু ভয়ঙ্কর, চিন্তা করেছেন একবার ! মারের তীব্রতায় রিফাত শকড হয়ে জ্ঞান হারিয়েছে, ব্রেনেও আঘাত লাগতে পারে। এভাবে মারের কারণে রিফাতের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারতো ! তখন ? আজকে যারা, ঐ হিন্দু শিক্ষকের পক্ষ অবলম্বন করে কথা বলছেন, তাদের সন্তানকে যদি এভাবে কোন স্যার মেরে অজ্ঞান করে রাখতো, তখন কি ঐ স্যারের পক্ষ নিতেন? নাকি নিজের স্বার্থ নিয়ে কেটে পড়তেন ? আসলে নারায়নগঞ্জে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটা অবশ্যই কাকতালীয়, ঐ শিক্ষক এতদিন ছাত্রদের উপর যে শারীরিক ও মানসিকভাবে যে নৃশংসতা চালিয়ে আসছিলো তার উত্তম প্রতিদানই পেয়েছে সে, এখানে আর কিছুই বলার নেই। সে যদি নিজে ভালো হতে তবে কখনই এভাবে অপমান-অপদস্ত হতে পারতো না। যেহেতু সে অপরকে সম্মান দেয়নি, তাই সে নিজেও সম্মান পেলো না- এটাই মূল কথা।

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728