পার্বত্য চট্রগ্রাম থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পরিণতি
গতকালকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এক অনুষ্ঠানে বলেছেন-
“৪টি ব্রিগেড ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের সব সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হবে”।
তিনি ঐ অনুষ্ঠানে উপজাতিদের জন্য ঢাকার প্রাণ কেন্দ্র বেইলি রোডের মত অভিজাত এলাকায় ২ একর বা ৬ বিঘা এলাকা জুড়ে সেন্টার উদ্ভোধন করে দিয়েছেন। অনুষ্ঠানের ভিডিও আমি দেখলাম, আপনারাও দেখুন (ভিডিও লিঙ্ক- https://youtu.be/-A2k52xiQrE)। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সাথে বসা সন্তু লারমা থেকে শুরু করে দর্শক শ্রেণীতে বসা সকল উপজাতিদের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখুন, সবাই কেমন মুখ গোমড়া করে বসে আছে, যেন তাদের উপর খুন অন্যায় করা হচ্ছে। যদিও প্রধানমন্ত্রী তাদের এত কিছু করে দিলেন, তারপরও তারা খুশি না। অকৃতজ্ঞ আর কাকে বলে !!
আসলে উপজাতি গোষ্ঠীগুলো এরকম অকৃতজ্ঞই হয়। এরা হয় মাথামোটা টাইপের। আপনি তাদের দুনিয়ার সব এনে দেবেন, কিন্তু তারা ভাববে- তাদের কিছুই দেওয়া হয়নি, তাদের উপর অন্যায় করা হয়েছে। আমি বলবো- মুসলমানরা কখনই এ সকল গোষ্ঠীদের সাথে উপযুক্ত ব্যবহার করতে পারেনি। এ কারণে তাদের আজ ঐ গোষ্ঠীগুলোর থেকে গালি শুনতে হয়।
অথচ আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার দিকে তাকান। তারা যখন বিভিন্ন এলাকায় গেছে তখন ঐ এলাকার আদিবাসীদের একেবারে সাফ করে ফেলেছে, নিধন করেছে গণহারে, অস্তিত্ব পর্যন্ত রাখেনি। এজন্য আমেরিকা-কানাডা-অস্ট্রেলিয়াকে এখন মানুষ ভালো বলে। আর মুসলমানরা তাদের আদর-যত্ন করেও এখনও ভালো হতে পারেনি।
বাংলাদেশ উপজাতিদের (আদিবাসী নয় উপজাতি, এরা বাংলাদেশের নাগরিক নয়, বাইরে থেকে আগত) সাথে কত ভালো ব্যবহারই না করেছে। তাদের কোটা দেওয়া হয়েছে, সামান্য একটু পড়ালেখা করলেই এখন উপজাতিরা জজ-ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারে। উপজাতিরা নির্বিঘ্নে পাহাড়ে চাদাবাজি-সন্ত্রাসীপনা করতে পারে। সেনাবাহিনী দিয়ে তাদের আদর-যত্ন করা হয়, চিকিৎসা-ত্রাণ দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরও বাংলাদেশীরা তাদের কাছে খারাপ, সেটেলার, দস্যু, দখলদার ইত্যাদি উপাধি পেয়েই গেছে, সুুযোগ পেলেই তারা বাঙালীদের মেরে পাহাড়ের মধ্যে গুম করে ফেলে। এজন্যই অকৃতজ্ঞ ও মাথামোটার সাথে কখনই ভালো ব্যবহার করতে নেই। কারণ সে ভালো ব্যবহারের মূল্য দিতে জানে না।
গতকালকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যে ঘোষণা দিয়েছেন- “৪টি ব্রিগেড ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের সব সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার হবে”, এটা দিয়ে আসলে তিনি কি বুঝাতে চেয়েছেন তা স্পষ্ট নয়, কিন্তু এর মানে যদি পার্বত্য এলাকায় সেনা প্রত্যাহার বুঝানো হয়ে থাকে, তবে বিষয়টি মোটেও ভালো কোন কথা নয়। কারণ পাবর্ত্য এলাকায় সেনাবাহিনীর প্রয়োজন আছে এবং আরো অধিক পরিমাণের ক্যাম্পের প্রয়োজন আছে। এখন যতটুকু সেনা উপস্থিতি রয়েছে তাতে মোটামুটি একটা ভারসাম্য রয়েছে। সেনাবাহিনীর কারণে উপজাতি সন্ত্রাসীরা বাঙালীদের উপর নিপীড়ন চালাতে পারছে না। কিন্তু সেনাবাহিনী যদি হ্রাস/প্রত্যাহার করা হয় তবে পার্বত্য এলাকায় ভারসাম্য নষ্ট হবে,উপজাতিদের রাষ্ট্রদ্রোহী সন্ত্রাসী কার্যকলাপ আরো বৃদ্ধি পাবে, ফলে বাঙালী কমিউনিটিগুলো হুমকির মুখে পড়বে। এক্ই সাথে পশ্চিমা এনজিওগুলোর আনাগোনা বৃদ্ধি পেতে পারে।
এটা সবারই জানা, পশ্চিমা সম্রাজ্যবাদীদের বহুদিন ধরে চোখ রয়েছে বাংলাদেশের তিন পাবর্ত্য জেলার উপর। তারা বাংলাদেশের এই তিন জেলাকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে পূর্ব তীমুর কিংবা দক্ষিণ সুদান বানানোর চক্রান্ত করে চলেছে। বিশেষ করে- সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে আইসিস আছে এমন প্রমাণের জন্য উঠে পড়ে গেলেছে পশ্চিমা সম্রাজ্যবাদীরা। এরমধ্যেই কিন্তু পশ্চিমারা চাইবে উপজাতি সন্ত্রাসীদের জাগিয়ে তুলে বাংলাদেশকে দুই দিক থেকে অস্থিতিশীল করতে। এ কঠিন অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের কখনই উচিত হবে না- উপজাতি সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে নমনীয় হওয়া, সেনা প্রত্যাহার করে তাদের রাষ্ট্রদ্রোহী কার্যক্রমের সুযোগ বৃদ্ধি করে দেওয়া। বরং উচিত হবে- সেনাসংখ্যা আরো বৃদ্ধি করে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা আরো সুসংহত করা।
একই সাথে ঢাকার প্রাণকেন্দ্র বেইলি রোডের মত যায়গায় তাদের তাদের এত বড় যায়গা দেওয়া ঠিক হয়নি। এতদিন তারা বনে-জঙ্গলে বসে রাষ্ট্রদ্রোহী চক্রান্ত করতো, আর এখন ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে বসে রাষ্ট্রদ্রাহীতার চক্রান্তে আরো বেশি মত্ত হতে পারবে। আর সেখানে উস্কানিদাতা প্রথম আলো-ডেইলি স্ট্যার গংদের আনাগোনা আরো বৃদ্ধি পাওয়াই স্বাভাবিক, যা অব্যশই রাষ্ট্রের জন্য বিরাট হুমকিও বটে।
ভুলে গেলে চলবে না- বঙ্গবন্ধু নিজেই এদের বলেছিলেন- “তোমরা পাহাড়িরাও বাঙালী হয়ে যাও”। কিন্তু তাদের নেতা মানবেন্দ্র লারমা উল্টো বলেছিলো, “পাহাড়িরা কখন বাঙালী হতে পারে না”। অর্থাৎ আপনি যতই এদের মায়া করে ‘ভাই’ ডাকেন, তারা কিন্তু আপনাকে ভাই মনে করে না। তাদের কাছে ঐ সম্রাজ্যবাদী-দেশবিরোধীরাই আপন। তাই খুব সাবধান।
No comments