বাংলাদেশকে নিয়ে মোসাদের চক্রান্ত
দৈনিক ইত্তেফাকে খবর এসেছে-
‘শিগগিরই সবক্ষেত্রে বাংলাদেশের দরজা ইসরাইলিদের জন্য খুলে দেয়া হবে। বাংলাদেশের আওয়ামী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। নতুন সরকার ইসরাইলের সঙ্গে পূর্ণ কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলবে।’ ইসরাইল ভিত্তিক অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘জেরুজালেম অনলাইন ডট কম’ অতি সম্প্রতি এমন সংবাদ ছেপেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ইসরাইলের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি’র প্রধান মেন্দি এন সাফাদি সম্প্রতি ভারত সফর করেছেন। সেখানে বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করছেন তিনি। ওইসব বৈঠকেই বাংলাদেশ সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেছেন মেন্দি এন সাফাদি। ওই বৈঠকগুলোতে বাংলাদেশ থেকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকশেষে একটি গ্রুপ ছবি তোলেন সবাই। সেখানে ছবিতে বাম দিকে আসলাম চৌধুরীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। আর সামনেই বসে আছেন মেন্দি এন সাফাদি।
খবরে বলা হয়-
একটি প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা এ বিষয়ে নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছেন। তিনি ইত্তেফাককে বলেন, খুলনার শিপন কুমার প্রথমে ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট হয়। তিনিই খুুঁজে বের করেন একজন সাংবাদিককে, যিনি বর্তমান আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করতে আগ্রহী হন। ওই সাংবাদিকের বাড়িও চট্টগ্রাম। তিনি শিপন কুমারকে নিয়ে যান চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর কাছে। তিনিও সরকার উৎখাতে কাজ করতে রাজি হন। দেশে কয়েকদফা বৈঠকের পর সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করতে তারা ভারতে যান। কলকাতা ও দিল্লিতে দুই দফা অভ্যন্তরীণ বৈঠক ছাড়াও বিভিন্ন সেমিনারে তারা অংশ নেন। সেখানে বাংলাদেশের আওয়ামী সরকার উৎখাতে চূড়ান্ত পরিকল্পনা হয়।
(http://www.ittefaq.com.bd/national/2016/05/09/67251.html)
খবরে পড়ে বোঝা যাচ্ছে, বর্তমান আওয়ামী সরকারকে উৎখাতে নামে বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে সাহায্য করবে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। স্বাভাবিকদৃষ্টিতে মনে হতে পারে, “মোসাদ কত ভালো”। কিন্তু ইতিহাস কিন্তু তা বলে না। ইরাক-আফগানিস্তান-সিরিয়ার ক্ষেত্রে কিন্তু এ ধরনের ঘটনাই ঘটেছিলো। দুটো রাজনৈতিক দলের সংঘাতকে কাজে লাগিয়ে মাঝখান দিয়ে প্রবেশ করেছিলো সম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো। লোভ দেখিয়েছিলো তারা বিরোধী দলগুলোকে ক্ষমতা দিবে। ঠিক যেভাবে মীর জাফরকে সিরাজউদ্দৌলার বিপরীতে ক্ষমতার লোভ দেখিয়েছিলো ব্রিটিশরা। হয়ত পরে কিছু নামেমাত্র দিয়েছিলো, কিন্তু মাঝখান দিয়ে সাহায্যের নাম ধ্বংস করেছিলো পুরো মুসলিম দেশটিকে। এজন্য দেখবেন, আমেরিকা যত মুসলিম দেশে হামলা করে, সব কিন্তু সাহায্যের নাম দিয়েই করে, নির্যাতিতের উপকারের নাম দিয়েই করে।
আমার দৃষ্টিতে, মোসাদের সাথে কোন বাংলাদেশী রাজনৈতিকদলের কোয়ালিশন করা উচিত নয়। কারণ এরা আপনাদের ক্ষমতা লোভ দেখাবে, কিন্তু তাদের মূল উদ্দেশ্য কিন্তু বাংলাদেশে আগ্রাসন চালানো। তখন কিন্তু আওয়ামী-বিএনপি কিছুই থাকবে না, সবাইকে তারা গণহারে হত্যা করবে।
মনে রাখতে হবে, ব্যক্তি ক্ষমতার থেকে অবশ্যই দেশের স্বার্বভৌম স্বার্থটা বড় করে দেখা উচিত। সাধারণ মানুষ কিন্তু আওয়ামী-বিএনপি বুঝে না, তারা বুঝে কিভাবে দু’মুঠো খেয়ে পরে স্বাধীনভাবে বাচতে পারবে। কিন্তু এ সব রাজনৈতিক দলগুলো যদি ক্ষমতার লোভে কামড়াকামড়ি করে বিদেশী শত্রুকে দেশে ডেকে নিয়ে আসে তা সত্যিই ন্যাক্কারজনক। বাংলাদেশী হয়ে মোসাদের সাথে এ ধরনের দেশদ্রোহী মিটিং এর ঘটনা যদি সত্যিই ঘটে থাকে, তবে অবশ্যই বাংলাদেশীদের বিচার হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
No comments