Header Ads

ad728
  • Breaking News

    ছাত্র রিফাতের পেটে শিক্ষক শ্যামল কান্তির আঘাত

    কি ধরনের শারীরিক ঝুঁকির মধ্যে ছিলো রিফাত ? এ ধরনের ঘটনায় শ্যামল কান্তির আইনত বিচার কি ?? নারায়নগঞ্জে ছাত্র রিফাতকে শিক্ষক শ্যামল কান্তি নির্মমভাবে প্রহার করেছিলো। সহপাঠীদের মুখে ঘটনার বর্ণনায় শোনা যায়- ঘটনার দিন ছাত্র রিফাতের পেটে ও বুকে শিক্ষক শ্যামল কান্তি সজোরে ৪-৫টি ঘুষি মারে। এতে তার দম বন্ধ হয়ে যায় এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলে । অসুস্থ হওয়ার পর রিফাতকে হাসপাতালে নেওয়া তো দূরের কথা জোর করে শেষ প্রিয়ড পর্যন্ত ক্লাস করতে বাধ্য করে শিক্ষক শ্যামল কান্তি। একইসাথে নিজে ডাক্তারি করে খালি পেটে প্যারাসিটামল ও গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খাওয়ায় তাকে। এতে রিফাতের পেটে ব্যাথা আরো বেড়ে যায়।(https://goo.gl/50Iod5) এ ব্যাপারে কথা হচ্ছিলো বাংলাদেশের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের একজন ডাক্তারের সাথে। তিনি ইনবক্সে জানালেন- “আপনার দেওয়া ভিডিওটি আমি দেখেছি। আমি রিফাতের সহপাঠীদের বক্তব্য শুনেছি। একজন ডাক্তার হিসেবে রিফাতকে প্রহার করায় আমি তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে চিন্তিত। ভিডিওটির বর্ননায় আমি যা জানতে পেরেছি তা হল উক্ত ছাত্রের বুকে এবং পেটে মারা হয়েছে। Abdomen (পেটে ) কিংবা chest (বুক) এ আঘাত করা খুবই ভয়ংকর বিষয়। এই পেটে কিংবা বুকে আঘাত করা থেকে একজন মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে যা আমি কর্মরত থাকা অবস্থায় নিজ চোখে দেখেছি।এই পেটে আঘাত করা যেমন blunt ( ভোতা) হতে পারে যেমন হাত-পা কিংবা শক্ত জিনিষ দিয়ে পেটে আঘাত করা, এক্সিডেন্ট ইত্যাদি তেমনি penetrating হতে পারে যেমন ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা, গুলি করা ইত্যাদি। একজন মানুষের যখন পেটে হাত কিংবা পা দিয়ে মারা হয় অথবা দুর্ঘটনায় আঘাত পায় তখন তার পেটে যে বিভিন্ন অংগ যেমন কিডনী, লিভার, প্লীহা, অগ্ন্যাশয় , পাকস্থলী , বৃহদান্ত্র , ক্ষুদ্রান্ত ইত্যাদি মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।এক্ষেত্রে ভয়ংকর যে বিষয়টি হতে পারে তা হল internal bleeding বা অভ্যন্তরীন রক্তপাত যা একটি medical emergency(জরুরী)। এক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া না হলে মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যখন কাউকে পেটে আঘাত করা হয় তখন অবশ্যই একজন ডাক্তারের শরনাপন্ন হতে হয়। কারন যে আঘাত করেছে সে বুঝতে পারছেনা সে কি ক্ষতি করেছে । আবার যে আঘাত পেয়েছে তিনিও অনেক সময় বুঝতে পারেননা তার কি ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।আঘাতকারী ব্যক্তি দেখতেছে আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তি তো ভালোই আছে। আবার যে আঘাত পেয়েছে সেও ততটা গুরুত্ব দেয়না। কিন্তু দেখা যায় হটাৎ করে আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে পড়ে মারা গেছে। কারন পেটের ভিতরে রক্তপাত হয়ে shock এ চলে cardiac arrest হয়ে মারা গিয়েছে। পেটে কোন ভাবে আঘাত পেলে কেউ যদি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে বা অসুস্থতা বোধ করে, তবে যত দ্রুত সম্ভব তাকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রে কোনভাবেই অবহেলা করা যাবে না। এ ধরনের ঘটনার অবহেলায় রিফাতের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারতো। একজন ডাক্তার হিসেবে বলবো- শিক্ষক শ্যামল কান্তি একদিকে আঘাত করে যেমন ঠিক করেননি, ঠিক তেমনি রিফাতকে হাসপাতালে না পাঠিয়েও ঠিক করেননি।” এ ধরনের ঘটনায় আইন কি বলে ? ২০১১ সালে ৯ই আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রনালয় এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ১১ ধরনের শারীরিক শাস্তি ও মানসিক শাস্তি নিষিদ্ধ করে। এই ১১ ধরনের মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে- “শিক্ষার্থীদের হাত-পা বা কোনো কিছু দিয়ে আঘাত বা বেত্রাঘাত”। এছাড়া মানসিক শাস্তির ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে- “শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মা-বাবা, বংশ পরিচয়, গোত্র-বর্ণ ও ধর্ম সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য, অশোভন অঙ্গভঙ্গি করা বা শিক্ষার্থীদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে এমন বিষয়গুলো মানসিক শাস্তি হিসেবে চিহ্নিত হবে।” কোন শিক্ষক অভিযুক্ত হলে কি ব্যবস্থা ? নীতিমালা অনুযায়ী, কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ ধরণের শাস্তি দেওয়ার অভিযোগ উপস্থাপন এবং ওই শিক্ষক অভিযুক্ত হলে সরকারি কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ১৯৮৫ এর আওতায় ব্যবস্থা নেওয়া যাবেন। প্রয়োজনে ফৌজদারি আইনেও এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে তাদের বিরুদ্ধে। এসব অপরাধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে, তা ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারি আচরণ বিধিমালার পরিপন্থী হবে এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ১৯৮৫-এর আওতায় অসদাচরণের অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। প্রয়োজনে ফৌজদারি আইনেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। এছাড়া ২০০৮ সালে শিক্ষামন্ত্রনালয় শারীরিক শাস্তি দেওয়া বন্ধ করতে এবং কার্যকর ব্যবস্থা নিতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিয়েছে। যাঁরা শারীরিক শাস্তি দেবেন তাঁদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ১৮৬০, ১৯৭৪ সালের শিশু আইন এবং ক্ষেত্রমতে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগ গ্রহণেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। (http://goo.gl/pCBqG9, http://goo.gl/OG3n9M, http://goo.gl/dBWROv)

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728