গুলশান হামলা নিয়ে কলকাতায় নির্মিত হতে যাচ্ছে সিনেমা ‘জেহাদ’
গুলশান হামলা নিয়ে ভারতের কলকাতায় একটি সিনেমা নির্মিত হতে যাচ্ছে, যার নাম- ‘জেহাদ’ (http://goo.gl/Iums8o)। আমি যতদূর জানি- বাংলাদেশের প্রায় সকল মুসলমান গুলশানে সন্ত্রাসবাদী হামলাকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং এটা প্রায় সবাই জানে- গুলশান হামলা তো ইসলামের জন্য নয় বরং ইসলাম ও মুসলমানদের ক্ষতি সাধনের জন্য করা হয়েছে।
অপরদিকে- ‘জেহাদ’ শব্দটি মুসলমানদের একটি ধর্মীয় অনুসঙ্গ। ধর্মের জন্য মুসলমানরা যে যুদ্ধ করে তাকে জেহাদ বলে। যেমন হিন্দুদের জন্য কুরুক্ষেত্র কিংবা খ্রিস্টানদের ক্রুসেড।
কিন্তু গুলশান হামলার ঘটনা যদি ‘জেহাদ’ শব্দ লাগিয়ে সিনেমা করা হয়, তবে এটা তো মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে উদ্দেশ্যমূলক আঘাত করা হবে। সিনেমার জন্য এ ধরনের নাম পছন্দ করা কিংবা এ ধরনের ঘটনা চয়েস করা অবশ্যই উদ্দেশ্যমূলক সাম্প্রদাায়িক সহিংসতা ছড়ানোর নামান্তর।
বলাবাহুল্য ভারত তার মুভিগুলোর জন্য সবসময় সন্ত্রাসী ঘটনা পছন্দ করে। যেমন ভারতের তামিলরা প্রতিনিয়ত মালয়েশিয়াতে ভয়াবহ ধরনের সন্ত্রাসীপনা ঘটায় । মালয়েশিয়ার সেই তামিল সন্ত্রাসীদের ভালোভাবে উপস্থাপন করে ভারত সম্প্রতি ‘কাবালি’ নামক একটি সিনেমা বানিয়েছে। মজার বিষয় হচ্ছে- ঐ সিনেমাটি ভারতীয়দের মধ্যে এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছে তা সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে এবং অনেক এলাকায় সিনেমাটি দেখতে ছুটি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে।
আপনারা মারাঠা বর্গীদের কথা শুনেছেন নিশ্চয়ই। ইতিহাসে মারাঠারা সবচেয়ে বড় ডাকাত ছিলো। ছোট বেলায় শিশুদের ঘুম পাড়ানোর জন্য মায়েরা মারাঠা বর্গীদের কবিতা শুনাতো বাচ্চাদের- “খোকা ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো বর্গী এলো দেশে...”। অথচ এই মারাঠা নেতা শিবাজী হচ্ছে ভারতীয়দের বিরাট হিরো। এই ডাকাত শিবাজীর মূর্তি দিয়ে ভারতের মহারাষ্ট্র ভরে ফেলা হয়েছে। মারাঠা ডাকাতের নীতিমালায় গঠিত হয়েছে ‘শিবসেনা’ নামক রাজনৈতিক সংগঠন। এই ডাকাত সর্দারের প্রশংসা করে বানানো হয়েছে অসংখ্য নাটক-সিনেমা।
অর্থাৎ ভারতীয়রা সন্ত্রাসবাদ খুব পছন্দ করে এবং বড় বড় সন্ত্রাসীদের তাদের মুভিগুলোতে হিরো বানিয়ে দেখানো হয়। এ ধরনের চর্চার অবশ্যই একটি নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট আছে। এর মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদের আরো প্রচার প্রসার ঘটে, মানুষকে সন্ত্রাসীপনায় উৎসাহ দেয়া হয়। ভারতে থাকলেও বাংলাদেশে এ ধরনের চর্চার স্থান নেই। যেহেতু কলকাতায় ‘জিহাদ’ নামক সিনেমাটি বাংলা ভাষায় হবে তাই সেটা বাংলাদেশের উপর অবশ্যই ভয়াবহ প্রভাব বিস্তার করবে।
তাই ধর্মীয় শব্দ ‘জিহাদ’ নাম নিয়ে তো অবশ্যই নয়, এই ঘটনা নিয়েই সিনেমা বানানোর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতিবাদ জানানো উচিত।
No comments