কোরবানীর পর পুষ্টিকর মাংশ পাবেন যেভাবে ....
পুষ্টিকর মাংশ পাওয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পশু জবাইয়ের পর পশুর শরীর থেকে সর্বোচ্চ পরিমাণ রক্ত বের হতে দেওয়া। মনে রাখতে হবে- এই রক্তের মধ্যেই ব্যকটেরিয়াসহ যাবতীয় রোগ জীবাণু অবস্থান করে।
সাধারণত পশুর গলায় ছুরি চালালে তার গলায় অবস্থিত দুটি রক্ত নালী কেটে যায় (খাদ্যনালী ও শ্বাসনালীও কাটে)। এতে পশুর শরীরে রক্তক্ষরণ হতে থাকে এবং পশুটি ছটপট করে, পা নাচাড়া করে। অনেক সময় দেখা যায়- পশুটি নড়াচড়া করার সময় কসাই বা দায়িত্বরতরা পশুটির দ্রুত মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলার মধ্যে ছুরি দিয়ে খোচা দেয়, গলার মূল মেরুদণ্ড কেটে দেয় অথবা পায়ের রগ কেটে দেয়। এটা ঠিক নয়। আমি যতদূর জানি ইসলাম ধর্মেও এটা নিষেধ করা হয়েছে।
পশুটি নিস্তেজ হতে দেরি করলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, ভাববেন না- `বোধ হয় জবাই হয় নাই।‘ আসলে খাদ্যনালী, শ্বাসনালী এবং গলার যে কোন একটি রক্তনালী কাটলে পশুর মৃত্যু নিশ্চিত হবে। যদি পশুটি অধিক সময় নড়াচড়া করে তবে সেটা বরঞ্চ আপনাদের জন্য আরো ভালো। কারণ এ সময় তার হার্ট সচল আছে, হার্ট রক্ত পাম্প করছে। সে যত শরীরকে নড়াচড়া করবে তার শরীর থেকে তত পরিমাণ রক্ত বের হয়ে যাবে, মাংশ ততবেশি পরিশুদ্ধ হবে। কিন্তু আপনি যদি গলায় ছুরি দিয়ে অতিরিক্ত খোচা দেন, গলায় মেরুদণ্ডের হাড় কেটে দেন, কিংবা পায়ের রগ কেটে দেন, তবে ততক্ষণাত মৃত্যু ঘটে হার্ট বন্ধ হয়ে যাবে,এতে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যাবে এবং দূষিত রক্ত শরীরে আটকা পড়ে। এতে মাংশও দূষিত হয়ে পড়তে পারে। উল্লেখ্য হিন্দু, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা এক কোপে কিংবা গুলি করে পশু হত্যা করে, এতে সাডেন ডেথ হয়, ফলে শরীরের দূষিত রক্ত বের হতে পারে না, ফলে মাংশ দূষিত হয়ে যায়। কিন্তু ইসলাম ধর্মে এভাবে সাডেন ডেথকে অনুমোদিত দেয়া হয়নি।
গলায় ছুরি চালিয়ে রক্তনালী, শ্বাসনালী, খাদ্যনালী কাটলে স্বাভাবিকভাবে একটি পশুর মৃত্যু নিশ্চিত হতে ১৫-২০ মিনিট সময় লাগতে পারে, তাই অধৈর্য্য হওয়ার কিছু নেই, ভয় পাওয়ারও কিছু নেই, এটাই সবচেয়ে বৈজ্ঞানিক স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি। এভাবে স্বাভাবিক ও নিয়ম মেনে চললেই কেবল পশুর অধিক পুষ্টিকর মাংশ পেতে পারেন।
No comments