ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি বড় অংশই হিন্দু ধর্মাবলম্বী নয়।
আপনি কি জানেন ? ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি বড় অংশই হিন্দু ধর্মাবলম্বী নয় ?
সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে অনেকেই অনেক আলোচনা করছেন। কেউ বলছে ভারতীয় সেনা শ্রেষ্ঠ, কেউবা বলছে পাকিস্তানী সেনা শ্রেষ্ঠ। এই তর্ক একটু উস্কে দিতে আসুন আমরা ভারতীয় সেনাবাহিনী সম্পর্কে কিছু আলোচনা করি।
প্রথমেই বলে রাখি, পৃথিবীতে দুটো জাতি আছে যারা খুবই ভীতু জাতি হিসেবে পরিচিত । এরা কখনই যুদ্ধে অভ্যস্ত নয়। একটি জাতির নাম হচ্ছে ইহুদী জাতি, অপরজাতির নাম হিন্দু জাতি।
ইহুদী জাতিতে যে ভীতু জাতি এটা ইতিহাস দ্বারা বার বার প্রমাণিত হয়। যেমন ধরুন- আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে আরবে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যতগুলো যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিলো তার সবগুলো পেছনে ছিলো ইহুদী জাতি। যারা কুরাইশদেরকে কু-পরামর্শ দিয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বলতো। কিন্তু ইহুদীরা সেসময় একবারও মুসলমানদের সাথে সম্মুখযুদ্ধে আসেনি।
বর্তমান কালে ইহুদীরা চলে খ্রিস্টানদের উপর ভর করে। ইহুদীদের সামনে আসার যোগ্যতা নেই, তারা আড়লে থেকে কাজ করে। ইসরাইলের সেনাবাহিনীর দিকে তাকালে বিষয়টি আরো ক্লিয়ার হবে। যেমন ইসরাইলের সেনাবাহিনী (আইডিএফ) একটি বড় অংশ দখল করে আছে ড্রুজ সম্প্রদায়। ড্রুজদেরকে অনেকে ইহুদীভাবে, কিন্তু এরা পুরোপুরি ইহুদী নয়, ইহুদীবাদী বা জায়ানিস্ট। এদের আগমন ইসমাইলী শিয়াদের থেকে। আবার ইসরাইলি সৈন্যবাহিনীর মধ্যে বিরাট অংশই হচ্ছে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। অর্থাৎ ড্রুজ ও খ্রিস্টানদের দ্বারাই ফিল্ড পর্যায়ে যুদ্ধের কাজগুলো চালাই ইহুদীরা।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবস্থাও কিন্তু একই রকম। ভারতীয় সেনাবাহিনীও খুব ভীতু প্রকৃতির। সম্প্রতি খবর এসেছে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কথা শুনে ভারতের ৪০ হাজার সেনা ছুটির আবেদন করেছে। তবে ভারতীয় সেনারা যতটুকুই পারফর্মেন্স দেখায় সেটা কিন্তু হিন্দু ধর্মাবলম্বী সেনাদের জন্য, বরং অন্যধর্মীয় সেনাদের জন্য।
যেমন ভারতের সেনাবাহিনীর একটা বড় ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ দখল করে আছে শিখরা। শিখরা খুব হিংস্র প্রকৃতির হয়। তাই শিখদেরকে ভারতীয় হিন্দুরা অগ্রভাগে রাখে। ভারতীয় বাহিনীতে শিখদের জন্য আলাদা ২টি রেজিমেন্ট আছে (শিখ রেজিমেন্ট, শিখ লাইট ইনফেন্ট্রি) ।শিখরা ভারতের সেনাপ্রধানসহ গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো দখলে রাখে। যেমন- ভারতীয় বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান অর্জন সিং, সেনা বাহিনী প্রধান বিক্রম সিং, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় অতি পরিচিত লেফটেনেন্ট জেনারেল জাগজিট সিং অরোরা, সাবেক সেনাপ্রধান জগিন্দা জাসওয়ান্ত সিংসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদ শিখ ধর্ম থেকে এসেছে।
এছাড়া জাট সম্প্রদায়ও ভারতীয় বাহিনীর অনেক বড় অংশ দখল করে রেখেছে। ভারতীয় বাহিনীতে জাটদের আলাদা রেজিমেন্ট আছে। জাট সেনাদের অধিকাংশ হচ্ছে শিখ। এছাড়া পাঞ্জাব রেজিমেন্টে প্রায় সবাই শিখ ধর্মাবলম্বী। পাশাপাশি ভারতীয় বাহিনীতে একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ গোরখা সম্প্রদায়। এরা নেপাল থেকে ভাড়া করা সৈনিক। ভারতীয় বাহিনীতে এদের রেজিমেন্ট সংখ্যা ৮টি। গোরখাদের বিরাট অংশই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। এছাড়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটা বড় অংশে আছে পার্সী বা জরাথ্রুসত্রা বা অগ্নি উপাসক। ইন্দিরা গান্ধীর সময় সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সাম মানেকশ কিন্তু এই ধর্মাবলম্বী, লেফ. জেনারেল এফএন বিলিমরিয়া (উইলিংটন ক্যান্টমেন্ট প্রধান), অ্যাডমিরাল জাল ছুরছেদজি (সাবেক নেভী প্রধান), এয়ার মার্শাল আস্পাই (সাবেক বিমান প্রধান), এয়ার মার্শাল মিনো মিরওয়ান (সাবেক বিমান প্রধান), এয়ার ভাইস মার্শাল রুস্তম ফিরোজ গান্ধী, এয়ার চীফ মার্শাল মাজর। এছাড়া ভারতীয় বাহিনীতে নাগা রেজিমেন্ট রয়েছে, যাদের প্রায় সবাই খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী।
অর্থাৎ ভারতীয় সেনাবাহিনী নিয়ে হিন্দুদের এত উৎফুল্ল হওয়ার কারণ নেই, কারণ তাদের একটা বড় অংশই অন্য ধর্মাবলম্বীদের উপর নির্ভরশীল।
No comments