Header Ads

ad728
  • Breaking News

    বাতাস দেয়ার কমপ্রেসার যন্ত্র থেকে সবার সাবধান


    গত কয়েক মাস যাবত বাংলাদেশের মিডিয়ায় একটি খবর খুব এসেছে। খুলনায় শিশু রাকীবকে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যার খবর। এর আগে জুলাই মাসে নারায়নগঞ্জে সাগর বর্মণ নামক আরেক শিশুকে হত্যা করা হয় পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে । গতমাসে শেষের দিকে আতিয়ার রহমান মোল্লা (২৮) নামক এক ব্যক্তি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মুমুর্ষূ অবস্থায় ভর্তি হয় একই ঘটনায় মানে পেটে বাতাস ঢুকে। আতিয়ারের ভাগ্যে কি ঘটেছিলো তার শেষটা জানা নেই। খবরে প্রকাশ- আতিয়ার একটি ফার্নিচারের দোকানে কমপ্রেসার মেশিনের বাতাস দিয়ে ফার্নিচার পরিষ্কার করছিলো। এই সময় তারই সহকর্মী দুষ্টুমি করে কপ্রেসারের বাতাস বের হওয়ার পাইপটা তার পশ্চাৎদেশে চেপে ধরে, মুহুর্তের মধ্যে তার পেট ফুলে বড় হয়ে যায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তার অবস্থা খুবই সঙ্কটপূর্ণ ছিলো। (http://bit.ly/2ew433z)
    কমপ্রেসার মেশিনের পাইপ পশ্চাতে ধরার এ দুর্ঘটনা শুধু বাংলাদেশে নয়, অন্যান্য দেশেও ঘটে। যেমন গত জুলাই মাসে ভারতের পাঞ্চাবে এক পলিটেকনিক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে চার বন্ধু দুষ্টুমি করে তাদেরই এক সহপাঠীর পশ্চাতদেশে বায়ু নির্গত হওয়ার কমপ্রেসার মেশিন চেপে ধরে। এতে মুহুর্তের মধ্যে ছাত্রটির পেট ফুলে যায়। মুমুর্ষূ অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। (http://dailym.ai/2dLDDMW)
    গত ২০১২ সালে একই ঘটনা ঘটে চীনের শ্যাংডং প্রদেশে। সেখানে একটি কারখানায় ১৩ বছরের বালকের পশ্চাতদেশে তার সহকর্মীরা বায়ু কমপ্রেসার চেপে ধরলে একই ঘটনা ঘটে। (http://bit.ly/2dyrL2q)
    এই বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তর আলোচনার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি। কারণ বাংলাদেশে যখন এ ধরনের ঘটনা ঘটে তখন খবর আসছে- “অমুক ব্যক্তির পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যা”। ব্যাপারটা মনে হতে পারে, জোর করে তাকে অত্যাচার করে কাজটি করা হয়েছে। হতে পারে কিছু ঘটনা অত্যাচার করে, কিন্তু এ ধরনের সবগুলো ঘটনা কিন্তু অত্যাচার নয়, বরং দুর্ঘটনা। এবং এটা দুষ্টুমির ছলেই হয়ে থাকে।
    আমরা প্রাত্যাহিক জীবনে অনেক বায়ু মেশিন ব্যবহার করে থাকি। আগে রিকশা হস্ত পাম্ব দিয়ে পাম্ব করা হতো, কিন্তু এখন অনেক রিকশা গ্যারেজেই ইলেকট্রিক বায়ু পাম্ব ব্যবহার করা হয়। মটর গেরেজে চাকা পাম্ব করতে বায়ু কমপ্রেসার মেশিন ব্যবহার হয়, অনেক দোকান বা বাসাবাড়িতে ময়লা পরিষ্কার করতে বায়ু পাম্ব ব্যবহার করা হয়, এমনকি ছোট বাচ্চাদের জন্য আজকাল বাসাবাড়িতে নেভুলাইজার মেশিন ব্যবহার করে গার্জিয়ানরা। স্বাভাবিকভাবে একটা পাইপ দিয়ে নিরীহ বাতাস বের হচ্ছে এটা দেখে ভয় পাওয়ার কোন কারণ থাকতে পারে না। অনেকে এটা নিয়ে মজা-দুষ্টুমিও করতে পারে। কেউ মুখে বাতাস দেয়, কেউ গায়ে বাতাস দেয়, কেউ বা পশ্চাত দেশে বাতাসের পাইপটা চেপে ধরলো। কিন্তু এই সামান্য একটা ঘটনা যে প্রাণঘাতী হতে পারে এটা কিন্তু সাধারণ মানুষ জানে না। যেহেতু বাতাসকে প্রেসার দিয়ে নির্গত করা হয়, তাই পাইপটা শুধু পশ্চাতে লাগানোর সাথে সাথে সেখান থেকে প্রেসারাইজ বায়ু পায়ুপথ দিয়ে খুব সহজেই পেটে প্রবেশ করে এবং পেটের মধ্যে অঙ্গপ্রতঙ্গ ও নাড়িভুড়ি ছিড়ে ফেলে মৃত্যু ঘটায়।
    যেহেতু আমি বিশেষজ্ঞ নই, তাই এ দুর্ঘটনা সম্পর্কে ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ারদের বিস্তারিত আলোচনা করার আহবান করবো। আমার মনে হয় বিষয়টি নিয়ে অনেক আলোচনা করার দরকার। কারণ অনেক ক্ষেত্রে বিষয়টি প্রচার হচ্ছে হত্যা হিসেবে। কিন্তু এটা যে দুষ্টুমির ছলেও দুর্ঘটনা হতে পারে তা সবাই জানে না। ফলে মানুষ সচেতন হচ্ছে না এবং প্রতিনিয়ত বাড়ছে দুর্ঘটনা। মানুষ ইলেকট্রিক/আগুন/কেমিকেল যন্ত্র সাবধানতার সাথে ব্যবহার করছে, কিন্তু একটি নিরীহ বায়ু দেওয়ার মেশিন যে ক্ষেত্রে বিশেষে এতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, এটা সবার জানা নাই।

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728