Header Ads

ad728
  • Breaking News

    নাসিরনগরের ঘটনা নিয়ে সুপ্রীম কোর্টের উকিল ইমতিয়াজ মাহমুদের স্ট্যাটাস ও আমার বক্তব্য




    নাসিরনগরের ঘটনা নিয়ে সুপ্রীম কোর্টের উকিল ইমতিয়াজ মাহমুদের একটা লেখা পড়লাম। সেখানে ইমতিয়াজ মাহমুদ নাসিরনগরে মন্দিরে হামলার জন্য সকল শিক্ষিত মুসলমানকে দায়ী করেছে। এবং বলেছে- হিন্দুদের উপর হামলা হলে শিক্ষিত মুসলিম সমাজ চুপ থাকে বলেই হামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইমতিয়াজ মাহমুদ তার স্ট্যাটাসে মুসলমানদের ধর্ম থেকে সরে আসতে বলেছে, কারণ তার দাবি ধর্মই মানুষকে সাম্প্রদায়িকতা শেখায়, সংখ্যালঘু হিন্দুর উপর হামলা করতে শেখায়। ইমতিয়াজের ভাষায়-
    “ছেলেমেয়েদেরকে মুসলমান না বানিয়ে মানুষ বানানোটা জরুরী আপনার নিজের প্রয়োজনেই। আপনার ছেলেমেয়েদেরই স্বার্থে। আপনি যদি নিজের ছেলেকে মানুষ না বানিয়ে মুসলমান বানান, ওর হাতে একদিন আরেকজন মানুষের ক্ষতি হবে। সে হয়তো হিন্দু জ্ঞানেই একজন মানুষকে মারবে বা একটা মেয়েকে ধর্ষণ করবে। কিন্তু শেষ বিচারে আপনার ছেলে তো খুনি আর ধর্ষকই হচ্ছে। ছেলের জন্যে তো একটু মায়া করবেন, নাকি?
    চারপাশে চোখ খুলে দেখেন। এইরকম খুনি আর ধর্ষক ঘুরঘুর করছে। বাস্তবে হয়তো খুন বা ধর্ষণ করতে পারছে না সবাই- মনে মনে ঠিকই হিন্দু মারছে আর হিন্দু মেয়ে ধর্ষণ করছে। আপনি হয়তো আমার সাথে তর্ক জুড়ে দিবেন যে সাচ্চা মুসলিম হলে কেউ এইসব করবে না ইত্যাদি। এই তর্ক আমার সাথে না করে, ছেলেমেয়েদেরকে কি শিখাচ্ছেন সেটা দেখেন। আজকেই আপনার সন্তানকে বলেন- কেবল ধর্মীয় পরিচয়েই একজন মানুষ শরিফ বা ইতর হয়না বা একজন আরেকজনের চেয়ে ভালো হয়ে যায়না, ওকে বলেন যে মানুষই মানুষের মুল এবং শেষ পরিচয়।”
    ইমতিয়াজ মাহমুদ তার স্ট্যাটাসে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বলার জন্য সিপিবি-বাসদ ও তসলিমা নাসরিনের প্রশংসা করেছেন।
    প্রথমেই বলতে হয়, ইমতিয়াজ মাহমুদ সাম্প্রদায়িক হানাহানির বিরুদ্ধচারণ করতে গিয়ে ইসলাম ধর্ম থেকে সরে আসার আহবান জানিয়েছে। কিন্তু তিনি আবার সিপিবি-বাসদ তথা কমিউনিস্টদের প্রশংসা করছেন। এখন ইমতিয়াজ মাহমুদের কাছে আমার প্রশ্ন, কমিউনিস্টরা যখন ক্ষমতায় আসে তখন তারা মানুষের জন্য কতটুকু নিরাপদ ?? তারা কতটুকু হানাহানির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় ?? ইতিহাস তো বলে ভিন্ন কথা, কমিউনিস্ট শাসন আমলে, কমিউনিস্টদের দ্বারা যত মানুষ হত হয়, অন্য কোন সময় এত মানুষ আর হতাহত হয়নি।
    চীনে সাড়ে ৬ কোটি,
    সোভিয়েত রাশিয়ায় ২ কোটি
    ক্যাম্পোডিয়ায় ২০ লক্ষ,
    উত্তর কোরিয়ায় ২০ লক্ষ,
    ইথোপিয়ায় ১৭ লক্ষ,
    আফগানিস্তানে ১৫ লক্ষ
    পূর্ব ব্লকে ১০ লক্ষ
    ভিয়েতনামে ১০ লক্ষ,
    ল্যাতিন আমেরিকায় দেড় লক্ষ
    অন্যান্য ১০ হাজার।
    সর্বমোট ৯ কোটি ৪০ লক্ষ নিহত হয় কমিউনিস্টদের হাতে। (http://bit.ly/1NVCIof)
    মজার ব্যাপার হচ্ছে, কমিউনিস্টদের ক্ষমতার ব্যাপ্তিকাল ছিলো মাত্র ৭৪ বছর (১৯১৭ থেকে ১৯৯১)। এই ৭৪ বছরে পৃথিবী জুড়ে গণহত্যা চালিয়ে ৯ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে তারা। সে হিসেবে মুসলমানদের হাতে খিলাফত ছিলো প্রায় ১৩০০ বছর। ইমতিয়াজ মাহমুদ কি হিসেবে দিতে পারবে এই ১৩শ’ বছরে মুসলমানদের দ্বারা কত মানুষ নিহত হয়েছিলো ?? ইমতিয়াজ মাহমুদ হাজারো ইতিহাস ঘেটে দেখাতে পারবে না, মুসলমানরা ১৩শ’ বছরেও কমিউনিস্টদের গণহত্যার ১০% লোক হত্যা করেছে।
    আসলে আবেগ দিয়ে অনেক কিছু লেখা যায়, কিন্তু দলিল দিলে ইমতিয়াজ মাহমুদরা ন্যাংটা হয়ে পালিয়ে যায়। কারণ দলিলের সামনে অপরাধীরা অসহায়। যাই হোক, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরোধীতা করায় তসলিমা নাসরিন ও তার লেখা লজ্জা উপন্যাসের প্রশংসা করেছে ইমতিয়াজ। আমি জানি না ‘ক’ উপন্যাসে তসলিমার বেডমেটদের তালিকায় ইমতিয়াজের নাম আছে কি না, কিন্তু এটা বলতে পারবো, এ ধরনের ইস্যুতে তসলিমা ও লজ্জা উপন্যাসের পক্ষ নিয়ে ইমতিয়াজ মাহমুদ ভুল করেছে। কারণ লজ্জা উপন্যাস বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়নের বিরুদ্ধে লেখা, কিন্তু সেটা কিন্তু ব্যবহৃত হয়েছে ভারতের সংখ্যালঘু মানে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্যে। লজ্জা উপন্যাসটি ভারতের উগ্রহিন্দুত্ববাদী বিজেপি অসংখ্য ভাষায় কপি করে বাবরি মসজিদ দাঙ্গার প্রভাব কাটিয়েছে। এই বইয়ের জন্য তসলিমাকে ভারতের উগ্রহিন্দুরা পুরষ্কারে ভূষিতও করেছে। (http://bit.ly/2fcrpOR)
    ইমতিয়াজ বলছে তসলিমা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে বলে, অথচ সে এখন ভারতে আছে। আর ভারতে সে এমন সব স্ট্যাটাস দেয়, সেগুলো ভারতের সংখ্যালঘু মানে মুসলমানদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা চালাতে সংখ্যালগুরু হিন্দুদের উস্কে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। ভারতের মত একটা উগ্র সাম্প্রদায়িক দেশে বসে (যেখানে স্বাধীনতার পর ১ লক্ষ দাঙ্গা হয়) সংখ্যালঘু মুসলমানদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক স্ট্যাটাস দিয়ে তসলিমা প্রমান করেছে সে বর্তমানে সাম্প্রদায়িক বিজেপির দাঙ্গাবাজির প্লটতৈরীকারী।
    ভারতে বসে ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের বিরুদ্ধে উস্কানি দিয়ে তসলিমার কিছু সাম্প্রদায়িক স্ট্যাটাস-
    ১)http://bit.ly/2fwubzQ
    ২)http://bit.ly/2eB3WUd
    ৩)http://bit.ly/2e3e1ge
    আমার মনে হয়, ইমতিয়াজ মাহমুদ ‍শুধু নিজেকেই মানুষ মনে করেন, কিন্তু মুসলমানদের মানুষ মনে করেন না। যদি করতেন তবে মুসলমানদের বিশ্বাসের গুরুত্ব দিতেন। যেহেতু তিনি মুসলমানদের মানুষ মনে করেন না, তাই তাদের বিশ্বাসের কি গুরুত্ব থাকতে পারে ??
    মুসলমানদের কেন্দ্র কাবা ঘর, সেখানে অন্য ধর্মের মূর্তি স্থাপন করলে স্বাভাবিক ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানবেই। কিন্তু সেটা মানতে নারাজ ইমতিয়াজ মাহমুদ। অথচ দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকা যখন পহেলা বৈশাখের বিরোধিতা করতো তখন সেটা দেখে ইমতিয়াজ বলতো- “এইগুলি পড়ে পড়ে আমার তখন প্রতিদিন সকাল বেলায় মাথায় রক্ত উঠে যেতো, মনে হতো যাই ওই মওলানা মান্নান আর ওর পত্রিকা দুইটার উপরেই বোমা মেরে আসি।”
    (http://bit.ly/2fwzwr7, আর্কাইভ- http://archive.is/FQsaO)

    তারমানে বোমা মারার ইচ্ছা ইমতিয়াজ মাহমুদের মাথাও আসে, সুযোগ পেলে সে সেটা বাস্তবায়নও করবে, কিন্তু সেই চিন্তা মুসলমানদের মাথায় আসলেই দোষ।
    যাই হোক, ইমতিয়াজ মাহমুদের মত কমিউনিস্টরা হচ্ছে বৃদ্ধ হায়েনার মত। এদের পেটে ভাত নেই, হাতে ক্ষমতা নেই, বিদেশ থেকে টাকা পয়সাও আসে না। তাই বাধ্য হয়ে, কিবোর্ডে-মনিটরে বসেই মুসলিম বিদ্বেষ ছড়াতে হচ্ছে । কিন্তু এদের হাতে যদি ক্ষমতা থাকতো তবে দেখতেন ইমতিয়াজ মাহমুদ নিজেই একে-৪৭ হাতে মুসলিম গণহত্যায় নেমে পড়েছে। এখন সাম্প্রদায়িকতা ভালো না বলে স্ট্যাটাস মারে, তখন দেখতেন উগ্র সাম্প্রদায়িকতা কত প্রকার ও কি কি কড়ায় গণ্ডায় বুঝিয়ে দিতো (কমিউনিস্ট আর কমিউনাল কিন্তু পাশাপাশি শব্দ)।
    ইমতিয়াজ মাহমুদের কষ্ট অবশ্য আমি ধরতে পেরেছি, ইন্টারনেট ফেসবুক আসার পর সাম্প্রদায়িক হিন্দুদের কার্যক্রম সবাই সহজেই ধরে ফেলতে পারছে, এতে ইমতিয়াজদের ন্যাকা ভণ্ডামি ধান্দাবাজি সবাই খাচ্ছে না। আর এতেই ব্যবসা লাটে উঠেছে ইমতিয়াজদের, এ কারণে এত চিৎকার চেচামেচি।

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728