Header Ads

ad728
  • Breaking News

    হেফাজতের কথায় পাঠ্যবই পরিবর্তন কতটুকু যৌক্তিক সিদ্ধান্ত ?

    (১)
    এ বছর সরকার পাঠ্যবইতে কিছু পরিবর্তন এনেছে। এতে নাস্তিক ও হিন্দুরা দাবি করেছে- সরকার নাকি হেফাজতে ইসলামের কথায় পাঠ্যবইয়ে পরিবর্তন করেছে। তবে হেফাজতের মুখপাত্র মুফতি ফয়জুল্লাহ জানিয়েছেন, পাঠ্যপুস্তকের পরিবর্তনের দাবি তার সংগঠনের নয়, সারা বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ পাঠ্যপুস্তক পরিবর্তনের দাবি তুলেছিলো, তার সংগঠন শুধু সেটার পক্ষে বলেছে মাত্র (https://youtu.be/_sDcY7pWFsc)। যারা অনলাইন-ফেসবুক ব্যবহার করেন, তারা খুব ভালোভাবেই জানেন, এই পাঠ্যবই পরিবর্তনের দাবি শুধু হেফাজতে ইসলাম নয়, সাধারণভাবে সকল মুসলমানই করেছে। তাই বর্তমানে যে কথাটা নাস্তিক ও হিন্দু প্রথম ছড়াচ্ছে, অর্থাৎ হেফাজতে ইসলামের কথায় পাঠ্যপুস্তক পরিবর্তণ হয়েছে, এটা সম্পূর্ণ ভুয়া তত্ত্ব এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করা ছাড়া আর কিছু নয়।

    (২)
    এরপর নাস্তিক ও হিন্দুরা দাবি করেছে- এই পরিবর্তন নাকি দেশে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদের সূচনা করবে।
    এটাও ভুয়া তত্ত্ব। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ যেটা চাইবে সেটা পালন করলে জঙ্গীবাদ হবে, এটা তারা কোথায় পেলো ? গণতান্ত্রিক সিস্টেমে তো তাহলে সবকিছুই জঙ্গীবাদের অংশ। দেশের ৯৫% ‍মুসলমান চাইলে জঙ্গীবাদ হবে, আর ৫-১০টা ছাগলের তৃতীয় বাচ্চা টাইপ নাস্তিক-হিন্দু কিছু বললেই সেটা শান্তিময় হবে এটার পক্ষে দলিল দাবি করছি।

    (৩)
    এরপর নাস্তিক ও হিন্দুরা দাবি করেছে- প্রগতিশীল নামধারী নাস্তিক লেখকের লেখা বাদ দেয়ায় ছাত্রদের ক্ষতি হচ্ছে।
    পাঠক- হুমায়ুন আজাদের লেখা ‘বই’ কবিতাটি বাদ দেয়া হয়েছে ক্লাস-৫ এর বই থেকে। তার বদলে প্রবেশ করেছে কবি কাদের নেওয়াজের লেখা ‘শিক্ষা গুরুর মর্যাদা কবিতা’টি। পাঠক ! আপনারা কি দুটো কবিতা পড়েছেন ? যদি পড়েন তবে একটু চিন্তা করে দেখুন তো- ক্লাস-৫ এর একজন ছাত্র কোন কবিতাটি পড়লে অধিক নৈতিকতা লাভ করবে ? হুমায়ুন আজদের ‘বই’ নাকি কাদের নেওয়াজের ‘শিক্ষা গুরুর মর্যাদা’। আবার ৯ম-১০ম শ্রেণীতে বাদ দেয়া হয়েছে লালনের লেখা ‘সময় গেলে সাধন হবে না’ কবিতাটি। তার বদলে প্রবেশ করেছে কাজী নজরুল ইসলামের লেখা ‘উমর ফারুক’ কবিতাটি। পাঠক আপনারা্ই যাচাই করুন, কোন কবিতাটি পাঠ করলে ছাত্ররা অধিক নৈতিকতা শিখবে ? লালনের ‘সময় গেলে সাধন হবে না’ নাকি কাজী নজরুলের ‘উমর ফারুক’ কবিতাটি ?

    (৪)
    এরপর নাস্তিক ও হিন্দুরা দাবি করেছে, পাঠ্যবই থেকে কিছু গল্প-কবিতা বাদ দিয়ে সরকার সাম্প্রদায়িকতাকে সমর্থন করেছে । কিন্তু বাস্তবে ঘটনা পুরোই উল্টো। বরং পাঠ্যবই থেকে কিছু সাম্প্রদায়িক গল্প-কবিতা বাদ দেয়া হয়েছে। যেমন- রামায়ন (৮ম, শ্রেণী), রাধা কৃষ্ণের লীলা (কবিতার নাম সুখের লাগিয়া, শ্রেনী-নবম-দশম), দেবী অন্নপূর্নার প্রশংসা (আমার সন্তান, ৯ম-১০ম), দেবী দূর্গার প্রশংসা (বাংলাদেশের হৃদয়, ৭ম) এই গল্প-কবিতা অবশ্যই কোন বিশেষ ধর্মের অবস্থান প্রকাশ করে।

    (৫)
    নাস্তিক ও হিন্দুরা প্রায় বলে- কবির আবার ধর্ম কি ? সাহিত্যের আবার ধর্ম কি ? কেন সাহিত্যের মধ্যে হিন্দু-মুসলিম খুঁজতে হবে।
    আমিও তো তাই বলি। কাজী কাদের নেওয়াজের লেখা শিক্ষা গুরুর মর্যাদা, কাজী নজরুলের লেখা- উমর ফারুক কবিতা। এগুলোও তো সাহিত্য। আপনারা কেন এগুলোর মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা খুজে পাচ্ছেন। সাহিত্যের মধ্যে যদি ধর্ম না থাকে, তবে এসব নিয়ে তো আপনাদের চুপ থাকা উচিত। ডবল স্ট্যার্ন্ডার নীতি অনুসরণ করছেন কেন ?

    (৬)
    নাস্তিক ও হিন্দুরা দাবি করছে, পাঠ্যবই নাকি ইসলামীকীকরণ করা হয়েছে। এটাও ভুল। এখনও (২০১৭ সাল) পাঠ্যবই পুরোপুরি নাস্তিক্যবাদী ও হিন্দুত্ববাদী রয়ে গেছে। কারণ-

    ক) ৮ম শ্রেণীতে পড়ানো হচ্ছে নাস্তিক্যবাদী কবিতা মানবধর্ম

    খ) প্রথম শ্রেণীতে ঋ-তে শেখানো হচ্ছে ঋষি, র-তে শেখানো হচ্ছে রথ।

    গ) ষষ্ঠ শ্রেণীর ‘চারুপাঠ’ বইয়ে পড়ানো হচ্ছে হিন্দুত্ববাদী কবিতা ‘মানুষ জাতি’ (কবিতার মূল নাম জাতির পাতি)। যেখানে বার বার বলা হচ্ছে হিন্দু ধর্মগ্রন্থ উপনিষদ শ্লোক ‘নিখিল জগত ব্রহ্মময়’

    ঘ) ৪র্থ শ্রেণীতে নেমন্তন নামক কবিতায় দাওয়াত দেয়া হচ্ছে হিন্দুদের ধর্মীয় গীত অনুষ্ঠান ভজনের।

    ঙ) অষ্টম শ্রেণীতে পড়ানো হচ্ছে হিন্দুদের পুনর্জন্মবাদ নিয়ে কবিতা ‘আবার আসিবো ফিরে’।

    চ) ও-তে ওড়না শেখানোয় নাস্তিক ও হিন্দুরা অনেক আন্দোলন করেছে। কিন্তু ৮ম শ্রেণীতে শেখানো হচ্ছে বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী শব্দ। যেমন: নাটমন্দির - দেবমন্দিরে সামনের ঘর, যেখানে নাচ-গান হয়। বোষ্টম- হরিনাম সংকীর্তন করে জীবিকা অর্জন করে এমন বৈষ্ণব । কাপালি – তান্ত্রিক হিন্দু সম্প্রদায়, চণ্ডীমণ্ডপ- যে মণ্ডপে বা ছাদযুক্ত চত্বরে দূর্গা, কালী প্রভৃতি দেবীর পূজা হয় । দণ্ডব- মাটিতে পড়ে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম । দশম শ্রেণীতে অভাগীর স্বর্গ গল্পে শেখানো হচ্ছে- শবযাত্রা, সিন্দুর, হরিধ্বনি, শ্মশান, ছোটজাত, অন্তেষ্টিক্রিয়া, চিতা, শব, পুত্রহস্তের মন্ত্রপুত অগ্নি, স্বর্গ, স্বর্গারোহণ, রথ, বামুন, সৎকার, সতীলক্ষী, মড়া পোড়ানো, ইন্দ্র, ঈশ্বর, কায়েত, হিন্দু, অশৌচ, গোবরজল, শ্রাদ্ধ, নুড়ো, ঠাকুরের মত অসংখ্য হিন্দুত্ববাদী শব্দ।

    ছ) দাবি করা হচ্ছে, পাঠ্যবই থেকে নাকি হিন্দু ও নাস্তিকদের লেখা বাদ দেয়া হয়েছে। অথব প্রকৃত সত্য হচ্ছে এখনও পাঠ্যবইতে হিন্দু ও নাস্তিক লেখকদের লেখার পরিমাণ শতকরা ৬২%।


    উপরের আলোচনা দ্বারা একটি বিষয় প্রতীয়মাণ যে বা যারাই পাঠ্যবইয়ের পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বলছে তারা নিজেরাই ভুয়া। এরা গোজামিল দিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে, এরা মিথ্যা তত্ত্ব উপস্থাপন করে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। এদের উদ্দেশ্য যে ভালো নয়, তাদের সাম্প্রতিক পাঠ্যবই বিরোধী আন্দোলনই তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।


    ---------------------------------------------------
    --আমার নতুন পেইজ Noyon Chatterjee 5
    (https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
    --পেইজ কোড- 249163178818686 ।

    --আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6 (https://www.facebook.com/202647270140320/)

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728