Header Ads

ad728
  • Breaking News

    আজ ২২ জমাদিউস সানি মুসলমানদের জন্য ঐতিহাসিকভাবে একটি স্মরণীয় দিন

    আজকে বাংলাদেশের হিজরী সন মোতাবেক ২২ জমাদিউস সানি তারিখ
    এ দিনটি ঐতিহাসিকভাবে একটি স্মরণীয় দিন, আজ থেকে প্রায় ১৪২৫ বছর আগে ১৩ হিজরী সনে এ দিনে মুসলমানদের প্রথম খলিফা হযরত আবু সিদ্দিক -এর অন্তর্ধান হয় এবং একই দিনে দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর খিলাফত গ্রহণ করেন। (https://en.wikipedia.org/wiki/Jumada_al-Thani)
    আমার জানা মতে বর্তমানে মুসলমানরা খলিফা ওমরের শাসন আমল সম্পর্কে কিছুই জানে না, তবে অমুসলিমরা সে খবর ভালোই রাখে। কিছুদিন আগে একটা খবর দেখেছিলাম, যার শিরোনাম ছিলো- ‘খলিফা ওমরের শাসনে অনুপ্রাণিত দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল’। খবরে পাওয়া যায়- খলিফা হজরত ওমরের এমন জীবন থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছেন ভারতের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ্র কেজরিওয়াল। কেবল তাই নয়, তিনি রাজ্য পরিচালনায় ওমর রা. এর শাসন ব্যবস্থা অনুসরণেরও চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন। সম্প্রতি ভারতে অনুষ্ঠিত একটি সেমিনারে তিনি এমন কথাই বলেছেন। খলিফা ওমরের জীবনী পড়ে মুগ্ধ হয়েছেন তিনি। ইচ্ছে পোষণ করছেন তার মতো রাষ্ট্র সাজাতে। (http://bit.ly/2nIXcMa)
    আচ্ছা মুসলমানদের দ্বিতীয় খলিফা ওমরের শাসন আমলে এমন কি ছিলো যা দ্বারা আকৃষ্ট হয়েছে দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী ??
    খলিফা ওমর ছিলেন আধুনিক শহর, শাসন ও বিচার ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠাতা। বতর্মানে আধুনিক শহর, বিচার ও শাসন ব্যবস্থা যা আমরা বুঝি তার সবটাই তিনি তার শাসন আমলে চালু করেন। আসুন তার শাসন ব্যবস্থায় তিনি কি কি বিষয় চালু করেছিলেন তা এক নজরে দেখি-
    ১) মজলিসে সূরা বা উপদেষ্টা পরিষদ গঠন : শাসনব্যবস্থাকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সর্বোচ্চ জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিদ্বারা মজলিসে শূরা বা উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেন। এই উপদেষ্টা পরিষদ আবার দু’ভাগে বিভক্ত করেছিলেন। যথা- উচ্চপরিষদ ও সাধারণ পরিষদ।
    ২) প্রদেশে বিভক্তীকরণ ও শাসনকর্তা নিয়োগ: : শাসনব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণের ফলে দূরবর্তী অঞ্চলেও সুষ্ঠুভাবে ইসলামী শাসনব্যবস্থার নিশ্চয়তা প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিটি প্রদেশকে জেলা ও মহকুমায় বিভক্ত করা হয়। প্রাদেশিক সরকারের কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিভিন্ন কর্মচারী নিযুক্ত করতেন। যেমন কাজী (বিচারক), কাতিব (প্রধান উপদেষ্টা), কাতিব উল দিওয়ান (প্রধান সামরিক উপদেষ্টা), ছাহিব উল খারাজ (রাজস^ উপদেষ্টা), ছাহিব উল আহদাত (পুলিশ উপদেষ্টা), ছাহিব উল বাইতুল মাল (কোষাধ্যক্ষ) ইত্যাদি।
    ৩) বেতন-ভাতা বিভাগ: যোগ্যতা অনুসারে বেতন ভাতা প্রদান । এতটুকু বেতন দেয়া যেন কেউ দুর্নীতি না করে।
    ৪) প্রথম বয়স্ক ভাতা চালু
    ৫) ক্যান্টনমেন্ট বা সেনানিবাস প্রতিষ্ঠা: ঐ সময় তিনি সৈন্যদের জন্য ৯টি ক্যান্টমেন্ট প্রতিষ্ঠা করেন। সৈন্যদের সেনানিবাসে অবস্থান করতে হতো যাতে যুদ্ধস্পৃহা এবং সামরিক প্রাধান্য অক্ষুন্ন থাকে। সৈন্যদের ফ্রি চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাসের জন্য সর্বপ্রকার সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রাখতেন।
    ৬) বিচার বিভাগ ও ক্বাযী নিয়োগ
    ৭) পুলিশ বিভাগ: চুরি, ডাকাতি বন্ধ করা, ওজন পরীক্ষা, মাদকদ্রব্য বিক্রয় বন্ধ ও অবৈধ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা পুলিশ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব ছিল। পুলিশ প্রধানের নাম রেখেছিলেন ছাহেব উল আহদাত।
    ৮) কারাগার প্রতিষ্ঠা: হযরত ওমরের শাসনের অন্যতম প্রধান কৃতিত্ব ছিল কারাগার প্রতিষ্ঠা। সেখানে পর্যাপ্ত প্রহরী, খাবার, ধর্মপালনের জায়গাসহ দরকারী সব জিনিস রাখা হতো। কোনোও অপরাধী প্রাপ্যের অতিরিক্ত কষ্ট যাতে পেতে না হয়ে তার সব ব্যবস্থা রেখেছিলেন।
    ৯) গোয়েন্দা বিভাগ: খিলাফতকে আদর্শযুক্ত, শত্রুমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, সঠিক বিচার-ব্যবস্থার জন্য তিনি গোয়েন্দা বিভাগ প্রবর্তন করেন। প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞান লাভ করার জন্য গোয়েন্দা নিযুক্ত করেন এবং এর মাধ্যমে খলীফা খিলাফতী কর্মচারীদের উপর কঠোর দৃষ্টি রাখতে সক্ষম হন। কোথাও কোনো অনিয়ম বা অসুবিধা সৃষ্টি হলে সাথে সাথে খলীফাকে জানাতো গোয়েন্দারা।
    ১০) রাজস্ব আদায় ও হিসাব বিভাগ: খিলাফতের আয়-ব্যয়ের হিসেব ঠিক রাখার জন্য তিনি ‘দিওয়ান’ নামে একটি রাজস্ব বিভাগ প্রবর্তন করেন। খিলাফতের রাজস্ব উৎস ছিল যাকাত, খারাজ, জিজিয়া, ফসলের উশর, আলফে, গনিমাহ, আল উশর ও হিমা।
    ১১) কৃষি কাজের জন্য ঋণ: তিনি কৃষির উন্নতির জন্য অগ্রিম ঋণ দেয়ার প্রথা প্রবর্তন করেন। যেখানে ফসল উৎপদন কম হতো সেখানে বেশি উৎপদিত এলাকা থেকে দ্রত খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা রাখতেন। যার জন্য কোথাও খাদ্য সঙ্কট হতো না।
    ১২) হিজরী সন গণনা শুরু
    ১৩) জনহিতকর কাজ: তার শাসনামলে অসংখ্য জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র, লঙ্গরখানা, পাবলিক টয়লেট, খাল, রাস্তা, সেতু, দুর্গ প্রভৃতি জনকল্যাণমূলক ও প্রশাসনিক ভবন বিভিন্ন জেলায় জেলায় এমনকি মহল্লায় মহল্লায় গড়ে উঠে। সব জায়গায় প্রায় সমহারে সব বিষয়গুলি রাখতেন। কিছু দূর দূর রাস্তার পথচারীর জন্য পানি এবং বিশ্রাম নেয়ার মতো ব্যবস্থা রেখেছিলেন পুরো এলাকা জুড়ে। জনগণের পানির অসুবিধা দূর করার জন্য তিনি টাইগ্রীস নদী হতে বসরা পর্যন্ত দীর্ঘ ৯ মাইল খাল খনন করেন। এছাড়া সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য খাল ছিল আমিরুল মুমেনীন খাল। লোহিত সাগর থেকে নীলনদের সংযোগ রক্ষাকারী এ খাল ব্যবসা-বাণিজ্যের পথকে সুগম করেছিলেন। তিনি কুফা, বসরা ও ফুসতাত নামে তিনটি নতুন শহরের ভিত্তি স্থাপন করেন। এই তিনটি শহর পরবর্তীকালে বিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞানের শ্রেষ্ঠ কেন্দ্রে পরিণত হয়। উদাহরণস্বরূপ: সেসময় ফুসতাত শহরে ৩৬টি মসজিদ, ৮০০ সড়ক এবং ১১৭০টি গোসলখানা (হাম্মামখানা) করেছিলেন। তিনি প্রতিটি শহরে চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন।
    ১৪) আদমশুমারি ও জরিপ: সালাম তিনি জাতীয় অর্থের সুষ্ঠু বণ্টনের জন্য সর্বপ্রথম লোকগণনা বা আদমশুমারি ও জরিপের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। মূলত সব বিষয়ে সুষম বণ্টনকার্য সম্পন্ন করার জন্য একটি আদমশুমারির প্রয়োজন হয় এবং পৃথিবীর ইতিহাসে দেশীয় রাজস্ব বণ্টনের ক্ষেত্রে এটাই সর্বপ্রথম লিপিবদ্ধ আদমশুমারি।
    আদমশুমারির মূল উদ্দেশ্য ছিলো:
    ক. কোথায় কি পরিমাণ খাদ্য উৎপাদন হয়, কোথায় খাদ্য কম বা বেশি আছে, কি পরিমাণ খাদ্য দরকার প্রভৃতি নির্ণয় করা।
    খ. মোট চাষাবাদের জমির পরিমাণ কতটুকু, বর্তমানে চাষবাদ কতটুকু করা হচ্ছে, বাকিগুলো জমিতে চাষাবাদ না হওয়ার কারণ, কি পরিমাণ ফসল উৎপাদন করা সম্ভব এবং এখন কি পরিমাণ দরকার প্রভৃতি নির্ণয় করা।
    গ. মোট জনসংখ্যা কত, কোন কোন প্রদেশে, জেলায়, মহকুমায় কি পরিমাণ মানুষ বেশি/কম আছে বা জন বসতি বেশি/কম আছে, কেন বেশি/কম, সুষম বণ্টন করতে কি কি দরকার প্রভৃতি নির্ণয় করা।
    ঘ. রাস্তা-ঘাট-পুল-খাল বা নদী-নালা কোথায় কি পরিমাণ বেশি/কম আছে প্রভৃতি নির্ণয় করা।
    ঙ. কোন প্রদেশে, জেলায়, মহকুমায় শিক্ষার হার তথা মূর্খ বা অশিক্ষিত কি পরিমাণ আছে তা নির্নয় করা।
    চ. শিক্ষা ও চিকিৎসাকেন্দ্র, প্রশাসনিক ভবন, বিভিন্ন মজলিসে সূরার ভবন, ক্বাযীর ভবন প্রভৃতি কি পরিমাণ বেশি বা কম আছে তা নির্ণয় করা।
    ছ. খিলাফতের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ কোথায় কি পরিমাণ বা বেশি/কম আছে তা নির্ণয় করা।
    জ. খিলাফতের আওতায় কি পরিমাণ বিধর্মী আছে, কোন কোন ধর্ম কি পরিমাণ লোক পালন করে তা নির্নয় করা।
    ঝ. জাকাত-ওশর, কর বা জিযিয়া কর কোথায় কি পরিমাণ আদায় হয় বা হয় না তা নির্ণয় করা।
    ১৫) খলীফার জবাবদিহিতা : খলিফাকে জনগণের কাছে সরাসরি জবাবদিহি করতে হতো।
     ১৬) ছদ্মবেশে জনগণের অবস্থা দেখা : জনসাধারণের অবস্থা চাক্ষুস দেখার জন্য তিনি অলিতে গলিতে রাতের আঁধারে ঘুরে বেড়াতেন এবং অসহায় মানুষের কাছে নিজ হাতে সাহায্য পৌঁছে দিতেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এর কোনোও নজির নেই। পারবে না কোনোও রাজা-বাদশাহ এই কাজের উদাহরণ হতে।
    আজকাল মুসলমানরা নিজেদের ইতিহাস কিছুই জানে না, ফলে মুসলমানদের মধ্যে তৈরী হয়েছে চরম পর্যায়ের হীনমন্যতা। সারাদিন ভাবে- ‘আহারে আমাদের মধ্যে কিছু নেই, সব অমুসলিমদের থেকে গ্রহন করতে হবে’। একইসাথে বলতে হয়- যেখানে অমুসলিম হয়েও দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল হযরত ওমরের থেকে শিক্ষা গ্রহণ করছে, সেখানে বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকে হযরত ওমরের শাসন ব্যবস্থার বিষয়গুলো অন্তর্ভূক্ত করে শিশু-কিশোরদের শিক্ষা দিতে সমস্যা কোথায় ?? কিন্তু সেগুলো না করে রাধাকৃষ্ণের লীলা, রবীন্দ্র পতিতা সাহিত্য, দেবী অন্নপূর্না-দেবী দূর্গার প্রশংসা, পাঠাবলীর নিয়ম করুন দিয়ে ভরে রাখা হয়েছে সব পাঠ্যবই। এ কারণেই মুসলমানদের সব কিছু থাকতেও আজ কিছুই নেই। দুঃখ, মুসলমানদের জন্য দুঃখ !!

    ---------------------------------------------------
    --আমার নতুন পেইজ Noyon Chatterjee 5
    (https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
    --পেইজ কোড- 249163178818686 ।

    --আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6 (https://www.facebook.com/202647270140320/)

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728