প্রসঙ্গ : ঈদের শপিং করতে বাংলাদেশের মানুষের ভারত গমন সমস্যার সমাধানে উপায় কি ?
এ বছর ঈদের আগে মিডিয়ায় একটা খবর বেশ আলোচিত হয়েছে- বাংলাদেশের জনগণ ঈদের শপিং করতে প্রচুর পরিমাণে ভারতে যাচ্ছে দেশীয় শপিং সেন্টারগুলোর মাথায় হাত। কোন কোন হিসেবে শপিং করতে যাওয়া বাংলাদেশী জনগণের পরিমাণ ২ লক্ষ। আর্থিক হিসেবে শপিং এর পরিমাণ কয়েক হাজার কোটি টাকা।
সত্যিই বলতে বাংলাদেশের শপিং সেন্টার ও কাপড় ব্যবসায়ীদের একটা বিরাট ব্যবসার সময় হচ্ছে ঈদের বাজার। অনেক ব্যবাসয়ী তো বলেই ফেলে- “সারা বছর লস দিয়ে দোকান চালাই, শুধু ঈদের বেচাকেনার জন্য। এ সময় পুরো বছরের লাভ চলে আসে।“ কিন্তু দু:খের বিষয়, সেই ঈদের বাজারেই এখন ভাগ বসেছে, ক্রেতারা চলে যাচ্ছে ভারতে।
আসলে, কোন সমস্যাই একদিনে তৈরী হয় না। সমস্যাগুলো দীর্ঘদিন ধরে আমরাই তৈরী করি, এবং এর ফলও ভোগ করতে হয় আমাদেরকেই। ’আজকে বাংলাদেশের মানুষ কেন ভারতমুখী হচ্ছে সেই সমস্যাটা মূলে গেলে কিন্তু অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হয় বাংলাদেশের শপিং সেন্টারগুলো। কারণ-এরাই এতদিন দেশী শপিং সেন্টারগুলোতে ভারতীয় মাল এনে জনগণকে ভারতীয় মালের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। ভারতীয় মাল বলে ১ টাকার জিনিস ৫ টাকা বিক্রি করেছে। কিন্তু অনলাইন-ইন্টারনেটের যুগে ক্রেতা যখন দেখেছে ভারতে ঐ মালটি বিক্রি হচ্ছে ১ টাকায়, তখন সে আরো ১ টাকা যাতায়াত ভাড়া খরচ করে ২ টাকায় ঐ একই জিনিস কিনতে পারছে। খরচ বেচেছে ৩ টাকা।
কথায় বলে- লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু। বাংলাদেশী শপিং সেন্টারগুলোর হয়েছে এখন সেই অবস্থা। শপিং সেন্টারগুলোতে গেলে তাজ্জব হতে হয়, যে মালে হাত দিবেন। বলবে- ভারতীয়। বাংলাদেশের একটা শপিং সেন্টারে যখন ভারতীয় পোষাক বিক্রি হয়, তখন দেশীয় কাপড় ব্যবসায়ীদের পেটে লাথি পড়ে। বহুবছর ধরে দেশী কাপড় ব্যবসায়ীদের পেটে লাথি মেরে শপিং সেন্টারগুলো ভারতীয় কাপড়কে প্রমোট করেছে। শপিং সেন্টারগুলো ১০ বছর চুটিয়ে ব্যবসা করেছে, কিন্তু চোরের দশদিন, গেরেস্তের একদিন। অবশেষে তারা পাপের ফল ভোগ করছে।
অনেকে হয়ত বলতে পারেন- তারমানে কি কোন বাংলাদেশী মাল নেই ? আসলে বাংলাদেশে ভারতীয় মালের অনুকরণে কপি হয়, কিন্তু সেটাকেও ভারতীয় বলে চালায় শপিং সেন্টারগুলো। শুধু তাই নয় বিভিন্ন ড্রেসগুলোর ভারতীয় মুভি ও সিরিয়ালের নামকরণ দিয়ে ড্রেসগুলোকে উচ্চমূল্য করেছে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরাই। যার ফলাফল সেই ভারতীমুখী-ই।
মূল সমস্যা হলো- বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা দেশীয় কোন ব্র্যান্ডকে তুলে নাই। শুধু ভারতীয় আর ভারতীয়। কিন্তু দিন শেষে ফলশূণ্য। ক্রেতা আর ভারতীয় পন্য মিলে গেছে, মাঝখান দিয়ে দেশী ব্যবসায়ীদের খাতা খালি। একই সমস্যা বাংলাদেশের গার্মেন্টসগুলোরও। তারা সারা দিন ইউরোপ-আমেরিকার বড় বড় ব্রান্ডের পোষাক বানিয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশে তাদের কোন ব্যান্ডকে প্রতিষ্ঠিত করে নাই। ফলে ইউরোপ কাপড় নেয়া বন্ধ করলে তাদের ব্যবসা শূণ্য। এদের কারণে মার্কেট হয়েছে দেশীব্র্যান্ড শূণ্য, ক্রেতারা হয়েছে বিদেশমূখী। জনগণ দেশী ব্র্যান্ড বলতে যাদের পেয়েছে (যেমন আড়ং) তারাও ধরা ছোয়ার বাইরে। একটা পোষাকের নূণ্যতম মূল্য ২০-২৫ হাজার টাকা। কিন্তু দেশের সব জনগণের ক্রয় সীমানার মধ্যে দেশী ব্র্যান্ডের দরকার ছিলো।
আমার মনে হয়, বাংলাদেশের শপিং সেন্টার ও কাপড় ব্যবসায়ী ও গার্মেন্টসগুলো উচিত হবে, শুধু বিদেশী ব্র্যান্ড প্রমোট না করে দেশীয় ব্র্যান্ড তৈরী করা। সেই ব্র্যান্ডের ক্রয় সীমা নিন্মবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত পর্যন্ত সবার হবে। ক্রয়সীমার মধ্যে প্রচুর পরিমানে দেশীয় ব্র্যান্ড তৈরী করতে পারলেই কেবল দেশের জনগণকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে, নয়ত ঈদের বিশাল মার্কেট আর ফিরে পাওয়া সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
---------------------------------------------------
--আমার ফেসবুক পেইজ Noyon Chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
--আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6 (https://www.facebook.com/202647270140320/)
No comments