আজকালকার তরুণ প্রজন্ম সাকিব আল হাসানের নাম জানে কিন্তু এই বৃদ্ধের নাম কয়জন জানে?
আজকালকার তরুণ প্রজন্ম সাকিব আল হাসানের নাম জানে, কারণ সে ক্রিকেট খেলায় বিশ্বের শীর্ষ অলরাউন্ডার, কিন্তু এই বৃদ্ধের নাম কয়জন জানে ?
বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম এই বৃদ্ধের খবর না রাখলেও সারা বিশ্ব কিন্তু এই বৃদ্ধের খবর ঠিকই রেখেছে। ওয়াল্র্ড র্যাংকিং এর বেস্ট ফাইটার পাইলটদের তালিকায় জ্বল জ্বল করছে এই ব্যক্তির নাম। কারণ তিনি সবচেয়ে বেশি ইসরাইলী বিমান ধ্বংস করতে পেরেছিলেন। অনেকে হয়ত ধরতে পেরেছেন, তার নাম সাইফুল আযম। বাড়ি- পাবনা।
(১- https://en.wikipedia.org/
সাইফুল আযমের বীরত্বগাঁথার শুরু ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধ দিয়ে। ভারতীয় যুদ্ধবিমানের একটি ফ্লাইট অফিসার মহাদেবকে ভূপাতিত করেছিলেন সাইফুল আযম। এজন্য তাকে ১৯৬৬ সালে পাকিস্তানের তৃতীয় সর্বোচ্চ সামরিক সম্মাননা সিতারা-ই-জুরত এ ভূষিত করা হয়। এছাড়া পাকিস্তান বিমান বাহিনীর ২ নম্বর স্কোয়াড্রনের অধিনায়ক হিসেবেও তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়।
এরপর ১৯৬৬ সালে আযমকে জর্দান বিমান বাহিনীর উপদেষ্টা হিসেবে ডেপুটেশনে পাঠায় পাকিস্তান। ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধ শুরু হলে জর্দান বিমান বাহিনীর ১ নম্বর স্কোয়াড্রনের হয়ে হকার হান্টার নিয়ে আকাশে উড়েছিলেন তিনি।
যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল আযমকে ইসরাইলের সুপার মিসটেরে যুদ্ধবিমান থেকে জর্দানের মূল ঘাঁটি মাফরাক রক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয়। ৫ জুন আযম তার হকার হান্টার দিয়ে ইসরাইলের একটি বিমান তাৎক্ষণিক বিধ্বস্ত করেন এবং গুলিতে আরেকটিতে আগুন ধরে গেলে সেটি সীমান্তে ইসরাইলি ভূ-খণ্ডে গিয়ে পড়ে।
ইসরাইলি হামলা ঠেকাতে পরদিন তাকে দ্রুত ইরাকি বিমান বাহিনীতে পাঠানো হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তৎকালীন সবচেয়ে আধুনিক দুটি মিরাজ যুদ্ধবিমানের পাহারায় ইসরাইলি বিমান বাহিনীর চারটি ভাতোর বোম্বার পশ্চিম ইরাকের বিমান ঘাঁটিতে হামলা চালায়।
এবারও ইরাকি হান্টার নিয়ে প্রতিরোধে নামেন এই অকুতোভয় বৈমানিক। ইসরাইলি একটি মিরাজের পাইলট ক্যাপ্টেন গিদিয়োন দ্রোর সাইফুল আযমের উইংম্যানসহ দুটি ইরাকি যুদ্ধবিমান ভূ-পাতিত করে। কিন্তু আযমের পাল্টা হামলায় দ্রোর ধরাশায়ী হয়।
এছাড়া ক্যাপ্টেন গোলানের ভাতোর বোম্বারও ভূ-পাতিত করেন সাইফুল আযম। দুজনকে বন্দি করে ইরাকি সেনারা এবং তাদের বিনিময়ে পরবর্তীতে ইসরাইলের হাতে আটক কয়েক হাজার ইরাকি ও জর্দানি সেনাকে মুক্ত করা হয়। আযম ৭২ ঘণ্টায় চারটি ইসরাইলি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেন।
এই বীরত্ব ও অসীম সাহসিকতারর জন্য সাইফুল আযম জর্দানের অর্ডার অব ইন্ডিপেন্ডেন্স এবং ইরাকের নাত আল-সুজাত সম্মাননায় ভূষিত হন। এছাড়া ২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর দেয়া এক সম্মাননায় তাকে বিশ্বের ‘২২ জীবিত ঈগলের (ওয়ান অব দি টুয়েন্টে টু লিভিং ঈগলস)’ একজনে ভূষিত করা হয়। (১- http://bit.ly/2xxkyIK, ২-http://bit.ly/2xxkyIK)
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিভৃতচারী এই বীরের কীর্তিগাথাও অনেকটা অজানা এ দেশের মানুষের কাছে। বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফট্যানেন্ট মতিউর রহমানের পাকিস্তানি বিমান ছিনতাইয়ের অন্যতম কারিগর ছিলেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানে থাকা এই বীর কয়েকজন বাঙালি সহকর্মীকে নিয়ে দেশটির বেশ কয়েকটি বোয়িং বিমান এবং যুদ্ধবিমান ছিনতাই ও ধ্বংসের পরিকল্পনা করেন। শেষ পর্যন্ত গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়ে মুখোমুখি হন কোর্ট মার্শালের। প্রায় ২১ দিন নির্জন সেলে কেটেছে মৃত্যুর ভয়ে।
তবে পাক-ভারত এবং আরব-ইসরাইল যুদ্ধের বীরত্বের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে তাকে আটকে রাখা হয়। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরও নজরদারিতে থাকা আযমকে বিমান বাহিনী কার্যক্রমে অংশ নিতে দেয়া হয়নি।
স্বাধীনতার পর দেশে ফিরে ঢাকায় বিমান বাহিনীর ঘাঁটিতে যোগ দেন এই বৈমানিক। ১৯৭৭ সালে তাকে ঢাকা বিমান ঘাঁটির অধিনায়ক করা হয় এবং গ্রুপ ক্যাপ্টেন হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয়। সর্বশেষ ১৯৭৯ সালে অবসরে গেলেও বেসামরিক পরিবহন বিমান কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান পদে দুদফা দায়িত্ব পালন করেন তিনি। (http://bit.ly/2fCaCDZ)
গত কয়েকদিন আগে খবর এসেছে, জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছে এই বীর। বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার এ্যাপোলো হাসপাতালের ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) তে ভর্তি আছেন। তার পরিবার দেশবাসির নিকট দোয়া কামনা করেছেন। (http://bit.ly/2xxuuSr)
ছবি : হাসপাতালে ভতি হওয়ার কিছুদিন পুর্বে অসুস্থ সাইফুল আযমের ছবি।
[উইকিপিডিয়াতে (https://en.wikipedia.org/
এ সম্পর্কে আমার আরো লেখা- http://bit.ly/2xl0cQQ
---------------------------------------------------
--আমার ফেসবুক মূল পেইজ Noyon Chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
--আমার ফেসবুক ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6 (https://www.facebook.com/202647270140320/
No comments