Header Ads

ad728
  • Breaking News

    ও আমার চেতনাওয়ালা বন্ধুরে, তুমি কেন হামজা খাতুন হইতে পারলা না ?


    গত কয়েকদিন ধরে ফেসবুক একটা মহলের এক্টিভিটিজ লক্ষ্য করছিলাম। তারা বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অবস্থান দেয়ার ঘোর বিরোধী। রোহিঙ্গারা বহু দোষে দুষ্ট, রোহিঙ্গারা বিশেষ অঙ্গের ভেতরে করে ইয়াবা আনে, রোহিঙ্গারা মানুষ চুরি করে, রোহিঙ্গারা কক্সবাজারকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করতে পারে, রোহিঙ্গাদের বাচ্চা বেশি, রোহিঙ্গাদের শরীরে এইডস আছে এরকম নানান অভিযোগ তারা তুলছে রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে। মজার ব্যাপার হচ্ছ, যারা এই তথ্যগুলো ছড়াচ্ছে তারা প্রায় সবাই নিজেকে মুক্তিযুদ্ধের সৈনিক বা মুক্তিযুদ্ধ গবেষক বলে দাবি করে থাকে। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার একধাপ এগিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছে, একাত্তর সাথে রোহিঙ্গারা রাজাকার ছিলো, তাই ওদেরকে আমাদের দেশে অবস্থান দেওয়ার বিরোধী আমরা।

    ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় রোহিঙ্গাদের অবস্থান কেমন ছিলো তা ঘাটতে শুরুতে পেলাম, ঐ চেতনাওয়ালাদের-ই তৈরী করা ওয়েবসাইট “মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ ট্রাস্ট”-তে চেতনাওয়ালা সাব্বির হোসাইনের লেখা ‘মুক্তিযুদ্ধে বার্মার ভূমিকা’ একটি আর্টিকেল। সেখানে সে যা লিখেছে, তার সারমর্ম-
    একাত্তর সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি বিরুপ অবস্থানে ছিলো বার্মা। বাংলাদেশীদের শরনার্থীক্যাম্প গুলোকে তারা কারাগার বানিয়ে রেখেছিলো। খাদ্য-পানীয় দিতো না। বাঙালীদের কষ্ট দিতো, বন্দি করে রাখতো। এর কারণ- পাকিস্তানীদের সাথে চীনের সুসম্পর্ক ছিলো। আর যেহেতু বার্মাও চীনের বন্ধু। তাই বার্মার সামরিক সরকার পাকিস্তানের পক্ষই নিয়েছিলো। পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের বিরোধীতা করতো। ----------- এতটুকু তথ্য সঠিক আছে।

    তবে তারা মুক্তিযুদ্ধে রোহিঙ্গাদের অবস্থান ব্যক্ত করতে গিয়ে রোহিঙ্গাদের দুটো ভাগে ভাগ করেছে।
    ১) মুসলমানদেশ পাকিস্তান ভেঙ্গে যাচ্ছে বিধায় একদল মুসলিম রোহিঙ্গা পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিলো।
    ২) আরেকদল রোহিঙ্গা (তাদের ভাষায় শিক্ষিত রোহিঙ্গা) বাংলাদেশ থেকে আগত শরনার্থীদের সাহায্য সহযোগীতা করেছিলো। (http://bit.ly/2faNYSF)

    চেতনাবাদীদের থেকে সংগ্রহ এই ইতিহাস পড়লে যদি বোঝা যায়, শুধুমাত্র মুসলিম হওয়ার কারণে রোহিঙ্গাদের একাত্তরের অবদানকে খাটো করতে চেয়েছে তারা, কিন্তু তারপরও তাদের দেয়া তথ্য থেকে এটা স্পষ্ট, একদল রোহিঙ্গা একাত্তর সালে ঠিকই বাংলাদেশী শরনার্থীদের সাহায্য করেছিলো।

    গত কয়েকদিন আগে একটি নিউজ পোর্টালে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা হাজমা খাতুন নামক এক রোহিঙ্গা শরনার্থীর সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়। সেখানে শতবর্ষী হাজমা খাতুন বলেন-
    “বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় হিন্দু, মুসলিম অনেকেই পালিয়ে রাখাইন রাজ্যে আমার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। আমার স্বামী মোহাম্মদ কালু তাদের আশ্রয় দিয়েছিলেন। তখন আশ্রিত মানুষদের প্রতিদিন রান্না করে খাইয়েছি। সেবাযত্ন করেছি। আজ নিজের সেই দেশ ছেড়ে এই দেশেই (বাংলাদেশে) আমাকে আসতে হলো।” (http://bit.ly/2w6RnbO)

    নিজেই চিন্তা করে দেখুন-
    ১৯৬২ সালে সামরিক শাসক আসার পর থেকে ব্যাপক হারে গণহত্যার স্বীকার হয়েছিলো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। সেই কঠিন অবস্থায় বার্মীজ সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে যদি রোহিঙ্গাদের একটি অংশ বাংলাদেশী শরনার্থীদের জন্য কাজ করে তবে সেটার প্রতিদান পাওয়ার কি যোগ্যতা রাখে না ? বলাবাহুল্য, ৭১ সাথে কোন বাংলাদেশী পরিবার মুক্তিযোদ্ধাদের বিন্দুমাত্র সাহায্য করেছে বা সম্পর্ক রেখেছে, এমন খবর পাওয়া মাত্র পাক বাহিনী তাদের ধরে নিয়ে যেতো এবং হত্যা করতো। তাহলে পরদেশের রোহিঙ্গারা যে সামরিক শাসকদের বিরোধীতার মুখে বাংলাদেশীদের সামান্য সাহায্য করেছিলো, সেটাই বা কম কি ?

    কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আজকে সেই চেতনা ব্যবসায়ীরাই রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বলছে। শ্লোগান দিচ্ছে- ‘হটাও রোহিঙ্গা, বাচাও দেশ’। উল্টোভাবে চিন্তা করলে, ৭১ সালে যেসব রোহিঙ্গা বাঙালী শরনার্থীদের সাথে খারাপ আচরণ করেছিলো তাদের অবস্থানটাই যেন নিয়েছে আজকে চেতনাবাজরা। অপরদিকে যারা রোহিঙ্গাদের পক্ষে কাজ করছে তারা পেয়েছে সেই শিক্ষিত রোহিঙ্গা বা হামজা খাতুনদের অবস্থান।

    তাই গানের সুরে বলতেই হয়-
    ও আমার চেতনাওয়ালা বন্ধুরে, তুমি কেন হামজা খাতুন হইতে পারলা না ?


    ---------------------------------------------------
    --আমার ফেসবুক মূল পেইজ Noyon Chatterjee 5
    (https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
    --পেইজ কোড- 249163178818686 ।

    --আমার ফেসবুক ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6 (https://www.facebook.com/202647270140320/

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728