ইংরেজদের সংবর্ধণা দেয়ার শারদীয় দূর্গা পূজাকেই আধুনিক দূর্গা পূজার সূচনা হিসেবে ধরা হয়
ফেসবুকে একজন ব্রাহ্মন হিন্দু লেখক অনেক দিন ধরে মুসলমানদের পক্ষে লিখে মুসলমানদের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছিলো। মোটামুটি সফল হওয়ার পর নতুন করে সে পুরান ধান্ধায় ফিরে এসেছে। হিন্দুদের অত্যাচার অবিচারের রেকর্ড লুকিয়ে প্রচার করছে।
আজকে দেখি, সে স্ট্যাটাস প্রসব করে প্রমাণ করার চেষ্টা করছে- শারদীয় দূর্গা পূজার সাথে সিরাজ উদ দৌল্লাহ’র পতনের কোন সম্পর্ক নেই। তার মতে আধুনিক শারদীয় দূর্গা পূজা চালু করে রাজশাহীর কংসনারায়ন”।
আসলে সে চাইছে- দূর্গা পূজার এন্টি ইসলামীক কলঙ্ক ঘুচাতে। কিন্তু কি লাভ হবে বলুন-
তার ভাষায় যদি কংসনারায়নও আধুনিক শারদীয় পূজার প্রবর্তক হয়, তবে সেই কংসই বা কেমন ছিলো ?
বাংলার শেষ স্বাধীন সুলতান ছিলেন দাউদ খান কররানী (শাসনকাল ১৫৭২-১২ জুলাই ১৫৭৬)। তার পতনের পেছনে দায়ী ছিলো এই কংসনারায়ন। কংসনারায়ন ছিলো দাউদ খানের বাবার ( সুলতান সুলেমান কররানী) সময়কার সৈন্যবাহিনীর সামান্য এক সদস্য। কংসনারায়ন মুসলিম সুলতানদের পছন্দ করতো না। সে চাইতো কিভাবে তাদের পতন ঘটনো যায়। কংসনারায়ন আরো কিছু হিন্দু মিলে মিটিং করলো। ফন্দি আটলো গোপনে যাওয়া হবে দিল্লীর সম্রাট আকবারের কাছে।
কথা মতো চলে গেলো সম্রাট আকবরের কাছে। বললো- বাংলায় হিন্দুদের উপর নির্যাতন করছে সুলেমান কররানীর সেনাপতি কালাপাহাড়। আকবর যেন সুলতানের পতন ঘটিয়ে হিন্দুদের মুক্ত করে। আকবরের হিন্দুদের প্রতি ছিলো অত্যধিক মায়া। সে নিজেই ‘দ্বীন-ই-ইলাহি’ নামক নতুন ধর্ম চালু করেছিলো, যার প্রধান ছিলো আকবর নিজেই। পাশাপাশি ইতিহাস বলে কংসনারায়ন ছিলো খুবই বাকপটু ও মিষ্টিভাষী। কংসনারায়নের কথায় তুষ্ট হয়ে সম্রাট আকবার সেনা পাঠালো সুলতান দাউদ খান কররানীর বিরুদ্ধে। যদিও দাউদের সাথে পারা এত সহজ ছিলো না। কিন্তু একসময়কার সেনাসদস্য কংসনারায়ন অতি সঙ্গপোনে মোঘলদের সহাযোগীতা করলো। কংসনারায়নের বিশ্বাসঘাতকতায় পরাজয় ও মৃত্যু হলো দাউদ খান কররানীর। সমাপ্তি ঘটলো বাংলার শেষ স্বাধীন সুলতানের। কংসনারায়নের নামের সামনের ‘রাজা’ উপাধিও দিয়ে দিলো সম্রাট আকবর।
যদি শারদীয় দূর্গা পূজা ইংরেজদের সংবর্ধনা দিতে করা হয়, তবে সেটা যেমন নির্দেশ করে বাংলার পতনের, ঠিক তেমনি কংসনারায়নকে যদি শারদীয় দূর্গা পূজার সূচনাকারী ধরা হয়, তবে সেটাও নির্দেশ করে বাংলায় স্বাধীন সুলতানী আমলের পতন। তবে উভয় ক্ষেত্রেই হিন্দুদের অবস্থান হচ্ছে বিশ্বাসঘাতক রূপে।
যাই হোক, শারদীয় দূর্গা পূজা তৈরী করতে গিয়েও চালাকির আশ্রয় নিয়েছিলো কংসনারায়ন। আসলে কংসনারায়ন চাাচ্ছিলো তার কথিত জমিদারী ও ভুইয়াগিরি জাহির করতে একটি বড় অনুষ্ঠান করতে। এতে সাধারণ প্রজাগণ তাকে ‘রাজা’ হিসেবে মেনে নেবে। এজন্য সে ধোকাবাজির আশ্রয় নেয়। সে তার সহযোগী কৃত্তিবাস ওঝাকে দিয়ে বাল্মকীর রাময়ণের বাংলা অনুবাদ করায় এবং তার মধ্যে মিথ্যা দূর্গা পূজার নাম ঢুকিয়ে দেয়। এ কারণে বাংলা ব্যতিত অন্য এলাকার হিন্দুদের মধ্যে দূর্গা পূজার প্রচলন দেখা যায় না।
এ সম্পর্কে আচার্য সুভাষ শাস্ত্রী তাঁর “অমৃতালোক” গ্রন্থের ১০৫ থেকে ১০৬ পৃষ্ঠায় বলেছেন:-
মূর্ত্তি পূজার পক্ষে প্রামাণ্য শাস্ত্রে কোন নির্দেশ নাই। তথাকথিত ব্রাহ্মণেরা দেব-দেবীর স্রষ্টা। কৃষিপ্রধান ভারতবর্ষে শ্রমজীবী কৃষকদের অর্থ সম্পদ শোষণ করা এবং জমিদারদের খেয়ালী মনের পূর্ণতা দানের জন্য কল্পিত পুঁথি রচনা করে “দুর্গাপূজা সৃষ্টি করা হয়েছিল।
মূর্ত্তি পূজার পক্ষে প্রামাণ্য শাস্ত্রে কোন নির্দেশ নাই। তথাকথিত ব্রাহ্মণেরা দেব-দেবীর স্রষ্টা। কৃষিপ্রধান ভারতবর্ষে শ্রমজীবী কৃষকদের অর্থ সম্পদ শোষণ করা এবং জমিদারদের খেয়ালী মনের পূর্ণতা দানের জন্য কল্পিত পুঁথি রচনা করে “দুর্গাপূজা সৃষ্টি করা হয়েছিল।
ইতিহাস বলে, ষোড়শ শতাব্দীর প্রথম ভাগে রাজশাহী জেলার চলন বিলের পার্শ্বে জমিদার কংসনারায়ণ এর দ্বারা শরৎকালে প্রথম দুর্গাপূজা হয়েছিল। এই পূজার উৎপত্তির মহা তিন নায়ক হলো (১) জমিদার কংসনারায়ণ, (২) তাঁর সভাপতি কৃত্তিবাস ওঝা, এবং (৩) তাঁর বংশের পুরোহিত রমেশ শাস্ত্রী। কৃত্তিবাস ওঝা পয়ার ছন্দে গোঁজামিল দিয়ে কাল্পনিকভাবে মূল বাল্মিকী রামায়ণের নকল করে বাংলা ভাষায় রামায়ণ রচনা করে ‘দুর্গাপূজা’ ঢুকিয়ে দেয়। আর রমেশ শাস্ত্রী কঠোর চেষ্টা করে চণ্ডীপাঠের পুস্তক ও দুর্গাপূজার পদ্ধতি রচনা করে। সেই সময় আট লক্ষ টাকা খরচ করে প্রথম দুর্গাপূজা হয় চলনবিলে। এই পূজার আয়োজন দেখে পাশের ভাতুরিয়া পরগণার জমিদার জগৎ নারায়ণ বসন্তকালে দুর্গাপূজা করে। সে খরচ করে নয় লক্ষ টাকা। এই দুই জমিদারের নাম কেনা-বেচা এবং প্রভাব বিস্তারের জন্যই বাংলা এলাকায় দুর্গাপূজার উৎপত্তি ও প্রসার বলে ঐতিহাসিকেরা মনে করে।
মূল বাল্মীকি রামায়ণে কোন দেব-দেবী ও দুর্গাপূজার নামগন্ধ নেই। সুরথ রাজা দুর্গাপূজা করেছিলো বলে মার্কণ্ডেয় পুরাণে যে কাহিনী আছে তা অনৈতিহাসিক। ফলে সুরথ রাজার ‘দুর্গাপূজা’ করার ঘটনাও মিথ্যা। ফলে ভারতবর্ষের অন্য হিন্দু জনসমাজ দুর্গাপূজা করে না একমাত্র বাঙালি জনসমাজ ছাড়া। সুরথ রাজা এবং রামচন্দ্র যদি দুর্গাপূজা করেই থাকে তবে ভারতবর্ষের অন্য স্থানে এবং অযোধ্যায় দুর্গাপূজা নেই কেন? সমগ্র বাংলা এলাকা, আসাম এবং বিহারের কিছু অংশে দুর্গাপূজার বহুল প্রচলন কারণ বাঙালি যেখানে আছে সেখানেই ‘দুর্গাপূজার’ছড়াছড়ি। ভারতবর্ষের সংস্কৃত সাহিত্য, প্রামাণ্য পুস্তকসমূহ এবং হিন্দী সাহিত্যে দুর্গাপূজার কোন কথা নেই বলে তাঁদের আচরিত ধর্মে দুর্গাপূজার স্থান নেই। অথচ কৃষিপ্রধান বাংলা এলাকায় দুর্গাপূজা প্রচলন করে পুরোহিত এবং জমিদার নামক শোষকেরা।
মূল বাল্মীকি রামায়ণে কোন দেব-দেবী ও দুর্গাপূজার নামগন্ধ নেই। সুরথ রাজা দুর্গাপূজা করেছিলো বলে মার্কণ্ডেয় পুরাণে যে কাহিনী আছে তা অনৈতিহাসিক। ফলে সুরথ রাজার ‘দুর্গাপূজা’ করার ঘটনাও মিথ্যা। ফলে ভারতবর্ষের অন্য হিন্দু জনসমাজ দুর্গাপূজা করে না একমাত্র বাঙালি জনসমাজ ছাড়া। সুরথ রাজা এবং রামচন্দ্র যদি দুর্গাপূজা করেই থাকে তবে ভারতবর্ষের অন্য স্থানে এবং অযোধ্যায় দুর্গাপূজা নেই কেন? সমগ্র বাংলা এলাকা, আসাম এবং বিহারের কিছু অংশে দুর্গাপূজার বহুল প্রচলন কারণ বাঙালি যেখানে আছে সেখানেই ‘দুর্গাপূজার’ছড়াছড়ি। ভারতবর্ষের সংস্কৃত সাহিত্য, প্রামাণ্য পুস্তকসমূহ এবং হিন্দী সাহিত্যে দুর্গাপূজার কোন কথা নেই বলে তাঁদের আচরিত ধর্মে দুর্গাপূজার স্থান নেই। অথচ কৃষিপ্রধান বাংলা এলাকায় দুর্গাপূজা প্রচলন করে পুরোহিত এবং জমিদার নামক শোষকেরা।
একটু ভেবে দেখুন এক বছরের মধ্যে তিন বার তিন ভাবে দুর্গাপূজার নামে কৃষি প্রধান শ্রমজীবী লোকদের শোষণ করা হয়।
১) কৃষকেরা চৈত্র-বৈশাখ মাসে কঠোর পরিশ্রম করে আউশ ধান, পাট এবং আমন ধান রোপণ করেন। শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসে আউশ ধান এবং পাট কৃষকের ঘরে এলে এই সময় শরৎকালে ‘দুর্গাপূজার বিধান দিয়ে কৃষকদের অর্থ শোষণ করা হয়।
২) কিছুদিন পরে আবার কার্তিক মাসে ‘কাত্যায়নী পূজা নাম দিয়ে ফের দুর্গাদেবীকে পুনরায় সাধারণ মানুষদের শোষণ করার জন্য আবার ডেকে আনা হলো ব্রাহ্মণদের মন্ত্রের জোরে। পুনরায় চলল ধর্মের নামে তথাকথিত শূদ্রদের অর্থ সম্পদ শোষণ।
৩) ফাল্গুন মাসে আমন ধান ও চৈতালী ফসলের টাকা শোষণ করার জন্য ‘বাসন্তী’ পূজার নামে দুর্গাদেবী এবং তার বাহিনীকে ডেকে আনা হয় পুনরায় কৃষকদের সকল অর্থ সম্পদ শোষণ করার জন্য।
যাই হোক, শেষে এসে আবার বলবো- কংসনারায়ন শারদীয় দূর্গা পূজা চালু করলেও সেটা ধারাবাহিকতা রক্ষা করেনি। ক্লাইভকে সংবর্ধনা দিতে নবকৃষ্ণ যে দূর্গা পূজার আয়োজন করেছিলো সেটার ধারবাহিকতার বর্তমানে প্রচলিত আছে। এ কারণে ইংরেজদের সংবর্ধণা দেয়ার শারদীয় দূর্গা পূজাকেই আধুনিক দূর্গা পূজার সূচনা হিসেবে ধরা হয়।
প্রয়োজনীয় সূত্র:
১) http://bit.ly/2xDtDNV
২) http://bit.ly/2wYlvdK
৩) http://bit.ly/2yv9p8f
৪) http://bit.ly/2wZ4WJQ
১) http://bit.ly/2xDtDNV
২) http://bit.ly/2wYlvdK
৩) http://bit.ly/2yv9p8f
৪) http://bit.ly/2wZ4WJQ
------------------------------------------------------------------
--আমার ফেসবুক মূল পেইজ Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
কোনো হিন্দু মুসলমানদের ওপরে অত্যাচার করেছে তার রেকর্ড কি তোমার কাছে আছে!!! না কি মনগড়া কথা বলে হিরো সাজবার চেষ্টা? ইসলামের ইতিহাস খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ে দেখো না কেন? ইসলামের আগমনের পড়ে কি পরিমান হিন্দু নিগৃহীত হয়েছে আমাদের দেশে তার ইতিহাস কি জানো? না জেনে চুদির ভাই আরেকটা কমেন্ট করলে আমি কিন্তু অনেকদূর পর্যন্ত যাবো মনে রেখো |
ReplyDelete