পুলিশে ডিআইজি পদে পদোন্নতি পাওয়া দেবদাস ভট্টাচার্য্য আসলে কে ?
গত বুধবার পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ে ২০ কর্মকর্তার পদোন্নতি হয়। এদের মধ্যে অতিরিক্ত আইজি হয়েছে ৫জন, ডিআইজি হয়েছে ১৫ জন।
এই ২০ কর্মকর্তার মধ্যে ১৯ জন মুসলমান, আর ১ জন হিন্দু, হিন্দু কর্মকর্তার নাম দেবদাস ভট্টচার্য্য, যে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে দায়িত্বরত। (http://bit.ly/2gqJ0BH)
আমি আগে অনেক পোস্টে বলেছি, বাংলাদেশের পুলিশে উগ্রহিন্দুত্ববাদীদের প্রমোশন দেয়া হচ্ছে। সে হিসেব যদি এত উচ্চ পর্যায়ে একজন উগ্রহিন্দু থাকে, তবে সেটা খুবই খারাপ লক্ষণ। দেবদাস ভট্টচার্য্য সে রকম একজন হিন্দুত্ববাদী সদস্য।
দেবদাস ভট্টাচার্য্য সম্পর্কে জানতে হলে আপনাদের জানতে হবে গত ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চট্টগ্রামে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা। ঐ সময় একটি সরকারি জমিকে কেন্দ্র করে উগ্র হিন্দু ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে যায়। সরকারী জমিতে অনুমোদন ক্রমে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে একটি অফিস নির্মাণ করায় তার বিরুদ্ধে স্থানীয় হিন্দুরা সশস্ত্র মিছিল বের করে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অফিস আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। সেই মিছিলে উগ্রহিন্দুদের শ্লোগানগুলো ছিলো-
“জঙ্গীবাদের আস্তানা মৌলবাদের আস্তানা (মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িঘর)
জ্বালিয়ে দাও গুড়িয়ে দাও
একশন টু একশন
সনাতনী এ্যাকশন ডাইরেক্ট এ্যাকশন
আমাদের এ্যাকশন, ডাইরেক্ট এ্যাকশন
কুরুক্ষেত্রের (হিন্দুদের জিহাদ) হাতিয়ার
গর্জে উঠুক আরেকবার
হর হর মহাদেব, জেগেছি আমরা
জঙ্গী (মুক্তিযোদ্ধা) পাবো যেখানে লড়াই হবে সেখানে
ধর ধর জঙ্গী (মুক্তিযোদ্ধা) ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর,
ধর ধরে জঙ্গী (মুক্তিযোদ্ধা) ধর, ধইরা ধইরা বলী কর
লেগেছেরে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে
জেগেছেরে জেগেছে সনাতনী জেগেছে
কুরুক্ষেত্রের (হিন্দুদের জিহাদ) হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার
মুক্তিযোদ্ধাদের আস্তানা জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও”
(পুরো ঘটনা ভিডিওসহ দেখতে- http://bit.ly/2zrGpil)
এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা নিয়ে স্থানীয় কিছু সাংবাদিক রিপোর্ট করায় সাংবাদিকদের উপর ক্ষেপে যায় স্থানীয় হিন্দুরা। আমি আগের পোস্টে বলেছি- হিন্দুরা অপরাধ করবে, কিন্তু সেটা যদি মিডিয়া প্রকাশ করে দেন তবে সেটাও তারা অপরাধ, সংখ্যালঘু নির্যাতন বলে দাবি করবে।
যাই হোক ঐ ঘটনার জেরে ৬ই ডিসেম্বর উগ্রহিন্দুরা সাংবাদিককের উপর ক্ষেপে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। যা সিসিটিভি ফুটেজ (https://youtu.be/
এরপর ঐ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সাংবাদিকরা মামলা করে। কিন্তু সমস্যা ঘটে সম্প্রতি প্রমশন পাওয়া সেই দেবদাস ভট্টাচার্য্যকে নিয়ে। কারণ মামলাটি প্রথম অবস্থায় গ্রহণ করা হয় ‘দ্রুত বিচার আইন’ এ, কিন্তু পরবর্তীতে দেবদাস ভট্টাচার্যে্যর নির্দেশে ওসি বাদীকে না জানিয়ে মামলাটিতে দুর্বল ধারা সংযুক্ত করে দেয়, এতে আসামীরা দ্রুত ছাড়া পেয়ে যায়।
এ ঘটনার চট্টগ্রামের সাংবাদিকরা সমাবেশ করে পুলিশ কর্মকর্তা দেবদাস ভট্টাচার্যে্যর অপসারণ দাবি করে। ঐ সংবাদ সম্মেলনে ঐ দেবদাস ভট্টাচার্যে্যর বিরুদ্ধে সাংবাদিকরা কি বলেছিলো আসুন দেখি-
“ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ও সিইউজে আয়োজিত যৌথ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের পক্ষাবলম্বনকারী ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনারের অপসারণ দাবি করছি। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই, এই দুষ্কৃতিমনস্ক পুলিশ দিয়ে সন্ত্রাসী-জঙ্গিমুক্ত বাংলাদেশ গঠন সম্ভব নয়।
‘সরকারের ভেতরেও যেমন মৌলবাদী শক্তি লুকিয়ে আছে এবং মাঝে মাঝে মাথাচাড়া দেয়, তেমনি পুলিশ প্রশাসনের ভেতরেও প্রতিক্রিয়াশীল, দেশবিরোধী শক্তির এজেন্ট বসে আছে। তারা সাংবাদিকসহ জনগণের নিরাপত্তার নামে যখন ছিনিমিনি খেলে তখন আমাদের রাজপথে নামতে হয়।’
বিএফইউজে’র সহ সভাপতি শহীদ উল আলম পুলিশ কর্মকর্তা দেবদাস ভট্টাচার্যকে উদ্দেশ করে বলেন, পুলিশ জনগণের বন্ধু এই কথা কি আপনি জানেন না ? রাতের আঁধারে গোপনে নির্দেশ দিয়ে মামলার ধারা পাল্টে ফেলার সাহস আপনি কোথায় পেয়েছেন? সন্ত্রাসীরা কার বলে প্রেসক্লাবে হামলা করার সাহস পায়? গ্রেফতারের পর থানায় নিয়ে সন্ত্রাসীদের হাজতে না ভরে জামাই আদরে কেন রাখা হয়েছিল?
‘দেবদাস বাবু, আপনি চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের খতিয়ান জানেন না। এই প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে শামিল হয়েছিল। সন্ত্রাস-মৌলবাদের বিরুদ্ধে এই প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা বারবার আন্দোলন গড়ে তুলেছে। আপনি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নাকি সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন সেটা আমরা বুঝতে পারছি না। ’
তিনি বলেন, দেবদাস ভট্টাচার্য জনগণের সঙ্গে নেই। তিনি আছেন মদ আর ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। তিনি প্রতিমাসে মদ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা মাসোহারা পান। সেজন্য বারবার বদলির পরও তিনি চট্টগ্রাম ছেড়ে যান না।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ার বলেন, আমরা শুনেছি চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার যিনি সেদিন ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন তার নির্দেশে দ্রুত বিচার আইনের পরিবর্তে সাধারণ আইনে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে তো সাংবাদিকদের কোন সংঘাত নেই। তাহলে কেন পুলিশ সাংবাদিকদের সঙ্গে এই প্রতারণা আর প্রহসন করল। এই চট্টগ্রামে যারা মদ বিক্রি করে তারা পুলিশ প্রশাসনকে বড় অংকের টাকা দেয়। সেই মদ বিক্রেতার অনুসারীরা যখন প্রেসক্লাবে হামলা চালায় তখন পুলিশ তাদের পক্ষ নেয়।
(বিস্তারিত - http://bit.ly/2zrGjHk, আর্কাইভ- https://archive.is/7q0fa)
এছাড়া চট্টগ্রামে বহুল আলোচিত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যার কথা মনে আছে অনেকের। সে সময় মিতু হত্যা ও পরবর্তীতে বাবুল আক্তারকে ফাঁসানোর জন্য অনেকেই চট্টগ্রাম পুলিশের বনোজ কুমার মজুমদার ও দেবদাস ভট্টাচার্য্যকে দায়ি করে। বিশেষ করে বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে মিডিয়ায় বেশ কিছু বিদ্বেষী কমেন্টও সে করে (http://bit.ly/2yFHE0g)
সাংবাদিক আনিস আলমাগীর বলেছিলো- এক হিন্দু নার্স নাকি এক ডাক্তারের বাড়ি দখল করে রেখেছে। কেউ তার বিরুদ্ধে বললে সেই নার্স ভারতীয় হাইকমিশনে বিচার দেয়ার ভয় দেখায়।
সামান্য একটা হিন্দু নার্স যদি ভারতীয় হাইকমিশনের ভয় দেখিয়ে ডাক্তারের বাড়ি দখল করার সাহস করতে পারে, তবে পুলিশের ডিআইজি পদে পদন্নতি পাওয়ার জন্য কেউ ভারতীয় হাইকমিশনের সাহায্য নিতেই পারে।
বিষয়টি ভারত থেকে হয়েছে কি না, সেটা আরো সন্দেহ সৃষ্টি করে, যখন পুলিশের এই পদন্নতি ঘটনার মাত্র ৭ দিন আগে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা চট্টগ্রাম নিবাসী রানা দাশগুপ্ত এক সংবাদ সম্মেলন করে বলে- হিন্দু হওয়ার কারণে নাকি জৈনিক কর্মকর্তাকে পদন্নতি দেয়া হচ্ছে না। (http://bit.ly/2zqXc5l)
আমার ধারণা দেবদাস ভট্টাচার্য এই পদোন্নতি পাওয়ার জন্য সংখ্যালঘু তকমা ব্যবহার করে রানাদাশ গুপ্তকে মাঠে নামিয়েছে এবং সেই ভারতীয় কলেই হয়েছে এই পদন্নতি।
তবে দেবদাস ভট্টাচার্য্যের এই পদন্নতি দিয়ে তিনটি বিষয় অনুধাবন করা যায়-
১) দেবদাস ভট্টাচার্য একজন উগ্র হিন্দু। যে পুলিশে থেকে চট্টগ্রামে উগ্রহিন্দুত্ববাদীদের ছাত্রছায়া দিচ্ছে।
২) দেবদাস ভট্টাচার্য একজন ভারতীয় এজেন্ট। ভারতীয় নির্দেশনায় তাকে পদন্নতি দেয়া হলো।
৩) চট্টগ্রাম জেলা নিয়ে ভারতের একটি বিশেষ প্ল্যান আছে। সেই প্ল্যান বাস্তবায়নের অংশ এই দেবদাস ভট্টাচার্য্য।
------------------------------------------------------------------
--আমার ফেসবুক মূল পেইজ Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
No comments