মুসলমানদের এক হওয়ার সবচেয়ে বড় বাধা – ‘অসাম্প্রদায়িকতা’
অনেকেই বলে মুসলমানরা এক হতে পারে না। কিন্তু যারা এ ধরনের কথা বলে তারা কিন্তু নিজেও মুসলমানদের এক হওয়ার জন্য সবচেয়ে বড় বাধা। কারণ ঐ ব্যক্তিটি কথিত অসাম্প্রদায়িক নীতিতে বিশ্বাসী। আর যে মুসলমানরা কথিত অসাম্প্রদায়িক নীতিতে বিশ্বাসী, সে মুসলমানরা কখন নিজেদের মধ্যে গাট বাধতে পারে না।
অসাম্প্রদায়িক শব্দটি হচ্ছে সাম্প্রদায়িক শব্দের বিপরীত। সাম্প্রদায়িক বলতে বোঝায়- যে তার নিজ সম্প্রদায়ের দিকে ঝুকে আছে। তার নিজ সম্প্রদায়ের পক্ষপাতিত্ব করে, নিজ সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করে এবং বিপরীত সম্প্রদায়কে দমিয়ে রাখতে চায়। অপরদিকে অসাম্প্রদায়িক শব্দের অর্থ- যে শুধু নিজ সম্প্রদায়ের পক্ষে কাজ করে না, সবার জন্য কাজ করে। যে অন্য সম্প্রদায়ের বিরোধীতাও করে না।
তবে বর্তমানে প্রচলিত অর্থতে সাম্প্রদায়িক ও অসাম্প্রদায়িক শব্দটি শুধুমাত্র ধর্মীয় ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। মানে ‘যে নিজ ধর্মের পক্ষে পক্ষপাতিত্ব করে এবং অপর ধর্মকে দমিয়ে রাখতে চায়’ তাকেই সাম্প্রদায়িক বলে। অপরদিকে যে সব ধর্মকে সমানভাবে দেখে এবং ‘সবার পক্ষে/কারো বিরুদ্ধে না’ তাকেই অসাম্প্রদায়িক বলে।
তবে,
শুধু ধর্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে আমরা যদি সাম্প্রদায়িক ও অসাম্প্রদায়িক শব্দটা সকল ক্ষেত্রে ব্যবহার করি, তবে বিষয়টা কেমন দেখাবে ?? আসুন – সাম্প্রদায়িক ও অসাম্প্রদায়িক বিষয়টা রাজনীতি দিয়ে বিবেচনা করি।
শুধু ধর্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে আমরা যদি সাম্প্রদায়িক ও অসাম্প্রদায়িক শব্দটা সকল ক্ষেত্রে ব্যবহার করি, তবে বিষয়টা কেমন দেখাবে ?? আসুন – সাম্প্রদায়িক ও অসাম্প্রদায়িক বিষয়টা রাজনীতি দিয়ে বিবেচনা করি।
যেমন ধরুন, একজন আওয়ামীলীগ করে। সে দাবি করে অসাম্প্রদায়িক। সে সকল রাজনৈতিক দলের পক্ষেই কাজ করে। আওয়ামলীগের পক্ষে কাজ করে, বিএনপির পক্ষেও কাজ করে আবার জামাতের পক্ষেও কাজ করে। সব ক্ষেত্রে সমানাধিকার চায়। নিজে আওয়ামীলীগ করে বলে শুধু আওয়ামীলীগকে প্রাধান্য দিবে এমনটা নয়। সবাইকে সে সমানাধিকার দেয়। একই সাথে কারো সম্পর্কে বিরোধীতা পোষণা করে না, কারো বিরুদ্ধে কিছু বলে না, অন্য রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে কোন কার্যক্রম হাতে নেয় না। ভাবে ও আর আমি সমান। কেন পরষ্পরের বিরুদ্ধে দ্বন্দ্ব করবো ?
এবার বলুন, এ ধরনের একজন অসাম্প্রদায়িক কর্মী আওয়ামীলীগের কাছে কি হিসেবে বিবেচিত হবে? ভালো না খারাপ ? বিশ্বাসী না বিশ্বাসঘাতক ?? তাকে কি আদৌ আওয়ামীলীগ তার দলে রাখবে ??
কখনই না। বরং নিজ দলের জন্য একছত্র চিন্তা ও কাজ না করলে ঐ কর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। তাকে কোন প্রকার সুযোগ দেয়া হবে না। কারণ এ ধরনের একটি মাত্র লোক দলের জন্য ক্ষতিকারক। এ ধরনের লোকের জন্য দলের মধ্যে ফাটল দেখা দেবে। দলের মধ্যে একতা আসবে না। আগে এই অসাম্প্রদায়িক আওয়ামী সদস্যকে দল থেকে তাড়াতে হবে, তারপর দলের মধ্যে একতার জন্য কাজ করতে হবে।
অপরদিকে যে আওয়ামী সদস্য নিজ দলের জন্য একচ্ছত্র কাজ করবে এবং বিরোধী দলকে দমন করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবে তাকেই আওয়ামীলীগ গ্রহণ করবে। এবং বিরোধী দমনের ক্ষমতার উপর তার প্রমশন হবে।
অর্থাৎ রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক গ্রহণযোগ্য, অসাম্প্রদায়িক নয়। একটি দলে মাত্র ১ জন অসাম্প্রদায়িক সদস্য থাকলে পুরো দলটির একতাবদ্ধতা নষ্ট হবে, এতে কোন সন্দেহ নাই। অপরদিকে পুরো দলে চরমমাত্রার ১ জন উগ্র সাম্প্রদায়িক থাকলে পুরো দলের মনোবল বৃদ্ধি পাবে।
তারমানে একটি রাজনৈতিক দলকে সংঘবদ্ধ রাখতে হলে তার প্রত্যেক কর্মীকে সাম্প্রদায়িক হতে হয়। শুধু সাম্প্রদায়িক বললে ভুল হবে, হতে হয় চরম উগ্র সাম্প্রদায়িক। কারো মধ্যে যদি ন্যূনতম অন্য দলের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শিত হয় তবে তাকে দল বাচাতেই কিক করে বের করে দেয়া হয়।
এবার আপনি রাজনৈতিক দল থেকে ধর্মীয় অবস্থানে চলে আসুন। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যদি ১ জন অসাম্প্রদায়িক লোক থাকলে দলবদ্ধতা তৈরী না হয়, তবে ধর্মীয় ক্ষেত্রে অসাম্প্রদায়িকতা থাকলে কি করে একতাবদ্ধতা তৈরী হবে ? কখনই নয়। কারণ কথিত অসাম্প্রদায়িক লোকটি হবে নিজ ধর্মের ফাটলের জন্য দায়ী।
তাই যারা মুখে মুখে মুসলমানদের মধ্যে একতা একতা করে লাফান, দয়া করে নিজের থেকে কথিত ‘অসাম্প্রদায়িকতা’ ঝাটা মেরে তাড়িয়ে দেন। আপনি মুখে মুখে মুসলমানদের ‘একতা’র কথা বলবেন, আর নিজে অসাম্প্রদায়িক হয়ে বাধা হয়ে দাড়াবেন, সেটা হবে না।
------------------------------------------------------------------
--আমার ফেসবুক মূল পেইজ Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
No comments