এবার ভারত থেকে রোহিঙ্গা পুশ-ইন করানো হচ্ছে !
গত শনিবার বিএসএফ অর্ধশত রোহিঙ্গাকে বেনাপোলের পুটখালী সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন করার চেষ্টা করে। উল্লেখ্য, ভারতের প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা আছে, এদেরকে যদি তারা মায়ানমারকে ফলো করে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেয়া হয়, তখন কি হবে ? (ইতিমধ্যে সবাইকে পুশ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে !) (http://bit.ly/2zbvkC4,http://bit.ly/2yLMNER)
কথায় বলে ভাবিয়া করিও, কাজ করিয়া ভাবিও না ।
এখন বাংলাদেশে প্রবেশকরা ৫ লক্ষ রোহিঙ্গা নিয়ে আমরা কত কিছু ভাবছি।
কিন্তু আগেই যদি চিন্তা করা যেতো, ৫ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পুশ করতে পারে মায়ানমার।
তবে অবশ্যই আগাম অনেক ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব ছিলো।
অনেকেই বলেছেন, রোহিঙ্গাগণহত্যা যখন শুরু হলো,
তখন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যদি সীমান্তে কিছুটা সামরিক এক্টিভিটি দেখানো হতো,
যেমন- এয়্যারক্রাফট/হেলিকপ্টার উড়ানো, সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি, তবে হয়ত মায়ানমার ভয় পেতো। এতে রোহিঙ্গা পুশ বন্ধ তো অবশ্যই, অনেক রোহিঙ্গাকে প্রাণে বাচানোও সম্ভব ছিলো।
কিন্তু বাংলাদেশের পুরোপুরি বোবা অবস্থান দেখে, বার্মীজ সরকার মাথায় চড়ে বসে এবং বিনাবাধায় তারা রোহিঙ্গা গণহত্যা চালাতে থাকে এবং বাকিদের পুশ করতে থাকে। আর বাংলাদেশও ভ্যাবলার মত তাকিয়ে পুরো ঘটনার ভিকটিম হয়।
তবে বাংলাদেশ যে একেবারেই কিছু জানতো না, এটা কিন্তু সঠিক নয়। গত কয়েকদিন আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন-
রোহিঙ্গা ইস্যুতে এরকম কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে তা তারা আগেই জানতেন। গত জানুয়ারিতে তাই গোয়েন্দা তথ্য ও বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ কি করবে’ সেটা নিয়ে শেখ হাসিনার কাছে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়। সেই প্রতিবেদনের কিছু অংশ শেখ হাসিনা গ্রহন করে এবং কিছু অংশ নাকচ করে দেয়। সেই সময় শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশনা ছিলো- “বন্ধুত্ব বজায় রেখে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে এবং প্রতিবেশী দেশ হিসাবে আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। অবশ্যই সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।” (http://bit.ly/2yqR6En)
আমরা দেখেছি, গণহত্যা শুরু হওয়ার পরও মায়ানমারের সাথে ‘অপ্রয়োজনীয় আতপ চাল’ ক্রয় করে সেই একপেশে বন্ধুত্ব ঠিক রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।
কিন্তু আমার কথা হলো,
মায়ানমারের সাথে সেই সুসম্পর্ক বজায় রেখে লাভটা হলো কি ?
মায়ানমার তার অভ্যন্তরীণ সমস্যা বাংলাদেশে ঘাড়ে শুধু ফেলায়নি, উপরন্তু আন্তর্জাতিক সম্রাজ্যবাদীদের বাংলাদেশে প্রবেশের একটা উপলক্ষ্য তৈরী করে দিয়েছে। আজকে যদি রোহিঙ্গা ইস্যুকে কেন্দ্র করে আমেরিকা বাংলাদেশের প্রবেশের চেষ্টা চালায়, তবে আমরা কি বলবো না, এর জন্য শেখ হাসিনার ‘একপেশে বন্ধুভাবানপন্ন পররাষ্ট্রনীতি’ দায়ী। ৯ মাস আগে তার দেয়া ভুল সিদ্ধান্তের কারণে আজকে বাংলাদেশকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভিকটিমাইজ হতে হচ্ছে। তখন যদি তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে পারতেন, তবে আজকে বাংলাদেশকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হতো না।
ব্যক্তিগতভাবে আমি বঙ্গবন্ধুকে খুব শ্রদ্ধা করি। তিনি উপযুক্ত সময়ে অনেক উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দেশ স্বাধীনের পর পাকিস্তানের কারাগার থেকে মূ্ক্ত হয়ে তিনি যখন ভারতের পৌছান, তখন ইন্দিরা গান্ধীকে প্রথম দেখাতেই বলেছিলেন- “আমার দেশ থেকে আপনার সেনা কবে সরবে ?”
বিষয়টি লক্ষ্য করুন- মুক্তিযুদ্ধের সময় ইন্দিরা গান্ধী সারা বিশ্বের দরবারে দরবারে ঘুড়েছিলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য। বাংলাদেশের ১ কোটি শরনার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিলো, মু্ক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দিয়েছিলো। স্বাভাবিকভাবে বঙ্গবন্ধুর উচিত ছিলো প্রথমেই তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। পরে সুযোগ বুঝে সেনা সরানোর কথা বলা । কিন্তু তিনি সেটা করেননি। তিনি ভাবেননি ইন্দিরা মণক্ষুন্ন হবে, তার সাথে বন্ধুত্ব নষ্ট হবে। প্রথম সাক্ষাতের সময় আন্তর্জাতিক মিডিয়ার চোখকে তিনি কাজে লাগিয়েছেন, উপযুক্ত সময় উপযুক্ত কথা বলে বাংলাদেশের সারভৌমত্ব রক্ষা করেছেন। এটাই হচ্ছে পররাষ্ট্রনীতি।
তুমি আমার প্রতিবেশী এটা ঠিক, তোমার সাথে বন্ধুত্ব আছে, এটাও ঠিক। কিন্তু এরমানে এই নয় তোমার বন্ধুত্বের দোহাই দিয়ে তোমাকে আমার দেশের ক্ষতি করতে দেবো। খুব কষ্ট লাগে যখন দেখি ভারতীয় মন্ত্রী-এমপিরা বাংলাদেশে এসে বলে- “বাংলাদেশ ভারতের বেস্ট ফ্রেন্ড”, “বাংলাদেশের সাথে ভারতের বন্ধুত্ব সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছেছে”, কিন্তু ঐদিনই সীমান্তে কোন না কোন বাংলাদেশীকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। এই ধরনের বন্ধুত্ব কখনোই কাম্য হতে পারে না।
যাই হোক,
ভারত বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের পুশ ইন করতে চাইছে, এটা এখনও খবরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে। যে কোন সময় তা বাস্তবে রূপ নিতে পারে। ভারত থেকে রোহিঙ্গা প্রবেশ করলে বাংলাদেশের সীমান্ত কয়েকদিক থেকে এফেক্টেড হবে, যা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য মারাত্মক হুমকি।
কোন কিছু ঘটার আগেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। কিন্তু শেখ হাসিনার কথিত ‘বন্ধুভাবাপন্ন পররাষ্ট্রনীতি’ সেই বিপদ থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে পারবে বলে মনে হয় না।
------------------------------------------------------------------
--আমার ফেসবুক মূল পেইজ Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
No comments