ভারতে মুসলমানদের ‘৩ তালাক’ প্রথাকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে আইন তৈরী করেছে মোদি সরকার।
ভারতে মুসলমানদের ‘৩ তালাক’ প্রথাকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে আইন তৈরী করেছে মোদি সরকার। ৩ তালাক দিলে ৩ বছরের কারাদণ্ড হবে, ইতিমধ্যে আইনটি মন্ত্রীসভায় অনুমোদনও পেয়েছে। (http://bit.ly/2BCa6yw)
প্রত্যেক ধর্মে বিয়ে নিয়ে কিছু নিয়ম প্রথা আছে। খ্রিস্টানরা বিয়ে করে চার্চে গিয়ে, ফাদারের সামনে। হিন্দুরা ব্রাহ্মণ ডেকে, আগুনে ৭ পাক দিয়ে বিয়ে করে। মুসলমানরাও বিয়ে করে কাজীর সামনে, সাক্ষীর উপস্থিতিতে কবুল বলে।
বিয়ে যেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ঠিক তদ্রুপ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে তালাক।
বিয়ে মানে সম্পর্ক গড়া এবং তালাক মানে সম্পর্ক ভাঙ্গা ।
সামাজিক পরিস্থিতিতে দুটোই দরকার হতে পারে।
হিন্দু ধর্মে কিন্তু ‘তালাক’ নেই। হিন্দু ধর্মীয় নিয়ম অনুসারে, একবার বিয়ে হয়ে গেলে তা ভাঙ্গা সম্ভব হয়না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, অনেক সময়ই তালাকের প্রয়োজন হতে পারে। তখন কি হবে ?
হিন্দু ধর্মে ‘তালাক’ প্রথা না থাকায় অনেক স্বামী-স্ত্রী মনের মিল না হওয়ার পরও তারা সংসার করতে বাধ্য হয়, ফলে ইচ্ছা অনিচ্ছায় তারা পরকীয়ায় জড়িয়ে পরে। অনেক ক্ষেত্রে নির্যাতিত স্ত্রী স্বামীর হাত থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আত্মহত্যার আশ্রয় নেয়, কারণ তাদের ধর্মে তালাক প্রথা নেই !
সে হিসেবে ইসলাম ধর্ম অনেক যুগোপযোগী ধর্ম, যেখানে বিয়ে এবং তালাক উভয়টার কথাই চিন্তা করা হয়েছে। কিন্তু অসম্পূর্ণ ধর্মের অনুসারীরা সেটা বুঝতে অক্ষম এবং সেই অক্ষমতা থেকেই তারা মুসলমানদের ‘তিন তালাক’র বিরুদ্ধে লেগেছে।
হিন্দু ধর্মীয় দৃষ্টিতে ৩ তালাক কেন খারাপ ?
তালাক প্রথা তখন খারাপ হয়, যখন একজন তালাকপ্রাপ্তা নারীর পুনঃবিবাহ না হয়। হিন্দু ধর্ম অনুসারে বিধবা বিবাহের প্রচলন-ই নেই। তালাক তো নেই। কিন্তু ইসলাম ধর্ম মতে তালাকপ্রাপ্তা বা বিধবা বিবাহ আছে। ইসলাম ধর্মের শুরুর থেকে বিষয়টি খুবই এভেইলেবল। মুসলমানদের শেষ নবীর ১৩ জন স্ত্রীর মধ্যে ১২জনই ছিলেন তালাকপ্রাপ্তা কিংবা বিধবা। সে হিসেবে মুসলমানদের মধ্যে বিধবা কিংবা তালাকপ্রাপ্তাদের বিয়ে করতে সংকোচ তো নেই, বরং উৎসাহ আছে। আমি মুসলমানদের মধ্যে এমন পুরুষ চিনি, যারা আনম্যারেড হয়েও তালাকপ্রাপ্তা বা বিধবা নারীকে বিয়ে করেছেন।
তবে হ্যা ! মুসলমানদের মধ্যে যদি হিন্দু কালচার ঢুকে যায়, তখন সমস্যা হতে পারে। যেমন- বাংলাদেশে আজকাল মুসলমানদের মধ্যে অনেক হিন্দু কালচার প্রবেশ করছে (যেমন যৌতুক প্রথা)। ঠিক সেভাবে ভারতে মুসলিম কমিউনিটির মধ্যে যদি হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি প্রবেশ করে এবং সেখানে তালাকপ্রাপ্তা নারীর সমস্যা হয়, সেটা অন্য কথা।
সাধারণ ৩ তালাকের ক্ষেত্রে যে সমস্যাটার কথা বার বার বলা হয়, সেটা হলো তালাকপ্রাপ্তা নারীর ইনসিকিউরিটি। কিন্তু ইসলাম ধর্মে প্রত্যেকটা বিষয় খুব সুসংগঠিত। ইসলামীক সিস্টেমে কোন পুরুষ যদি কোন নারীকে তালাক দেয়, তবে দেনমোহর আদায় করতে হয়। সেক্ষেত্রে নারীর আর্থিক ইনসিকিউরিটির বিষয়টি মিটে যায়। আবার পরবর্তীতে বিয়ের সুযোগ থাকায় সামাজিক সিকিউরিটির বিষয়টিও হয়ে যায়।
আসলে ইসলাম ১৪০০ বছর আগে বিয়ে-তালাক নিযে যে সিস্টেম তৈরী করেছে, তা অবলোকন করলে আধুনিক সামাজিক বিজ্ঞানও অবাক হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে প্রাচীন কুসংস্কার-বিশ্বাসের ধারক-বাহক উগ্রহিন্দুত্ববাদী মোদি সরকার সেটার গুরুত্ব অনুধাবন করতে ব্যর্থ হবে, এটাই তো স্বাভাবিক।
========================================
-----------------------------------------------------------------------
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
-----------------------------------------------------------------------
-----------------------------------------------------------------------
No comments