পাঠ্যবইয়ে কি ঢুকলো আর কি বের হলো (২)
(প্রথম
পর্বের পর)
বর্তমানে যে পাঠ্যপুস্তক চলছে তার আগের পাঠ্যপুস্তক, অর্থাৎ ২০১০-২০১১ সালের পাঠ্যপুস্তকের সাথে মিলালে বর্তমান পাঠ্যপুস্তকে কি প্রবেশ করানো হয়েছে এবং কি বের করে দেওয়া হয়েছে সেটা নির্ণয় করা সম্ভব। আসুন বিষয়গুলো দেখি
ক্লাস-৬, বাংলা বই:
প্রথমে বাদ দেওয়া হয়েছে, ‘সততার পুরুষ্কার’ শিরোনামে ড মুহম্মদ শহীদু্ল্লাহ’র লেখা একটি ধর্মীয় ঘটনা। ঘটনাটি এরকম-
অনেক আগের যুগে তিনজন ব্যক্তি ছিলো। একজন অন্ধ, একজন কুষ্টরোগি এবং অন্যজন মাথায় টাক। সৃষ্টিকর্তা তিনজনকে ফেরেশতা পাঠিয়ে সুস্থ করে দিলেন এবং তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী অনেক ধন সম্পদ দিলেন। এইবার সৃষ্টিকর্তা তিনজনকে পরীক্ষা করার জন্য ভিক্ষুকের বেশে ফেরেশতা পাঠালেন। ভিক্ষুক তিনজনের থেকে সাহায্য চাইলো, কিন্তু যার আগে মাথায় টাক ছিলো এবং যে আগে কুষ্ঠরোগী ছিলো তারা সম্পদ দিতে অস্বীকার করলো এবং সৃষ্টিকর্তার দান অস্বীকার করলো । তবে যে আগে অন্ধ ছিলো সে ঠিকই সৃষ্টিকর্তার দান স্বীকার করলো। এতে দুই অকৃতজ্ঞ ব্যক্তি আগের অবস্থায় ফিরে গরীব হয়ে গেলো, কিন্তু কৃতজ্ঞ ব্যক্তিটির সম্পদ বৃদ্ধি করে দেওয়া হলো। এই শিক্ষনীয় ঘটনাটি বই থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রথমে বাদ দেওয়া হয়েছে, ‘সততার পুরুষ্কার’ শিরোনামে ড মুহম্মদ শহীদু্ল্লাহ’র লেখা একটি ধর্মীয় ঘটনা। ঘটনাটি এরকম-
অনেক আগের যুগে তিনজন ব্যক্তি ছিলো। একজন অন্ধ, একজন কুষ্টরোগি এবং অন্যজন মাথায় টাক। সৃষ্টিকর্তা তিনজনকে ফেরেশতা পাঠিয়ে সুস্থ করে দিলেন এবং তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী অনেক ধন সম্পদ দিলেন। এইবার সৃষ্টিকর্তা তিনজনকে পরীক্ষা করার জন্য ভিক্ষুকের বেশে ফেরেশতা পাঠালেন। ভিক্ষুক তিনজনের থেকে সাহায্য চাইলো, কিন্তু যার আগে মাথায় টাক ছিলো এবং যে আগে কুষ্ঠরোগী ছিলো তারা সম্পদ দিতে অস্বীকার করলো এবং সৃষ্টিকর্তার দান অস্বীকার করলো । তবে যে আগে অন্ধ ছিলো সে ঠিকই সৃষ্টিকর্তার দান স্বীকার করলো। এতে দুই অকৃতজ্ঞ ব্যক্তি আগের অবস্থায় ফিরে গরীব হয়ে গেলো, কিন্তু কৃতজ্ঞ ব্যক্তিটির সম্পদ বৃদ্ধি করে দেওয়া হলো। এই শিক্ষনীয় ঘটনাটি বই থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া বাদ দেওয়া হয়েছে, মিশর ভ্রমণের কাহিনী ‘নীলনদ আর পিরামিডের দেশ’। আরো বাদ দেওয়া হয়েছে মুসলিম কবি ‘মহাকবী আলাওল’কে নিয়ে লেখা একটি প্রবন্ধ। এর বদলে প্রবেশ করেছে সত্যেন সেনের লেখা ‘লাল গরুটা’ নামক ছোট গল্প। যেখানে গরুকে বলা হচ্ছে ‘মায়ের মত’। গরুকে জবাই করলে অধর্ম হয়। বলা হচ্ছে- মাকে যেমন বৃদ্ধ হলে ঘর থেকে বের করে দেওয়া যায় না, ঠিক তেমননি গরু বৃদ্ধ হলেও তাকে বিক্রি করা ঠিক নয়। এছাড়া ভ্রমণ কাহিনী হিসেবে ঢুকেছে ‘রাঁচি ভ্রমণ’ নামক হিন্দুদের তীর্থস্থান রাচি ভ্রমণ করার একটি কাহিনী।
তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, আগের বইগুলো
ছিলো গল্প-কবিতা ও ঐতিহাসিক তথ্যে ভরপুর। একজন ছাত্র-ছাত্রী সেটা পড়ে অব্যশই
জ্ঞানের দিক থেকে উপকৃত হতো। কিন্তু নতুন্ বইগুলো একেবারে তথ্যশূণ্য। বিশেষ করে
ঐতিহাসিক প্রবন্ধের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। আগে গল্প-কবিতা ছিলো মোট ২৯টি, আর নতুন বইয়ের মাত্র ১৮টি। অর্থাৎ ১১টি কম। আর যেগুলো আছে
তাতে বেশিরভাগ গল্প নির্ভর। ইতিহাস বা তথ্য সমৃদ্ধ কিছু নেই বললেই চলে।মানুষ এগিয়ে
যায়, কিন্তু এই বই দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের উল্টো পিছিয়ে দেওয়া
হয়েছে।
ক্লাস-৭, বাংলা বই:
প্রথমেই বাদ দেওয়া হয়েছে মুসলমানদের শেষ নবী হযরত মুহম্মদ (স) কে নিয়ে লেখা একটি জীবন চরিত। প্রবন্ধের নাম ‘মরু ভাষ্কর’। এরপর বাদ দেওয়া হয়েছে ‘ইনসানিয়াত’ নামক একটি সত্য ঘটনা। ঘটনাটিতে এক নামাজি ও ধর্মপরায়ন মুসলিম ব্যক্তির প্রশংসা করা হয়েছে। প্রকাশ করা হয়েছে মুসলমানদের মানবতা, সভ্যতা, চিন্তার উচ্চতা এবং সৌজন্যতাকে। এরপর বাদ দেওয়া হয়েছে ‘মানুষের সেবা’ নামক একটি কবিতাকে। কবিতাটি কবি আব্দুল কাদিরের লেখা। কবিতাটি মূলত মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ বা হাদিসের অংশ, যা কাব্যিক আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।কবিতাটি এরকম-
“হাশরের দিন বলিবেন খোদা - হে আদম সন্তান
তুমি মোরে সেবা করো নাই, যবে ছিনু রোগে অজ্ঞান
মানুষ বলিবে, তুমি প্রভু করতার ?
আমরা কেমন লইবো তোমার পরিচর্যার ভার ?
বলিবেন খোদা- দেখনি মানুষ কেদেছে রোগের ঘরে
তারি শুশ্রূষা করিলে তুমি যে সেথায় পাইতে মোরে।”
এ সকল ধর্মীয় ভাবাপন্ন গদ্য-পদ্য বাদ দিয়ে প্রবেশ করানো হয়েছে উপজাতিদের সংস্কৃতির বর্ণনা করে লেখা ‘বাংলাদেশের ক্ষুদ্র জাতিসত্তা’ নামক একটি প্রবন্ধ। এছাড়া কবিতাংশে ঢুকেছে ‘বাংলাদেশের হৃদয়’ নামক একটি কবিতা, যা মূলত হিন্দুদের দেবী দূর্গার প্রশংসা। কবিতায় দেবী দূর্গার প্রশংসা করে বলা হচ্ছে-
“ডান হাতে তোর খড়গ জ্বলে, বাঁ হাত করে শঙ্কাহরণ,
দুই নয়নে স্নেহের হাসি, ললাটনেত্র আগুনবরণ।
ওগো মা, তোমার কী মুরতি (মূর্তি) আজি দেখি রে!
তোমার দুয়ার আজি খুলে গেছে সোনার মন্দিরে ”
প্রথমেই বাদ দেওয়া হয়েছে মুসলমানদের শেষ নবী হযরত মুহম্মদ (স) কে নিয়ে লেখা একটি জীবন চরিত। প্রবন্ধের নাম ‘মরু ভাষ্কর’। এরপর বাদ দেওয়া হয়েছে ‘ইনসানিয়াত’ নামক একটি সত্য ঘটনা। ঘটনাটিতে এক নামাজি ও ধর্মপরায়ন মুসলিম ব্যক্তির প্রশংসা করা হয়েছে। প্রকাশ করা হয়েছে মুসলমানদের মানবতা, সভ্যতা, চিন্তার উচ্চতা এবং সৌজন্যতাকে। এরপর বাদ দেওয়া হয়েছে ‘মানুষের সেবা’ নামক একটি কবিতাকে। কবিতাটি কবি আব্দুল কাদিরের লেখা। কবিতাটি মূলত মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ বা হাদিসের অংশ, যা কাব্যিক আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।কবিতাটি এরকম-
“হাশরের দিন বলিবেন খোদা - হে আদম সন্তান
তুমি মোরে সেবা করো নাই, যবে ছিনু রোগে অজ্ঞান
মানুষ বলিবে, তুমি প্রভু করতার ?
আমরা কেমন লইবো তোমার পরিচর্যার ভার ?
বলিবেন খোদা- দেখনি মানুষ কেদেছে রোগের ঘরে
তারি শুশ্রূষা করিলে তুমি যে সেথায় পাইতে মোরে।”
এ সকল ধর্মীয় ভাবাপন্ন গদ্য-পদ্য বাদ দিয়ে প্রবেশ করানো হয়েছে উপজাতিদের সংস্কৃতির বর্ণনা করে লেখা ‘বাংলাদেশের ক্ষুদ্র জাতিসত্তা’ নামক একটি প্রবন্ধ। এছাড়া কবিতাংশে ঢুকেছে ‘বাংলাদেশের হৃদয়’ নামক একটি কবিতা, যা মূলত হিন্দুদের দেবী দূর্গার প্রশংসা। কবিতায় দেবী দূর্গার প্রশংসা করে বলা হচ্ছে-
“ডান হাতে তোর খড়গ জ্বলে, বাঁ হাত করে শঙ্কাহরণ,
দুই নয়নে স্নেহের হাসি, ললাটনেত্র আগুনবরণ।
ওগো মা, তোমার কী মুরতি (মূর্তি) আজি দেখি রে!
তোমার দুয়ার আজি খুলে গেছে সোনার মন্দিরে ”
উল্লেখ্য ক্লাস-৭ এ্ এসে একই ঘটনা দেখা গেছে। আগের সিলেবাসে
ক্লাস-৭ এ মোট গদ্য-পদ্য ছিলো ৩২টি, যার অধিকাংশ
ছিলো তথ্য ও ইতিহাস নির্ভর । কিন্তু নতুন সিলেবাসে দেওয়া হয়েছে মাত্র ২০টি অর্থাৎ
১২টি কম। যার অধিকাংশই তথ্যসমৃদ্ধ ও ইতিহাস নির্ভর নয়।
তাই সোজা ভাষায় বললে, এই সিলেবাস
দিয়ে একদিকে ছাত্র-ছাত্রীদের যেমন ধর্ম থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে তাদের ইতিহাস ও তথ্যশূণ্য করে পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে
। ফলে এ পাঠ্যপুস্তক পড়ে বাংলাদেশ যে একটি মেরুদণ্ডহীন নতুন প্রজন্ম পেতে চলেছে
তাতে কোন সন্দেহ নাই। (চলবে)

No comments