সুপার মাইনোরিটির কবলে বাংলাদেশ : বাঁচার উপায় কি ?
সম্প্রতি বাংলাদেশের সংবিধানে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ বহাল থাকবে, এই মর্মে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। যেসব্ নাস্তিকেরা ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ না রাখার জন্য রিট করেছিলো, তাদের মূল কথাই ছিলো এদেশে সংখ্যালঘু তথা হিন্দু জনগোষ্ঠীর জন্য ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ রাখা যাবে না। এমনকি এই মামলায় ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ এর বিরুদ্ধে উকিলও ছিলো হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা সুব্রত চৌধুরী।
এখন বিষয়টি হলো, বাংলাদেশে মুসলমানরা জনসংখ্যার প্রায় ৯৫ শতাংশ তথা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ার পরও বাংলাদেশের মুসলমানদের চাওয়া-পাওয়াকে কোনই গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না মাত্র ২-৩ শতাংশ হিন্দু জনগোষ্ঠীর জন্য। কারণ হিন্দুরা এদেশে হয়ে উঠেছে ‘সুপার মাইনোরিটি’ বা ‘অতি-সংখ্যালঘু’।
পাশ্চাত্যে এই ‘সুপার-মাইনোরিটি’ বা অতি-সংখ্যালঘু হলো ইহুদীরা, বিশেষ করে আমেরিকায়। সেখানে সবাইকে ইহুদীদের ভয়ে তটস্থ হয়ে চলতে হয়, কারণ ইহুদীদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে মুখ ফসকে কিছু বলে ফেললেই সর্বনাশ। উদাহরণস্বরূপ হলিউডের একজন অভিনেতা মেল গিবসনের কথা বলা যায়। মেল গিবসন হলিউডের সবচেয়ে পরিচিত অভিনেতাদের একজন, অনেকটা বলিউডের শাহরুখ খানের মতো। কিন্তু ২০০৬ সালের পর থেকে তাকে আর কোনো সিনেমায় নেয়া হচ্ছে না। কারণটি হলো, ঐ বছর মেল গিবসনকে রাস্তায় মদ খেয়ে গাড়ি চালানোর সময়ে গ্রেফতার করা হয়। তাকে গ্রেফতার করেছিলো এক ইহুদী পুলিশ। মদ্যপ অবস্থায় মেল গিবসন যখন জানতে পারে যে, তাকে এক ইহুদী গ্রেফতার করেছে, তখন সে মদের ঘোরে বলে উঠে যে, “ফাকিং জিউস। তোমরাই বিশ্বের সমস্ত যুদ্ধবিগ্রহের জন্য দায়ী।” (http://goo.gl/9BrQWi)
মেল গিবসনের কথাটা মিথ্যা নয়, কারণ আমেরিকা যতো যুদ্ধ করেছে, পেছন থেকে কলকাঠি নেড়েছে ‘জিউস’ বা ইহুদীরা। কিন্তু এই সামান্য একটি ঘটনাই তার পুরো ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দেয়। এরপর থেকে মেল গিবসনকে হলিউডের কোন প্রথমসারির সিনেমা পরিচালক কিংবা প্রযোজক তাদের সিনেমায় অভিনয় করতে ডাকেনি। বছরের পর বছর মেল গিবসনকে বেকার থাকতে হয়। গত ২০১৪ সালে এ নিয়ে আমেরিকার এক সাংবাদিক মন্তব্য করে “হলিউড, তুমি তোমার ব্ল্যাকলিস্ট থেকে মেল গিবসনের নামটি তুলে নাও।” (http://goo.gl/WzwIMU)
চিন্তা করুন পাঠকে, ঘটনা কতোটা ভয়াবহ! হলিউডের প্রথমসারির একজন অভিনেতা এক অপরিচিত ইহুদী পুলিশকে কি বললো না বললো, তাতেই তার নাম ‘ব্ল্যাকলিস্টে’ ঢুকে গেলো। এরকম ঘটনা কি বাংলাদেশেও ঘটেনি? কয়েকদিন আগে বহিষ্কৃত ক্রিকেটার রকিবুল ইসলামের কথা মনে আছে পাঠকের?
এই রকিবুল ইসলাম ছিলেন বঙ্গবন্ধুর পুত্র শেখ কামালের বন্ধু। পাকিস্তান ক্রিকেট টীমের একমাত্র বাঙালি প্লেয়ার হিসেবে ব্যাটে ‘জয়বাংলা’ স্টীকার লাগিয়ে মাঠে নেমে তিনি তখন আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। এই কিংবদন্তী ক্রিকেটার রকিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে একাত্তর টিভির এক হিন্দু সাংবাদিক টস জালিয়াতির অভিযোগ এনেছিলো।
তখন রকিবুল ইসলাম বলতে বাধ্য হন যে, এই হিন্দুরা ভারতীয় হাইকমিশনের সাথে যোগাযোগ রাখে। সবজায়গা থেকে এরা সুবিধা নেয়। তখন হিন্দুরা পরিকল্পনা করে রকিবুল ইসলামকে উত্তেজিত করে এবং অনেক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে তার বক্তব্য গোপন ক্যামেরায় রেকর্ড করিয়ে নেয়। সেই রেকর্ড একাত্তর টিভিতে প্রচারিত হলে রকিবুল ইসলামকে সমস্ত প্রকারের ক্রিকেট থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। (http://goo.gl/wvMNp3)
অর্থাৎ পশ্চিমের ‘সুপার মাইনোরিটি’ ইহুদী, আর বাংলাদেশের ‘সুপার মাইনোরিটি’ হলো হিন্দু সম্প্রদায়, যাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললেই তার ক্যারিয়ারের খবর হয়ে যায়। এমনকি খোদ প্রধানমন্ত্রীর বেয়াই খন্দকার মোশাররফও হেনস্থা হয়েছে তার হিন্দু এপিএসের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বলার কারণে। বাংলাদেশের হিন্দুরা বর্তমানে চাইলে এদেশের যে কোন মুসলমানকে হেনস্থা করতে পারে, তা সে যতোই ক্ষমতাধর কিংবা সম্পদশালী হোক না কেন। কারণ ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ নামে একটি বুলি বারবার আওড়ানো হয়। আপনি তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলবেন, আপনি হয়ে যাবেন ‘সংখ্যালঘু নির্যাতনকারী’। পশ্চিমের অবস্থাও ঠিক সেরকম, তারা বারবার হিটলারের কথিত ইহুদী নির্যাতন কে এতোটা ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রচার করে যে, সেখানে ইহুদীদের বিরুদ্ধে কিছু বললেই সে হয়ে যায় ‘এন্টি সেমিটিক’।
অর্থাৎ এখানে হিন্দু আর ইহুদীদের মূল অস্ত্র হলো ‘ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল’, যাকে বাংলাদেশে বলা হয় সংখ্যালঘু নির্যাতন, আর আমেরিকায় বলা হয় এন্টি সেমিটিজম। মূলত এই ‘ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল’ করেই এরা আজ ‘সুপার মাইনোরিটি’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এরা।
সত্যি বলতে- এই ‘সুপার মাইনোরিটি’কে ঠেকানো কোন একক ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব নয়, তা সে রকিবুল কিংবা খন্দকার মোশাররফের মতো যতোই প্রভাবশালী হোক না কেন। তবে যদি গণমানুষ একত্রিত হয়, তখনই এটা করা সম্ভব। গত ২৮শে মার্চ ২০১৬তে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’কে টিকিয়ে রাখতে পেরেছিলো, কারণ তারা হিন্দুদের ‘সুপার মাইনোরিটি’ ইমেজের বিরুদ্ধে একত্রিত হতে পেরেছিলো। আসলে এই সুপার মাইনোরিটির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ইসলামী নেতাকর্মীদের অনেক কিছু করার আছে। কারণ সুপার মাইনোরিটির মূল তত্ত্বই হলো, মাইনোরিটির বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না। অর্থাৎ ‘সুপার মাইনোরিটি’ অবস্থাকে ভেঙে দেয়ার একমাত্র উপায় হলো হিন্দুদের বিরুদ্ধে বেশি বেশি করে বলা। ওয়াজ মাহফিল থেকে শুরু করে, খুতবা, সভা সম্মেলনে বেশি বেশি হিন্দুদের মুখোশ উন্মোচন করা।মনে রাখতে হবে, এটি করতে হবে এদেশের মুসলমানদের স্বার্থেই। কারণ যতোদিন না হিন্দুদের ‘সুপার মাইনোরিটি’ ইমেজকে মুসলমানরা না ভাঙতে পারবে, ততোদিন পর্যন্ত কিন্তু তাদের ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ থাকবে অরক্ষিত। দেখবেন- একাত্তর টিভির টকশোতে এখনও বারবার বলা হচ্ছে, এদেশের সামান্য গুটিকয়েক হিন্দুরা ‘কষ্ট পাবে’ দেখে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ যেন না রাখা হয়। অর্থাৎ হিন্দুরা ‘কষ্ট পাবে’, হিন্দুরা ‘নির্যাতিত হবে’ এই কথাগুলো যতোদিন পর্যন্ত না ডিনাই করা হবে, ততোদিন মুসলমানদের মুক্তি নেই। মুসলমান নেতাদের প্রকাশ্যে বলতে হবে যে, হিন্দুরা বগলের তলে ইট রাখে। হিন্দুরা ডুব দেয় বাংলাদেশে, উঠে গিয়ে ভারতে। হিন্দুদের ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ এর মায়াকান্নায় না ভুলে এখনই এই ‘সুপার মাইনোরিটি’ নামক দানবকে ঠেকাতে হবে, তা না হলে দানবটি অদূর ভবিষ্যতে নিশ্চিত গ্রাস করে ফেলবে পুরো বাংলাদেশকে, তখন কিন্তু কিছুই করার থাকবে না।
সবাইকে ধন্যবাদ।
No comments