Header Ads

ad728
  • Breaking News

    কথিত ‘মা’ দিবস নিয়ে আমার বক্তব্য

    আজকে কথিত মা দিবস পালন করছে অনেকে। কথিত বললাম এ কারণে যে, মা দিবস শুধু মাত্র ২৪ ঘণ্টার জন্য নয়, বরং বছরের ৩৬৫ দিনের (৩৬৫x২৪)= ৮৭৬০ ঘণ্টা = ৩১৫৩৬০০০ সেকেন্ডের জন্য হওয়া উচিত। যে জাতির মায়েরা ছোট বেলায় সন্তানকে সরকারী কেয়ারে পাঠিয়ে দেয় এবং যে সন্তানরা বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে বছরে ১ দিনের জন্য শুভেচ্ছা কার্ড পাঠায় তাদের জন্য বাবা-মা দিবস প্রয়োজন, কিন্তু আমাদের জন্য ১ দিনের মা দিবসের কোন প্রয়োজন নেই।
    যাই হোক, কথিত মা দিবস উপলক্ষে একটি লেখায় আমার চোখ আটকে গেলো। লেখাটিতে সেলিনা হোসেন নামক এক নারীবাদীর বক্তব্য আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। আপনারা দেখুন সেই নারীবাদী কি বলছে-
    “ (চাকুরীক্ষেত্রে) এই টানাপোড়েনের মাঝে মায়েদের থেমে থাকলে চলবে না মন্তব্য করেন কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। তিনি বলেন,সন্তানের জন্য মায়ের ক্যারিয়ার সেক্রিফাইস করা উচিত না। তিনি বলেন, সেক্রিফাইস করা উচিত না এ জন্য যে, সন্তানকেও দেখতে হবে এবং নিজের ক্যারিয়ারও রাখতে হবে। আমাদের দেশে এখনও গৃহকর্মী পাওয়া যায়,দরকার হলে ওদের সব চাহিদা পূরণ করে,বেশি বেতন দিয়ে তাদেরকে নিজের মানুষের মতো করে রাখতে হবে বাসায়,যেন শিশুটিকে সে দেখে রাখতে পারে।আর কোনও মা’ই আমাদের দেশে চাকরি করে ব্যাংকে টাকা জমান না। সংসার-সন্তানের জন্যই সেটা ব্যয় হয়।” (http://goo.gl/qJNWdp,http://archive.is/SSUsM)
    “সন্তানের জন্য মায়ের ক্যারিয়ার সেক্রিফাইস করা উচিত না”---- কত বড় ননসেন্স মহিলা হলে এ ধরনের কথা বলতে পারে। আসলে নারীবাদীরা হচ্ছে লেজকাটা শিয়ালের মত। খোঁজ নিলে দেখা যাবে এরা তাদের সন্তানদের পশুর মত লালন পালন করেছে, এখন অন্য মহিলাদেরও সেই কুবুদ্ধি দিচ্ছে।
    ‘মা’ নামক মহান শব্দটার সৃষ্টি ‘সন্তান’ নামক জোড়া শব্দের কারণে। মা তার সন্তানের জন্য জন্য নিজের সব কিছু সেক্রিফাইস করেছেন এবং করছেন- এটা চিরন্তন সত্য। আর ঐ গাধাটা কুবুদ্ধি দিচ্ছে কিভাবে দেখেন। ক্যারিয়ার আবার কি ? মা শব্দটার ক্যারিয়ারাই তো সন্তানকে ঘিরে । যদিও লেজকাটা নারীবাদীরা বিষয়টিকে সব সময় অবজ্ঞা করতে চায়। সন্তান লালন পালন করাকে তারা অবজ্ঞা অর্থে প্রচার করে। প্রচার করে- “সন্তান লালন পালন করাই একটি নারীর সব ? সন্তান লালনের মধ্যে নারী জীবন বেধে ফেলা উচিত না”।
    আসলে এ গোষ্ঠীটা হচ্ছে ঐ লেজকাটা পশ্চিমাদের দালাল। পশ্চিমাদের কাছে মা-সন্তানদের বাধন এতটাই করুণ যে, তাদের জন্য ১ দিন মা দিবস চালু করতে হয়। এই গোষ্ঠীটিটি চায় আমাদের মায়েরাও তাদের মত হয়ে যাক। মায়েরা ঘরে সন্তান ফেলে বের হয়ে যাক, আর পুরো জাতির নৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ুক।
    কারণ একজন মা-ই হচ্ছে তার সন্তানের কারিগর। আর ঐ সন্তানই হচ্ছে জাতির ভবিষ্যত। সে দিক থেকে একজন মা হচ্ছে পুরো জাতির কারিগর। এর থেকে মহান আর কি হতে পারে। চাকুরী করলেই কি সব হয়ে গেলো ? বাবা তো সারদিন চাকুরী করে, অনেক টাকা কামাই করে, কিন্তু সে তো মায়ের সমান মর্যাদা পেতে পারে না। মা সন্তানকে বড় না হওয়ার পর্যন্ত আগলে রাখেন। অনেকে বলে- “কাজের মহিলা তো আছে।” আমি এটা মানি না। কাজের মহিলার কাজ কাজের মহিলার মত। আপনি আপনার সন্তানকে ভালোবাসতে পারেননি, আপনার কাজের মহিলা কতটুকু ভালবাসবে ? সে তো পশু পালনের মত আপনার সন্তান পালন করবে, এর থেকে বেশি নয়। আপনাকে সাহায্য করার জন্য কাজের মহিলা থাকতে পারে, কিন্তু মায়ের বিকল্প কখন কাজের মহিলা হতে পারে না।
    আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ে, ছোটবেলায় আম্মা যখন বাথরুমে ঢুকতো, তথন ঐ সময়টুকু আমি বাইরে দাড়িয়ে কান্না করতাম। আর এখন সকাল বেলা ঘুম ভাঙ্গে পাশের ফ্ল্যাটের বাচ্চার কান্নায়। সিড়িতে গিয়ে দেখি, কাজের মেয়ের কোলে ৪ বছরের ছেলেকে রেখে মা যাচ্ছে অফিসে, আর বাচ্চা জুড়ে দিয়েছে কান্না। মা দুই-তিন বার লিফটের দারজা আটকে দেয়, আবার দরজা খুলে বের হয়ে আসে ছেলের মায়ায়। বাচ্চাকে কাজের মেয়ের কোল থেকে নিয়ে আদর করে, চুমু খায়। বলে- “বাবা রাতের বেলায় তোমার জন্য খেলনা নিয়ে আসবো”। বাচ্চা কান্না থামাতে চায় না, কারণ তার তো খেলনার চাহিদা নেই, তার মায়ের আদরের চাহিদা। মায়ের আদর তো আর খেলনা দিয়ে পূরণ হয় না।
    আমার এক বন্ধু ছিলো। তার মা স্কুলে চাকুরী করতো। সে আমাকে বলতো- ছোট বেলায় তার মা যখন ঘর থেকে বের হতো, তখন তার জন্য একটা শাড়ি দিয়ে যেতো। আমার বন্ধুটি পুরোটা সময় মায়ের শাড়ি জড়িয়ে শুয়ে থাকতো, আর কান্না করতো।
    আমি মায়েদের বলবো, আপনারা দয়া করে এই নারীবাদী ভণ্ড মহিলাদের কথা শুনবেন না। আপনার স্বামী যদি সামর্থবান হয়, চাকুরী করে তবে আপনার বাইরে চাকুরী করার কোন দরকার নাই্। দয়া করে আপনার সন্তানটিকে আপনার স্নেহ বঞ্চিত করবেন না। সামান্য কটা টাকা দিয়ে কিছুই আসবে-যাবে না। যদি বেশি আর্থিক প্রয়োজন হয় তবে বাসার ভেতরে কোন ইনকামের ব্যবস্থা করবেন। সন্তান আপনার সাথেই থাকবে। তবুও দয়া করে কাজের মহিলার কাছে সন্তান দিয়ে বাইরে চাকুরী করবেন না। বলা হয় মায়ের দুধ না খেলে নাকি বাচ্চার ব্রেন গঠিত হয় না। তাহলে মায়ের আদর-স্নেহ যত্ন না পেলে একটা বাচ্চা কিভাবে নৈতিক ভিত্তি নিয়ে ‘মানুষ’ হতে পারে ? আমার তা বুঝে আসে না।
    মনে রাখবেন, মা জাতিকে সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি করেছেন সন্তানদের দেখাশোনা করার জন্য। একটা শিশু সন্তানকে দেখাশোনা করাই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কাজ। এর থেকে পৃথিবীর আর কোন বড় কাজ আর নেই। ক্যারিয়ার-ফ্যারিয়ার সব হচ্ছে ধোকাবাজি। আপনি পৃথিবীর বড় কোন কোম্পানির এক্সিকিউটিভ হতে পারেন, ১০ লাখ টাকা বেতন পেতে পারেন, কিন্তু সেটা একজন মায়ের সন্তান লালন-পালনের সামনে কিছুই না। কারণ মায়ের স্নেহ লক্ষ-কোটি টাকা দিয়ে কেনা যায় না।
    এ কারণে আমার মা আমার কাছে শ্রেষ্ঠ, আমি আমার মায়ের কাছে সর্বকালের জন্য চির কৃতজ্ঞ।

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728