আবারো গৌড়গোবিন্দের কবলে সিলেট
রাজা গৌড়গোবিন্দের নাম শুনেনি সিলেটে এমন লোক খুজে পাওয়া দুষ্কর। এক সময় এ অত্যাচারি রাজা সিলেট (তৎকালীন নাম শ্রীহট্ট) শাসন করতো। তার অত্যাচারে মানুষ থাকতো তটস্থ।
গৌড়গোবিন্দের শাসনের সময় সিলেটে গরু জবাই নিষিদ্ধ ছিলো। ইতিহাস বলে- সে সময় সিলেটে বুরহানুদ্দিন নামক এক মুসলিম বাস করতেন। তিনি নিজ পুত্রের জন্ম উপলক্ষে লুকিয়ে লুকিয়ে একটি গরু জবাই করেছিলেন। কিন্তু সেই গরুর জবাইকৃত মাংসের একটি টুকরা এক কাক মুখে করে নিয়ে রাজা গৌড়গোবিন্দের দরবারে ফেলে আসে।
গরুর মাংশের টুকরা দেখে মারাত্মক ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে রাজা গৌড়গোবিন্দ, সে বোরহানুদ্দিনকে খুজে বের করে। গৌড়গোবিন্দ বোরহানুদ্দিনকে আটক করে তার দুই হাত কেটে ফেলে। এরপর তার নিষ্পাপ শিশুপুত্রকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
এক সময় বোরহানুদ্দিন ও তার নিষ্পাপ পুত্রের উপর এ জঘন্য অত্যাচারের কাহিনী মুসলিম ধর্মপ্রচারক শাহজালালের কানে পৌছায়। ধর্মপ্রচারক শাহজালাল তার ৩৬০ জন সঙ্গী নিয়ে সিলেটে প্রবেশ করে। উল্লেখ্য রাজা গৌড়গোবিন্দ যাদু বিদ্যায় খুব পারদর্শী ছিলো, সে তার পুরো ক্ষমতা ধর্মপ্রচারক শাহজালালের উপর প্রয়োগ করে, কিন্তু তা বিফল হয়। এক পর্যায়ে ধর্ম প্রচারক শাহজালাল সফল হয় এবং গৌড়গৌবিন্দ ভয় পেয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। স্বাধীন হয় সিলেট।
আজ থেকে প্রায় ৭শ’ বছর আগে অত্যাচারি গৌড়গোবি্ন্দের কবল থেকে মুক্ত হয়ে ধন্য হয়েছিলো সিলেটবাসী। কিন্তু নতুন করে যেন ফের গৌড়গোবিন্দের কবল পড়তে যাচ্ছে সিলেট। সম্প্রতি সিলেটের তারাপুরে মসজিদ, ৩০০০ পরিবারের বাড়িঘর, মেডিকেল কলেজ, স্কুল, ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় ৪৪৪ একর (১৩৩২ বিঘা) এলাকা উচ্ছেদ করে ১টি মাত্র মন্দির প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলছে। ঠিক যেন গৌড়গোবিন্দের অত্যাচারি শাসন নতুন করে চালু হয়েছে।
হে সিলেটবাসী, ধর্মপ্রচারক শাহজালালের মত তোমরাও নব্য গৌড়গোবিন্দদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করো। নয়ত নব্য গৌড়গোবিন্দদের ক্ষপ্পরে তোমাদেরও বোরহানুদ্দিন ও তার পুত্রের ভাগ্য বরণ করতে হতে পারে।
সিলেটের ইতিহাস পড়তে-
http://www.sylhet.gov.bd/node/71032/জেলার-ঐতিহ্য
No comments