ফেসবুকে স্পন্সর দিয়ে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের পক্ষে প্রচারণা
‘Black Diamond - ব্ল্যাক ডায়মন্ড’ নামক একটি পেইজ থেকে পয়সা দিয়ে স্পন্সর করে একটা ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে, যেখানে বলা হচ্ছে- খন্দকার আব্দুস সালেক নামক এক ব্যক্তির বক্তব্য শোনা যাচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে এ ব্যক্তি নাকি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রকল্প কর্মকর্তা এবং একজন বিশেষজ্ঞ। (https://goo.gl/DsuWKu)
কিন্তু আব্দুস সালেক নামক ব্যক্তিটির কথা শুনে মনে হলো না সে বিশেষজ্ঞ, আমার কাছে মনে হলো সে বিশেষ ভাবে অজ্ঞ । কারণ সে বেকুব ও গণ্ডমূর্খের মত একগাদা মুখস্ত কথা বলে যাচ্ছে।
১) বিশেষ ভাবে অজ্ঞ আব্দুস সালেক তার বক্তব্যে দাবি করেছে-- “আমাদের প্রমাণিত গ্যাস সম্পদ শেষ হয়ে আসছে।”
অথচ অনেক আগেই খবর এসেছে বাংলাদেশে ২০০ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের মজুদ আছে, যা এশিয়ার মধ্যে সর্ববৃহৎ, যার লোভে বিদেশী শক্তিগুলো কুকুরের মত বাংলাদেশের পেছনে পেছনে ঘুরছে। কিন্তু সরকার সেটা না তুলে দাবি করছে দেশের গ্যাস সম্পদ শেষ। (http://goo.gl/Ff7pI2)
২) সে আরো দাবি করেছে- “দুনিয়াব্যাপী কয়লাই কিন্ত preferred fuel for power generation”।
অথচ এটা মিথ্যা। দুনিয়াব্যাপী preferred fuel for power generation হচ্ছে গ্যাস। কারণ কয়লা দ্বারা বিদ্যুৎ উদপাদন করতে গেলে মারাত্মক পরিবেশ দূষণ হয়। এছাড়া এখন নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে ঝুকছে সবাই।
৩) এরপর সে বলছে- “যেহেতু আমাদের নিজস্ব কয়লা সম্পদ উত্তোলনে আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষা পর্যায়ে আছি, আমাদের কয়লা ইম্পোর্ট করে আনতে হবে।”
ও এই কথা। এ কথা আগে বললেই হতো- আমরা ভারত থেকে ক্ষতিকারক কয়লা আমদানি করতে চাই। আমাদের কমিশনের খুব দরকার। এ কথা না বলে এত ঘুরিয়ে পেচিয়ে বলার দরকার কি ? আমার জানা মতে- বাংলাদেশে ৭টি কয়লা খনি আবিষ্কৃত হয়েছে, যেখানে অনেক উন্নত মানের কয়লা পাওয়া যায়। কিন্তু সেগুলো থেকে উত্তোলন করলে ভারত কয়লা আমদানি বন্ধ হয়ে যাবে, এই আশঙ্কায় সেগুলো থেকে উত্তোলন করা হয় না।
৪) এরপর বেকুবটা বলছে- “একটা বিশাল বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট এর জন্য প্রচুর জায়গা প্রয়োজন। এমন জায়গা প্রয়োজন যেখানে আমাদের ঘনবসতি পূর্ণ দেশে কম মানুষকে এফেক্ট করা হয়। সে দিক দিয়ে বিবেচনা করে রামপালের কেন্দ্রটা ঠিক আছে।”
আরে গাধা- রামপালে জনবসতি নেই সেটা ঠিক, কিন্তু সেখানে যে গাছপালা আছে, সেখান থেকে অক্সিজেন উৎপন্ন হয় তা দেশের ১৬ কোটি মানুষের জন্য প্রয়োজন। তাই ঐটুকু যায়গা নষ্ট হলে তার এফেক্ট পুরো ১৬ কোটি মানুষের উপর পড়বে।
৫) গাধাটা বলছে- “ আমাদের চিন্তা করতে হবে যাতে আমাদের কৃষি জমি এফেক্টেড না হয়। সেই বিবেচনার দিক থেকেও রাম পালের এই জায়গাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
অথচ- রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অধিকৃত এলাকার (১৮৩৪ একর) ৯৫ শতাংশই কৃষি জমি ও চারপাশের ১০ কিমি ব্যাসার্ধের এলাকার ৭৫ শতাংশ কৃষি জমি যেখানে চিংড়ি অথবা ধান সহ অন্যান্য ফসল উৎপাদন করা হয়। হিসেব বলছে- বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১০ ব্যাসার্ধের মধ্যে বছরে ৬২,৩৫৩ টন এবং প্রকল্প এলাকায় ১২৮৫ টন ধান উৎপাদিত হয় । ধান ছাড়াও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১০ ব্যাসার্ধের মধ্যে বছরে ১,৪০,৪৬১ টন অন্যান্য শস্য উৎপাদিত হয়।
অর্থাৎ একটা গাধাকে বিশেষজ্ঞ বানিয়ে জনগণের মন ভুলাতে চাইছে সরকার।
আচ্ছা ! গাধার কথায় কি জনগণের মন ভুলবে ??
No comments