আগামীতে কি সিরিয়ার মত বাংলাদেশের মুসলমানরাও ছোট্ট নৌকায় করে সমুদ্র পাড়ি দেবে ??
সিরিয়ার তেল সম্পদের দিকে চোখ পড়েছিলো সব বিশ্ব মোড়লদের। সেই ললুপ দৃষ্টির কারণে সিরিয়া আজ অস্থিতিশীল। বর্তমানে সিরিয়াতে বিরাজ করছে কঠিন পরিস্থিতি, মুসলমানরা হয়ে পড়েছে অসহায়। চতুর্মুখী হায়েনার হামলার মুখে শুধু প্রাণ বাঁচাতে তারা বাধ্য হচ্ছে পানিতে নামতে। ছোট্ট একটা নৌকায় করে হাজার হাজার সিরিয়ান মুসলমান নিরাপদ আশ্রয় খুজছে। এই খোঁজার মাঝে সমুদ্রে কত হাজার সিরীয়’র সলিল সমাধি হয়েছে তার কোন হিসেব নেই। আবার যারা ইউরোপে আশ্রয় পাচ্ছে, তারাও যে খুব সুখে আছে তাও নয়। ইউরোপের দেশগুলোর সীমান্ত এলাকা শরনার্থী ক্যাম্প বানিয়ে কুকুর বিড়ালের মত থাকতে হচ্ছে তাদের। ঠাণ্ডা-গরম, রোগ-শোক মানিয়ে থাকতে হচ্ছে এক সময় সম্পদশালী সিরিয়ানদের । বিষয়টা কতটুকু কষ্টের তা সেই শরনার্থী শিবিরে অবস্থান না করলে বোঝা সম্ভব নয়।
কথায় বলে- সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ ফোঁড়। যার অর্থ- সময় থাকতে যে কাজটি অল্প করলেই প্রয়োজন পূরণ করে, অসময়ে তার থেকে হাজার গুন কাজ করেও কোন ফায়দা পাওয়া যায় না। সিরিয়াবাসী তাদের দেশ সম্পর্কে বৈদেশিক ষড়যন্ত্রগুলো যদি আগেই অনুধাবন করতো এবং সে অনুসারে সরব হয়ে ব্যবস্থা নিতো, তবে হয়ত এখন এত করূণ পরিণতি তাদের বরণ করতে হতো না। কিন্তু সেটা না করে অযথা মোজ-মাস্তি করার শাস্তি এখন সিরীয়বাসীকে ভোগ করতে হচ্ছে।
এই সমস্যা কিন্তু সিরিয়ানদের নয়। বর্তমানে যে যে দেশের মুসলমানরা নির্যাতিত হচ্ছে সবার একই সমস্যা। মায়ানমার, ফিলিস্তিন, ইরাক, কাশ্মীর ও ভারতের মুসলমানরা যদি শুরুতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারতো, তবে বর্তমানের কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন কাউকেই হতে হতো না। কিন্তু ইতিহাস বলছে- এসব ক্ষেত্রে মুসলমানরা কখনই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি এবং গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অমুসলিমদের ভালোবাসায় মত্ত হয়ে তাদের উপর নির্ভরতা প্রকাশ করেছে, যার ফল এখন তারা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে।
বিষয়গুলো যদিও বাংলাদেশের মানুষ আলোচনা করছে না, কিন্তু এগুলো নিয়ে আলোচনা করা এখন বাংলাদেশের মুসলমানদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশকে নিয়ে এখন বিশ্বমোড়লদের প্রকাশ্যে টানাটানি শুরু হয়ে গেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে ভারতের প্রভাব অবসম্ভব বৃদ্ধি, ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ সদস্যদের বাংলাদেশ নিয়ে নানান কার্যক্রম, বাংলাদেশে বিভিন্ন সেক্টরে হিন্দুদের প্রাধাণ্য সৃষ্টি, জন কেরীর সফর, চীনের রাষ্ট্রপতির আগমণ ও ইনভেস্ট, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের আগমণ, রাশিয়ানদের বাংলাদেশে দিকে ঝোক দেখানোর আগ্রহ, ইত্যাদি দেখে বাংলাদেশের মানুষের অনুধাবন করার দরকার- তাদের সুখের দিন বোধ হয় শেষ হলো। বিশ্ব শকুনদের দৃষ্টি বাংলাদেশের দিকে কড়াভাবে নিবন্ধ হয়েছে। সবার ইচ্ছা খুবলে খাবার, কিন্তু কে কতটুকু ভাগ নেবে সেটা নিয়ে এখন দরকষাকষি চলছে। এ দরকষাকষি শেষ হলেও হামলে পড়া শুরু হবে, তখন বাংলাদেশ হবে সিরিয়ার মত কোন বিধ্বস্ত রাষ্ট্র, বঙ্গপোসাগর হবে ভূমধ্যসাগরের মত সাগর, যেখানে ছোট্ট একটা নৌকায় বাংলাদেশীরা ভেসে বেড়াবে সামান্য একটু নিরাপদ আশ্রয়ের আশায়।
তাই বলছি, সময় থাকতে এখনও সচেতন হোন।
No comments