২০১৭ সালের পাঠ্যপুস্তকের পরিবর্তন সমূহ.....
লেখালেখি করে কি কাজ হয় ?? অবশ্যই হয়। এ বছর শুরু থেকেই বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তক পরিবর্তনের জন্য ফেসবুকে লেখালেখি করা হয়েছে। এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে দেশজুড়ে আন্দোলনও করেছে মুসলমানরা। যার কারণে এ বছর পাঠ্যপুস্তকে বেশকিছু পরিবর্তণ করেছে সরকার। যদিও সেই পরিবর্তন যথেষ্ট নয়। আমি চাইবো এ বিষয়গুলো নিয়ে আরো বেশি লেখালেখি হোক, এবং সারা দেশের মুসলমানরা সেটা নিয়ে আন্দোলন করুক, যেন বাংলাদেশ সরকার সংখ্যাগরিষ্ট মুসলিম দেশে ১০০% ইসলাম ভিত্তিক সিলেবাস প্রণয়ন করে। আসুন দেখি নেই, ২০১৭ সালে বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকের বাংলা বইয়ে কি কি পরিবর্তন সাধিত হয়েছে-
১) প্রকাশ করা হয়েছিলো (http://bit.ly/2icw9Wd)২০১৩ সালের পাঠ্যপুস্তকে ক্লাস-২ এ মুসলমানদের শেষ নবীর সংশ্লিষ্ট ‘সবাই মিলে করি কাজ’ পাঠ্য, ক্লাস-৩ ‘খলিফা হযরত আবু বকর’ শিরোনামে পাঠ্য এবং ক্লাস-৪ এ খলিফা হযরত ওমর- এর সংক্ষিপ্ত জীবনী বাদ দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু ২০১৭ সালের নতুন সিলেবাসে তিনটি পাঠ্যই ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
২) ক্লাস-৫ এর বাংলা বইয়ের বহুদিন ধরে নাস্তিক হুমায়ুন আযাদের ‘বই’ কবিতা নিয়ে বিতর্ক চলছিলো। কবিতাটিতে মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থকে কৌশলে ব্যঙ্গ করা হয়। আরো বিতর্ক চলছিলো শাহবাগী ভণ্ড মুসা ইব্রাহীমের ভুয়া এভারেস্ট জয়ের গল্প নিয়ে (http://bit.ly/2iyDn7K)। ২০১৭ সালে নতুন পাঠ্যপুস্তকে ২টি পাঠ্যই বাদ দেয়া হয়েছে এবং তার বদলে কবি কাদের নেওয়াজের লেখা বাদশাহ আলমগীরের মহত্ত্ব প্রকাশ করে ‘শিক্ষা গুরুর মর্যাদা’ নামক কবিতাটি ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এছাড়া ফিরিয়ে আনা হয়েছে মুসলমানদের শেষ নবী সংশ্লিষ্ট ‘বিদায় হজ’ এবং মুসলিম যোদ্ধা মীর তীতুমীরের জীবন কাহিনী।
৩) ক্লাস-৬ এও এসেছে পরিবর্তন। ক্লাস-৬ এর বাংলা বইয়ে গোমাতাবাদীদের লেখা ‘লাল গরুটা’ নামক গল্প নিয়ে বহু সমালোচনা হয়েছে (http://bit.ly/2imcIrs)। ২০১৭ সালে গল্পটি বাদ দেওয়া হয়েছে। এর বদলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ধর্মীয় শিক্ষনীয় ঘটনা ‘সততার পুরুষ্কার’ নামক ঘটনাটি। এছাড়া ভারতের হিন্দুদের তীর্থস্থানের বর্ণনা দেওয়া ‘রাচী ভ্রমণ’ নিয়ে সমালোচনা ওঠায় (http://bit.ly/2hJoWJU), সেটিও বাদ দেয়া হয়েছে। তার বদলে মুসলিম দেশ ভ্রমণ কাহিনী- ‘নীলনদ আর পিরামিডের দেশ’ পাঠ্যটি ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
৪) ক্লাস-৭ এ দেবী দূর্গার প্রশংসা করে রবীণ্দ্রনাথের ‘বাংলাদেশের হৃদয়’ নামক কবিতাটি নিয়ে ব্যাপক লেখালেখি হয় (http://bit.ly/2i9SMYZ)। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে নতুন পাঠ্যপুস্তকে তা বাদ দেওয়া হয়েছে। যদিও তার বদলে রবীন্দ্রনাথের আরেকটি কবিতা ‘নতুন দেশ’ প্রবেশ করা হয়েছে। পাশাপাশি ক্লাস-৭ এর বইয়ে মুসলমানদের শেষ নবীর সংক্ষিপ্ত জীবনী ‘মরু ভাষ্কর’ প্রবন্ধটি ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
৫) ক্লাস-৮ এর বইয়ে দুইটি মুসলিম লেখকের কবিতা ‘প্রার্থনা’ ও ‘বাবরের মহত্ত্ব’ বাদ দেওয়ায় ব্যাপক সমালোচনা হয়।(http://bit.ly/2i2h4pS) ২০১৭ সালে নতুন সিলেবাসে দুটো কবিতাই ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
৬) ক্লাস-৯-১০ এর বাংলা বইয়ে বেশ কিছু পরিবর্তন আছে-
ক) রাধা-কৃষ্ণের কীর্তণ ‘সুখের লাগিয়া’ নিয়ে প্রতিবাদ হওয়ায় (http://bit.ly/2hjebgr), ২০১৭ সালে তা বাদ দেওয়া হয়েছে। তার বদলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে শাহ মুহম্মদ সগীরের লেখা ইসলামী ভাবাপন্ন ‘বন্দনা’ কবিতাটি।
খ) ভারতচন্দ্রের লেখা দেবী অন্নপূর্ণার কাছে প্রাথর্ণা করে লেখা ‘আমার সন্তান’ কবিতাটি নিয়ে ব্যাপক লেখালেখি হয় (http://bit.ly/2i9SYHK)। তার পরিপ্রেক্ষিতে কবিতাটি বাদ দেওয়া হয়েছে। এর বদলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে মহাকবি আলাউয়ের লেখা ‘হামদ’ নামক কবিতাটি।
গ) বিকৃতরূচী লালন শাহের লেখা ‘সময় গেলে সাধন হবে হবে না’ কবিতাটির গোমর ফাঁস করায় (http://bit.ly/2dW0eWk), সেটিও বাদ দেয়া হয়েছে। তার বদলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে কবি আব্দুল হাকীমের লেখা বঙ্গবানী কবিতাটি।
ঘ) রঙ্গলাল বন্দোপাধ্যায়ের লেখা চরম ইসলাম বিদ্বেষী কবিতা ‘স্বাধীনতা’ নিয়ে লেখালেখির পর (http://bit.ly/2izbVCv), সেটিও বাদ দেয়া হয়েছে। তার বদলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে কবি গোলাম মোস্তফার লেখা ‘জীবন বিনিময়’ কবিতাটি।
ঙ) অখণ্ড ভারত তত্ত্বকে প্রমোট করে সুনীলের লেখা ‘সাকোটা দুলছে’ কবিতাটি নিয়ে লেখালেখির পর (http://bit.ly/2hsPm6z), সেটাও বাদ দেয়া হয়। এর বদলে কাজী নজরুল ইসলামের লেখা ‘উমর ফারুক’ কবিতাটি ২০১৭ সালের ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
চ) ভারতীয় ভ্রমণকাহিনী ‘পালামৌ’ নিয়ে সমালোচনা ওঠায় (http://bit.ly/2hJqmEd) সেটিও বাদ দেওয়া হয়েছে। যদিও এর বদলে ইসলাম বিদ্বেষীদের নেতা বঙ্গিমের লেখা ‘ফুলের বিবাহ’ নামক গল্প প্রবেশ করানো হয়েছে।
এই সব পরিবর্তণ নিয়ে ইসলামপন্থীদের ব্যাপক উল্লোসিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ ষড়যন্ত্রকারীদের নগ্ন ষড়যন্ত্র ধরিয়ে দেয়ায় তারা সাময়িক ভোল পাল্টেছে মাত্র, কিন্তু পুরো ষড়যন্ত্র থেকে এখনও সরে আসেনি। তাই সিলেবাস নিয়ে ইসলামপন্থীদের লেখালেখি ও রাজপথের আন্দোলন থামিয়ে রাখা চলবে না, বরং জোরদার করতে হবে। যতটুকু আন্দোলন ও লেখালেখি হয়েছে তার মাধ্যমে যদি ২০% পরিবর্তণ হয়, তবে ১০০% পরিবর্তনের জন্য আরো ৫ গুন গতিতে লেখালেখি ও আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে, ২০১৭ সালের পাঠ্যপুস্তক পরিবর্তন আমাদের সেই শিক্ষাই দেয়। সবাইকে ধন্যবাদ।
------------------------------------------------------
--আমার নতুন পেইজ Noyon Chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
No comments