অমঙ্গলশোভাযাত্রা কি বাঙালী সংষ্কৃতির অন্তর্ভূক্ত হতে পারে ?
প্রশ্ন- ১ সংস্কৃতি কাকে বলে ?
প্রশ্ন-২ কোন একটি আচার-প্রথাকে কোন জাতির সংষ্কৃতি হিসেবে দাবি করতে কতগুলো শর্ত পূরণ হওয়া প্রয়োজন ?
প্রশ্ন-৩ অমঙ্গলশোভাযাত্রা কি বাঙালী সংষ্কৃতির অন্তর্ভূক্ত হতে পারে ???
প্রথমেই আসছে সংস্কৃতি কাকে বলে ? সংস্কৃতি বলতে বোঝায়, একটা জাতির দীর্ঘদিনের জীবনাচরণের ভেতর দিয়ে যে মানবিক মূল্যবোধ সুন্দরের পথে কল্যাণের পথে এগিয়ে চলে তাই সংস্কৃতি। বিভিন্ন আচার-প্রথা, নিয়ম কানুন, বিশ্বাস সব কিছুই সংস্কৃতির অন্তর্ভূক্ত। একটি জাতির সংস্কৃতি বলতে সামগ্রিকভাবে অবশ্যই তার অস্তিত্ব ঐ জাতির সত্ত্বার মধ্যে থাকতে হবে। একটি সামান্য খণ্ডকালীন বা ছোটখাট কোন সংঘবদ্ধ কমিউনিটির আচার-প্রথাকে পুরো জাতির সংস্কৃতি হিসেবে চালিয়ে দেয়া মোটেও ঠিক হবে না।
আপনি যদি সংস্কৃতি ও বাঙালী সংস্কৃতির সংজ্ঞাটুকু লক্ষ্য করেন তবে নিশ্চিত হবেন অমঙ্গলশোভাযাত্রা কখনই বাঙালী সংস্কৃতির অংশ নয়। হ্যা এটা চারুকলা নামক একটি সংস্থার বাতসরিক অনুষ্ঠান হতে পারে, কিন্তু এটার সাথে বাঙালী জাতির সংষ্কৃতির কোন সম্পর্ক নাই, পুরো বাঙালী জাতি এটা পালন করে না, কিংবা পালন করতে হবে, এমন বিশ্বাসও কখন লালন করে না।
অমঙ্গলশোভাযাত্রার ইতিহাসে বলা হয়, এটা শুরু হয় ১৯৮৯ সালে (নামকরণ হয় ১৯৯৬ সালে), এবং সেটা চারুকলায় হয়। এখন স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠতে পারে- বছরের প্রথম দিন শোভাযাত্রা করতে হবে, এই তত্ত্ব চারুকলা পেলো কোথা থেকে ?? গ্রাম বাংলায় কি পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে শোভাযাত্রা বের হতো কখন ?? উত্তর না। গ্রাম-বাংলায় কখনই পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে কোন শোভাযাত্রা বের হতো না। তাহলে এই তত্ত্ব চারুকলা পেলো কোথা থেকে ??
চারুকলা যদি প্রমাণ না করতে পারে, বছরের প্রথম দিন এই শোভাযাত্রা সংস্কৃতি গ্রাম-বাংলা থেকে এসেছে, তবে প্রমাণিত হয় এটা বাঙলার সংস্কৃতি নয়, শুধুমাত্র চারুকলার সংস্কৃতি। আবার চারুকলা যদি বলে- না, নতুন বর্ষ উপলক্ষে এভাবে মিছিল করার সংস্কৃতি অবশ্যই চালু আছে“। তবে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন জাগে, এটা কোন সংষ্কৃতিতে সেটা চালু আছে ? সেটা কোন দেশের সংস্কৃতি ??
অনলাইন-ইন্টারনেট ঘেটে যেটা আমি পেলাম- বছরের প্রথম দিন এভাবে শোভাযাত্রা বের করার কালচার আছে ভারতের মারাঠি হিন্দুদের মধ্যে এবং তাদের অনুষ্ঠানটির নাম Gudi Padwa (https://en.wikipedia.org/wiki/Gudi_Padwa)
এছাড়া ভারতীয় অন্যান্য জাতি সত্ত্বার মধ্যে বছরের প্রথম দিন শোভাযাত্রা বের করা নিয়ম, কিন্তু প্রত্যেকটি হচ্ছে কোন না কোন ধর্মীয় (হিন্দু, শিখ, জৈন, পার্সী) অনুষ্ঠান। তবে মুখ-মুখোশ নিয়ে শোভাযাত্রা করার কালচার ভারতীয়দের মধ্যে নেই, আছে চীনাদের মধ্যে। China New year লিখে গুগল ইমেজে সার্চ দিলে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হবে। কিন্তু পার্থক্যটা হচ্ছে- চীনা নিউ ইয়ার উপলক্ষে যে মুখ-মুখোশগুলো ব্যবহার করা সেগুলো আবার আমাদের সাথে মিলে না, তারা বেশিরভাগ ড্রাগনের মুখোশ ব্যবহার করে, যা চীনা সংস্কৃতির অংশ।
এছাড়া ভারতীয় অন্যান্য জাতি সত্ত্বার মধ্যে বছরের প্রথম দিন শোভাযাত্রা বের করা নিয়ম, কিন্তু প্রত্যেকটি হচ্ছে কোন না কোন ধর্মীয় (হিন্দু, শিখ, জৈন, পার্সী) অনুষ্ঠান। তবে মুখ-মুখোশ নিয়ে শোভাযাত্রা করার কালচার ভারতীয়দের মধ্যে নেই, আছে চীনাদের মধ্যে। China New year লিখে গুগল ইমেজে সার্চ দিলে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হবে। কিন্তু পার্থক্যটা হচ্ছে- চীনা নিউ ইয়ার উপলক্ষে যে মুখ-মুখোশগুলো ব্যবহার করা সেগুলো আবার আমাদের সাথে মিলে না, তারা বেশিরভাগ ড্রাগনের মুখোশ ব্যবহার করে, যা চীনা সংস্কৃতির অংশ।
এখন হয়ত বলতে পারেন, বাংলাদেশের যে মুখোশগুলো ব্যবহৃত হয়, সেগুলো বাঙালী সংস্কৃতির অংশ হতে পারে। কিন্তু এখানেও যথেষ্ট সমস্যা আছে। একটি উদহারণ দিলে পরিস্কার হবে। যেমন- আমাদের গ্রাম-বাংলায় একটা কুসংস্কার চালু আছে-`পেচা নাকি কুলক্ষণ বহন করে। ‘ সে হিসেবে এটা গ্রাম-বাংলার কুসংস্কারাচ্ছন্ন সংষ্কৃতির বিশ্বাস বলতে পারেন। কিন্তু অমঙ্গলশোভাযাত্রায় যেটা হচ্ছে, সেটা কিন্তু গ্রাম বাংলার সংস্কৃতির পুরোপুরি উল্টো।
অমঙ্গলশোভাযাত্রায় অসংখ্য পেচার মূর্তি ও মুখোশ ব্যবহার করে বলা হচ্ছে সেটা নাকি সমৃদ্ধি ও সুলক্ষণ বহন করে (http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article772232.bdnews)। কিন্তু এ ধরনের বিশ্বাস কেন ? এর উত্তর হচ্ছে- হিন্দুদের মধ্যে একটা বিশ্বাস আছে- কথিত দেবী লক্ষীর বাহন পেচা এবং সেই পেচার নাকি সমৃদ্ধ ও মঙ্গল বহন করে।
পুরো আলোচনা থেকে একটি বিষয় নিশ্চিত, অমঙ্গলশোভাযাত্রা মোটেও বাঙালী সংস্কৃতির কোন অংশ নায়, বরং পুরোটাই চীনা, ভারতীয় আঞ্চলিক ও হিন্দু সংস্কৃতির গোজামিল, যার খিচুরি পাকিয়েছে চারুকলার নামক একটি সংগঠন, যার সাথে পুরো বাংলাদেশের বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নাই। এবং সেটাই এখন পুরো বাংলাদেশের উপর জোর করে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
পুরো আলোচনা থেকে একটি বিষয় নিশ্চিত, অমঙ্গলশোভাযাত্রা মোটেও বাঙালী সংস্কৃতির কোন অংশ নায়, বরং পুরোটাই চীনা, ভারতীয় আঞ্চলিক ও হিন্দু সংস্কৃতির গোজামিল, যার খিচুরি পাকিয়েছে চারুকলার নামক একটি সংগঠন, যার সাথে পুরো বাংলাদেশের বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নাই। এবং সেটাই এখন পুরো বাংলাদেশের উপর জোর করে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বলাবাহুল্য সংস্কৃতি যখন জোর করে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়, তখন তাও কিন্তু স্বৈরাচারি বৈশিষ্ট্য, এর ফলাফল মোটেও ভালো হবে না, বরং বদহজম হয়ে পুরো সিস্টেম ক্র্যাশ করবে। সত্যিই বলতে, সেটাই এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
---------------------------------------------------
--আমার ফেসবুক পেইজ Noyon Chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
--আমার ব্যাকআপ পেইজ- Noyon Chatterjee 6 (https://www.facebook.com/202647270140320/)
No comments