মায়ানমার ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডুয়েল রোল প্লে
আজ থেকে প্রায় ১৪ মাস আগে আমি ৪ পর্বের আর্টিকেল লিখেছিলাম, যার শিরোনাম ছিলো “বাংলাদেশ কেন বিশ্বের বুকে হঠাৎ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে ?”। এই আর্টিকেলের ২য় পর্বে আমি আমেরিকার পিভট টু এশিয়া (Pivot to Asia) নামক এক পলিসির কথা উল্লেখ করেছিলাম । সেখানে আমি বলেছিলাম, ২০১২ সালে আমেরিকা এই পলিসি গ্রহণ করে । যে পলিসির আন্ডারেই বাংলাদেশ, বঙ্গোপসাগরসহ দক্ষিন এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোতে আমেরিকা তার প্রভাব বৃদ্ধি করছে। (http://bit.ly/2e6NLkw)।
এছাড়া ঐ আর্টিকেলের ৩য় পর্বে বলেছিলাম শুধু আমেরিকা সাহায্য করার জন্য আমেরিকার চামচা ভারতের মোদি সরকার গ্রহণ করেছে “Act East Policy” (http://bit.ly/2e3JOeR)
আজ থেকে ১৪ মাস আগে লেখা ঐ দুটো আর্টিকেল পড়লে বুঝতে পারবেন, বর্তমানে মায়ানমারে যে খেলা চলছে তা আমেরিকার পিভট টু এশিয়া (Pivot to Asia) এবং ভারতের মোদি সরকারের Act East Policy ‘র সমন্বিত রূপ।
মূলতঃ ইহুদীবাদীরা রুশপন্থী কংগ্রেসকে হটিয়ে মার্কিনপন্থী মোদি সরকারকে ভারতে বসিয়েছেই এ অঞ্চলে আমেরিকার প্রভাব বৃদ্ধি করার জন্য। এবং প্রত্যেকক্ষেত্রে ভারত হবে আমেরিকার হাত।
মায়ানমার ইস্যুতে ‘ট্র্যাম্প- আমি কিছু জানি না’ টাইপের কথা বললেও পুরো হিসেব কষলে একটি বিষয় স্পষ্ট- মায়ানমার ইস্যুতে আমেরিকা একটি ডুয়েল রোল প্লে করছে। তার এক হাত গিয়েছে ভারতের কাছে। যেখানে রোহিঙ্গা মুসলিম নিধনে সায় দেয়া হচ্ছে। রোহিঙ্গাকে কেন্দ্র করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে হিন্দু-বৌদ্ধ জোট করা হচ্ছে। অপরদিকে আমেরিকা ইউএন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং মার্কিনপন্থী মিডিয়া দিয়ে রোহিঙ্গাদের পক্ষে বলে যাচ্ছে, জিয়িয়ে রাখছে রোহিঙ্গাদের পক্ষের অবস্থানটি। পুরো ঘটনার ক্যালকুলেশন করলে খুব নিকট ভবিষ্যতে যে ঘটনাগুলো ঘটতে পারে-
১) মায়ানমার-বাংলাদেশ সমাঝোতার কথা বলে আমেরিকা ঢুকতে পারে। তবে এক্ষেত্রে আমেরিকা না আসলে তার প্যানেলসঙ্গী ব্রিটেন অথবা জাপানকে পাঠানো হতে পারে। দুইপক্ষকে সমাঝোতার কথা বলে মাঝখানে আমেরিকা ঢুকতে চেষ্টা করবে।
২) স্বাধীন রোহিঙ্গাল্যান্ড আমিও চাই। কিন্তু সেটা ভয়ের কারণ হবে যদি তার নিয়ন্ত্রণ আমেরিকার হাতে চলে যায়। জাতিসংঘ, হিউম্যানরাইটস ওয়াচসহ কথিত সাহায্য সংস্থাগুলোর নাম দিয়ে রোহিঙ্গাদের মধ্যে মার্কিনীকরণ হতে পারে। এতে তারা মার্কিনপন্থী হলে স্বাধীন রোহিঙ্গাল্যান্ডের জন্য সশস্ত্র সংগ্রাম করতে পারে। সেক্ষেত্রে রাখাইন স্বাধীন হলেও তা হবে আমেরিকার নতুন ঘাটি।
৩) মুসলমানদের বিরুদ্ধে হিন্দু-বৌদ্ধরা সমন্বিত দাঙ্গা তৈরী করতে পারে। ফলাফল- বাংলাদেশের ৩ পার্বত্য জেলা, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম ফেনী নদী পর্যন্ত পৃথক হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে। রাষ্ট্রটি শুধু হিন্দু ও বৌদ্ধদের জন্য হবে।
৪) দুই আর তিন নম্বর পয়েন্ট না হয়ে, পুরো প্রাচীন আরাকান (রাখাইন থেকে শুরু করে চট্টগ্রামের ফেনী নদী পর্যন্ত) বৌদ্ধ ও হিন্দুদের নিয়ন্ত্রণে যেতে পারে।
(১), (২), (৩) বা (৪) যেটাই ঘটুক, প্রত্যেকটাই করবে আমেরিকা, হয় ডান হাত দিয়ে, নয়ত বাম হাত দিয়ে।
সমাধান কি ?
ক) রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রন বাংলাদেশের হাতে রাখা।
খ) জাতিসংঘ আশা বাদ দিয়ে মুসলিম দেশগুলোকে ডাকা। মুসলিমদেশের নিরাপত্তাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে পাঠানো। প্রয়োজনে মুসলিম দেশগুলো সামরিকবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের সামরিক ট্রেনিং দেয়া, সেই সামরিক বাহিনীর আন্ডারেই তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা।
গ) বাংলাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ ও উপজাতিদের যাবতীয় কার্যক্রম গোয়েন্দা নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনা।
ঘ) চীনকে বুঝানো- এ অঞ্চল চীনের হাতছাড়া হয়ে মার্কিন নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে। সিআইএ সাম্প্রদায়িক বিভেদ উস্কে পুরো ঘটনার নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে। আর ব্যবসায়ী চীন শুধু ব্যবসার কথা চিন্তা করে মায়ানমারে রোহিঙ্গা বিরোধীতায় একগুয়েমি সাপোর্ট দিয়েছে, যা আমেরিকার কাছে তার মারাত্মক কৌশলগত পরাজয়।
ঙ) মুসলমানদের চীন-আমেরিকা-রাশিয়া-ব্রিটেন
ভুলে গেলে চলবে না- এর আগের টার্মে তৎকালীন সুপার পাওয়ার সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং আপকামিং সুপার পাওয়ার আমেরিকার দ্বন্দ্বে বলী হয়েছিলো আফগানিস্তান। দেশটি এখন ধ্বংসস্তুপ। অনুরুপ বর্তমান সুপার পাওয়ার আমেরিকা ও আপকামিং সুপার পা্ওয়ার চীনের দ্বন্দ্বের কেন্দ্রস্থল কিন্তু বঙ্গপোসাগর। সেই দ্বন্দ্বেও বাংলাদেশও যে আফগানিস্তানের মত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হবে না, সেটা কিন্তু বলা যায় না।
------------------------------------------------------------------
--আমার ফেসবুক মূল পেইজ Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
No comments