Header Ads

ad728
  • Breaking News

    অং সাং সুকি কি মায়ানমারের মিখাইল গর্বাচেভ ?


    মিখাইল গর্বাচেভ শান্তিতে নোবেল পায় ১৯৯০ সালে, আর অং সাং সুকি শান্তিতে নোবেল পায় তার পরের বছর, মানে ১৯৯১ সালে। পশ্চিমারা প্রায় একই সময় একই কারণে দুটো দেশের দুই নেতাকে নোবেল দিতে পারে (এটা শুধু আমার অনুমান মাত্র)।

    মিখাইল গর্বাচেভ ছিলো সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বশেষ রাষ্ট্রপতি, সে সবার কাছে পরিচিত বিশ্বাসঘাতক হিসেবে। তার অর্ধ শতাব্দী কমিউনিস্ট জিন্দেগীতে কেউ বুঝতেই পারেনি সে একজন সিআইএ’র এজেন্ট। বহু ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে তাকে আসতে হয়েছে প্রেসিডেন্ট পদ পর্যন্ত। কিন্তু চূড়ান্ত লক্ষে এসে সে আসল কাজটি করে দেয়, মানে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে দেয়। পতন ঘটে সোভিয়েত ইউনিয়ন নামক বিশাল সুপার পাওয়ারের। কিছুদিন আগে অবশ্য গর্বাচেভ নিজ মুখেই স্বীকার করেছে- সে তার জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে এ কাজটি করেছে। (http://bit.ly/2hkoLGL)

    আমার কাছেও অং সাং সুকিকে সেই মিখাইল গর্বাচেভ’র অনুরুপ মনে হয়। মিখাইল গর্বাচেভ যেভাবে সোভিয়েত ইউনিয়নকে ভেঙ্গে দিয়েছে, ঠিক একইভাবে অং সাং সুকিও মিয়ানমারকে ভেঙ্গে দিবে, বিশেষ করে রাখাইন চলে যাবে অন্য কারো হাতে।

    মিখাইল গর্বাচেভ যে সিআইএ পন্থী ছিলো এটা অনেক গোপন বিষয় হতে পারে, কিন্তু অং সাং সুকি যে সিআইএপন্থী এটাতে বহু পুরাতন ও প্রকাশ্য সত্য।

    ১) অং সাং সুকি সারা জীবন পশ্চিমে (অক্সফোর্ড) লেখাপড়া করেছে।
    ২) সুকীর স্বামী মাইকেল অ্যারিস পশ্চিমা নাগরিক। অক্সফোর্ডের সেন্ট হিউ কলেজ এর শিক্ষক।
    ৩) সুকি নিজেও ৩ বছর জাতিসংঘের হয়ে কাজ করে।
    ৪) মায়ানমারের তৎকালীন সোভিয়েত ব্লকের সামরিক সরকারকে সরানোর জন্য ১৯৮৮ সালে সুকিকে পশ্চিম থেকে দেশে ফেরায় সিআইএ। এবং তাকে দিয়ে কথিত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করানো হয়।
    ৫) পশ্চিমা মিডিয়ার ব্যাপক প্রচার এবং বাবা পরিচিতিতে পরিচিত হয়ে ১৯৯০ সালে নির্বাচনে সুকি ৮১% ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়। কিন্তু সামরিক সরকার তাকে গৃহবন্দি করে।
    ৬) ১৯৯১ সালে সিআইএ তাকে নোবেল দেয়। এবং আন্তর্জাকিভাবে গণতান্ত্রিক নেত্রী হিসেবে হাইলাইট করে।
    ৭) কিন্তু এন্টি আমেরিকান সামরিক জান্তা সরকার সেই নির্বাচন বাতিল করে সুকিকে দীর্ঘসময় (১৯৮৯-২০১০) গৃহবন্দি করে রাখে।
    ৮) ২০০৭ সালে সিআইএ মায়ানমারে বৌদ্ধদের দিয়ে স্যাফরন মুভমেন্ট করে। উদ্দেশ্য ছিলো জান্তা সরকারের পতন ঘটিয়ে সুকিকে বের করে নিয়ে আসা।
    ৯) ১৯৯৪ সাল থেকে মায়ানমারে অং সাং সুকিকে বের করে নিয়ে আসার জন্য কাজ করছে মার্কিন ইহুদী জর্জ সরোসের সংগঠন ‘ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন’।
    ১০) মায়ানমারের জন্য সিআইএ’র মূল টোপ হচ্ছে ‘মায়ানমারের পূর্নঃগঠন’ তত্ত্ব। ২০১০ সাল থেকে মোটামুটি ভুল করতে শুরু করে চীনপন্থী জান্তা সরকার। ২০১০ এর নভেম্বরে জান্তা সরকার মুক্ত করে দেয় মার্কিনপন্থী অং সাং সুকিকে।
    ১১) চীনপন্থী সামরিক জান্তা থান শোয়ে ২০১১ এর মার্চে এসে রাষ্ট্রপতি করে থেইন সেইনকে। সেইন সেইন ছিলো কট্টন আমেরিকাপন্থী।
    ১২) থেইন সেইন এসেই পুরো মার্কিনতন্ত্র জারি করে। চীনের সাথে চূক্তি বাতিল করে, আমেরিকার সাথে সম্পর্ক দৃঢ় করে।
    ১৩) থেইন সেইন নতুন করে নির্বাচন দেয় এবং সেখানেও সিআইএপন্থী সুকি নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে।
    ১৪) ২০১১ এর শেষে হিলারী ক্লিনটন মায়ানমারে আসে।
    ১৫ ২০১২ সালে আমেরিকা তার পিভট টু এশিয়া নীতি প্রকাশ করে। (যেই নীতির বাস্তবায়ন হচ্ছে এখন)
    ১৬) ২০১২ সালেই ওবামাও মায়ানমার সফরে আসে। এবং থেইন সেইন ও সূকি একাধিকবার আমেরিকায় যায়।
    ১৭) চীন-মায়ানমারের মধ্যে সিনো-মায়ানমার পাইপ লাইন তৈরী কাজ শুরু হয় ২০০৪ সালে। তার ১ বছর আগেই (২০০৩সালে) চীনপন্থী জান্তা সরকার উগ্রবৌদ্ধ নেতা আশ্বিন উইরাথুকে গ্রেফতার করে ২৫ বছরের জন্য জেলে পুরে। কিন্তু আমেরিকাপন্থী থেইন সেইন ক্ষমতায় আসা মাত্র মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই থেকে ছেড়ে দেয়। (২০১২ সালে) ছেড়ে দেয়া হয় এই শর্তে যে, সে এমন একটি বৌদ্ধ আন্দোলন শুরু করবে যার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে তৃতীয় কোন রাষ্ট্রে পাঠিয়ে দেয়া হবে। (http://bit.ly/2hFY2HK)

    এখন থেইন সেইন নেই, নতুন রাষ্ট্রপতি থিন কিয়াও। তবে চীনপন্থী জান্তা থান শ’ নতুন সেনাপ্রধান করে গেছে মিন অং হেইং কে। এ কারণে দেখবেন, মার্কিনপন্থী মিডিয়াগুলো শুরু থেকেই রোহিঙ্গা গণহত্যার দায় থেকে অং সাং সুকিকে বাচাতে চেয়েছে। প্রচার করেছে, “সুকি সেনাবাহিনীর পুতুল, তার কোন ক্ষমতা নেই। সব গণহত্যা হচ্ছে সেনাপ্রধানের নির্দেশনায়।” কারণ সুকির তো সিল মারা আমেরিকাপন্থী। সুকি গণহত্যায় ইন্ধন দিয়েছে এটা প্রমাণিত হলে রোহিঙ্গা গণহত্যা সিআইএ’র দিক নির্দেশনায় হয়েছে এমনটা প্রমাণিত হয়। সে কারণে গুটি ছুড়ে দেয়া হযেছে সুকির থেকে সেনাপ্রধান মিন অং হেইং এর দিকে, (কারণ-বার্মীজ সেনাবাহিনীর মধ্যে চীনপন্থী আছে) যেন গণহত্যায় চীন জড়িত এটা প্রমাণ করা যায়। এরপর চীনকে সামাল দিতে আমেরিকা আসবে, এটাই তো স্বাভাবিক। যদিও জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রধান জায়দ রাদ আল হোসেন এক ফাকে দাবি করে বসেন, সুকি-ই সেনাবাহিনীকে উৎসাহিত করেছিলো এই রোহিঙ্গা গণহত্যা করতে। (http://bit.ly/2hkoLGL)

    বার্মীজ সেনাবাহিনী কতটুকু চীনপন্থী সেটা আমার জানা নাই। কিন্তু সুকি ক্ষমতা পাওয়ার পর থেকে চীনের সাথে ব্যবসা বাণিজ্য সম্পর্ক করে নিজেকে চীনপন্থী হিসেবে প্রচার করতে চেয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তার গোড়াই তো আমেরিকার সাথে লাগানো। আম গাছে তো আর ডালিম ফল ধরবে না।

    লেখাটা শুরু করেছিলাম, মিখাইল গর্বাচেভ আর সুকির সাথে তুলনা করে। সুকি দীর্ঘ সময় জেলে থেকে দেখেছে স্বাভাবিক উপায়ে আমেরিকার দালালি করলে সে চীনপন্থী সেনাবাহিনীর কাছে ধরা খেয়ে যাবে। আবার জেলে যেতে হতে পারে। এজন্য সে সাম্প্রদায়িকতার আশ্রয় নিয়েছে। পুরো দেশকে সাম্প্রদায়িকতার ফাদে ফেলে রোহিঙ্গাদের সরিয়ে দিয়ে একদিকে যেমন চীনের প্রকল্প নষ্ট করেছে, অন্যদিকে আমেরিকাকে ঢোকার রাস্তা করে দিয়েছে।

    যে পলিসি আজ থেকে ৩০ বছর আগে আমেরিকা প্রোয়োগ করে মিখাইল গর্বাচেভকে দিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গেছে, সে একই পলিসি প্রয়োগ করে সে এখন বার্মায় আমেরিকার অবস্থান নেবে, এটা আমিরকার জন্য কঠিন কোন বিষয় না। ৩০ বছর পর মিখাইল গর্বাচেভ স্বীকার করেছে সে জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, হয়ত আরো ৩০ বছর পর সুকিও স্বীকার করবে তার বিশ্বাসঘাতকতার কথা।

    যাই হোক, আমেরিকার বহু আগে থেকেই এই পলিসিগুলো প্রয়োগ করে যাচ্ছে। কিন্তু এগুলো সাধারণ মানুষের ভাবনার অনেক উপরে হওয়ায় এগুলো শুনলে অনেকের কাছে আজগুবি বলে মনে হতে পারে। ক্রিকেটীয় ভাষায়- মাথার উপর দিয়ে যে বল যায় তাকে নো বল বলে।

    লেখার শেষে বলবো-
    আমার এ লেখা চীনের পক্ষ অবলম্বন করে নয়, বরং চীনকে বিপক্ষ দাড় করিয়ে যারা আমেরিকাকে বাংলাদেশে প্রবেশের বৈধতা দিতে চায় তাদের জন্য লেখা। সুতরাং ঐ সব বিশ্বাসঘাতক থেকে সাবধান।


    ------------------------------------------------------------------

    --আমার ফেসবুক মূল পেইজ Noyon chatterjee 5
    (https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
    --পেইজ কোড- 249163178818686 ।

    --আমার ফেসবুক ব্যাকআপ পেইজ-  Noyon Chatterjee 6
    (https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728