বাল্যবিয়ে বন্ধ করায় কিশোরীর আত্মহত্যার হুমকি
বাল্যবিয়ে বন্ধ করায় আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছে এক কিশোরী। কিশোরীর নাম ঝর্ণা আক্তার, বাড়ি ঢাকাস্থ সাভার থানার সদর ইউনিয়নে। ইউএনও’র নির্দেশে পুলিশ বিয়ে বন্ধ করে দেয়ায় কিশোরী ঐ হুমকি দেয়।
খবরে প্রকাশ-
বিয়ে বাড়িতে সাজ সাজ রব। সব আয়োজনও শেষ। বরপক্ষ আসবে। আনন্দঘন মুহূর্তের আর অল্প বাকি। কিন্তু তাতে বাধ সেধেছে আইন! কারণ, পাত্রী যে অপ্রাপ্ত বয়স্ক!
থানার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট পুলিশ পাঠিয়ে বিয়ে ভাঙলেন ঠিকই, কিন্তু বিপত্তি তো বালিকাকে নিয়ে। বিয়ে ভাঙায় কর্তব্যরত পুলিশকে বালিকা সরাসারি বলেই বসলো, ’আপনি আমার বিয়ে ভেঙ্গে দিলেন না তাই আজ রাতে আমি আত্মহত্যা করে মরে যাব।’ এলাকাবাসী জানায়, দুপুরে সাভারের চাঁপাইন এলাকার পান ব্যবসায়ী সামাদ মিয়ার মেয়ে স্থানীয় শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ঝরনা আক্তার রুমির সাথে (১৫) বরিশাল এলাকার জাহাঙ্গীর ইসলাম লিমনের বাল্য বিয়ে হচ্ছিলো কনের বাড়িতে।
পরে এলাকাবাসী বিষয়টি সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও ) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শেখ রাসেল হাসানকে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে সাভার মডেল থানার এস আই মমিনুল ইসলামকে পাঠান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাল্য বিয়ে বন্ধ করে দেন।
এঘটনায় ওই শিক্ষার্থী পুলিশকে হুমকি দেয়, ’আপনি আমার বিয়ে ভেঙ্গে দিলেন, না! আজ রাতেই আমি আত্মহত্যা করে মরে যাব। আমার মরণের জন্য আপনারা দায়ী থাকবেন।’
এদিকে কনের বাড়িতে প্রায় ১০০ জনের জন্য রান্না করা হয়। খাবার না খেয়েই বর পক্ষের লোকজন চলে যায়। (খবরের সূত্র:http://bit.ly/2gWzY3d, http://bit.ly/2hr1VNP )
বাল্যবিয়ে বন্ধ করাকে কৃতিত্ব হিসেবে দেখছে একটি শ্রেণী, আরেকটি প্রচার করছে এর মাধ্যমে নাকি নারী সমাজের উপকৃত হচ্ছে। অথচ বাল্যবিয়ে বন্ধের কারণে নারীরা যে ক্ষতিগ্রস্তও হচ্ছে সেটা কেন এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে ?
একটি মেয়ের বিয়ে মানে-
১) বহু কষ্ট করে তার বাবা-মা বিয়ের খরচের ব্যবস্থা করেন। অনেক ক্ষেত্রে ঋণ করে, জমি বিক্রি করে সেই ব্যবস্থা করা হয়। এ মুহুর্তে যদি বিয়ে বন্ধ করা হয়, তবে পরিবারটির কি অবস্থা হয় একবার ভেবেছেন? একবার বিয়ে বন্ধ করেছেন, কিন্তু পরবর্তীতে বিয়ের খরচ কি সরকার দেবে ?
২) আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় একটি নারীর বিয়ে ভাঙ্গাকে সহজভাবে দেখা হয় না। টিভি-মিডিয়ায় অনেক কিছু দেখানো যায়, কিন্তু বাস্তবতার মোকাবেলা করতে হয় ঐ নারীটিকেই। বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার পর ঐ নারীটিকে সমাজের কাছে কতটুকু নিগৃহিত হতে হয়, অথবা পরবর্তীতে মেয়েটির বিয়ে হতে কতটুকু কষ্ট হয় সেটা কেউ ভেবে দেখে না।
৩) একটি বিয়ে মানে সামান্য কোন বিষয় নয়। দুইটি পরিবারের মধ্যে অনেক বিষয়ের সমন্বয়। বাল্যবিয়ের অজুহাত দিয়ে নারীর বিয়ে বন্ধ করে দিলেও পুরুষ নিশ্চয়ই বিয়ে না করে বসে থাকবে না। ঐ পুরুষটি অন্যত্র বিয়ে করতে পারে। এক্ষেত্রে পছন্দের পুরুষকে না পেয়ে ঐ নারীটির করুণ দশা হওয়া অস্বাভাবিক হয়। হবু বর অন্যত্র বিয়ে করে ফেলায় ১৫ বছরের কিশোরীর আত্মহত্যার ঘটনাও কিন্তু ঘটেছে পাবনাতে। (http://bit.ly/2z1E3ba)
আমার দৃষ্টিতে ইউএনও-টিএনও কর্তৃক বাল্যবিয়ে বন্ধ করার উপকারিতা থেকে অপকারীতা অনেক বেশি। বিশেষ করে এর মাধ্যমে ঐ নারীটির জীবন হুমকির মুখে ফেলানো হয়। অনেক ক্ষেত্রে মেয়েটি আত্মহত্যাও পর্যন্ত করতে পারে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সরকার বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন- ২০১৭ তে বিশেষ সংস্কার করে ‘বিশেষ ধারা’ সংযুক্ত করেছে, যেখানে বিশেষ পরিস্থিতিতে গার্জিয়ান রাজি থাকলে বাল্যবিয়ে বৈধ। (http://bit.ly/2yN5ubl) কিন্তু এই আইন পাশ হয়ে গেলেও ফিল্ড পর্যায়ে প্রশাসন সেটা মানছে না, আইন বহির্ভূতভাবেই বিয়ে বন্ধ করছে। চলছে বাল্যবিয়ে বিরোধী বিদেশী এনজিওগুলোর ইচ্ছামাফিক প্রচারণা।
জনগণ সচেতন না বলেই আজকে আইন লঙ্ঘন করে এভাবে বাল্যবিয়ে বন্ধ করা সম্ভব । একটি স্বাধীন দেশে এভাবে ব্যক্তিস্বাধীনতা হরণ কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।
------------------------------------------------------------------
--আমার ফেসবুক মূল পেইজ Noyon chatterjee 5
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
(https://www.facebook.com/noyonchatterjee5),
--পেইজ কোড- 249163178818686 ।
No comments