তুরষ্ক পাঠ্যবইয়ে জিহাদ ঢুকিয়েছে, বের করেছে বিবর্তনবাদ
কিন্তু তাই বলে তুরষ্ক পিছিয়ে গেছে, অনুন্নত হয়ে গেছে, কুসংস্কারাচ্ছন্ন হয়ে গেছে এমনটা কেউ বলে না, বলতে পারবেও না। কিন্তু বাংলাদেশ তার পাঠ্যবই থেকে কেন ‘জিহাদ’ অধ্যায় বাদ দিচ্ছে, কোন উন্নয়নের দিকে বাংলাদেশের শিক্ষাসেক্টর এগিয়ে যাচ্ছে সেটাই আমার প্রশ্ন ।
২০০৮ এর নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর আওয়ামী সরকারের শিক্ষামন্ত্রনালয় ছিলো সবচেয়ে রহস্যময় সেক্টর। ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদকে পর পর দুই টার্ম সেই মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী রাখা হলো।
আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসেছিলো আমেরিকার বিরোধীতায়, আর চীন-রাশিয়া-ভারতের (কংগ্রেস আমলে) সমর্থনে। কিন্তু সেই সময় কেন বাংলাদেশের শিক্ষা সেক্টরটিকে আমেরিকানপন্থী নুরুল ইসলাম নাহিদের হাতে তুলে দেয়া হলো সেটাই আশ্চর্যজনক ছিলো। সম্ভবত, এই পদটি নিয়ে আওয়ামীলীগের সাথে দেন-দরবার হয় আন্তর্জাতিক মহলে। সেই দেন দরবারে আমেরিকার হাতে চলে যায় বাংলাদেশের শিক্ষা সেক্টর।
বাংলাদেশের শিক্ষা সেক্টরের উপর আমেরিকাপন্থী নাহিদের প্রথম কুঠারাঘাত ছিলো শিক্ষানীতি-২০১০ এর মাধ্যমে। জনগণকে এদিক-ওদিক করে বুঝানো হয়েছিলো- এর মাধ্যমে জনগণের আশা-আশঙ্খাকার প্রতিফলন ঘটবে। কিন্তু ঐ শিক্ষানীতির আলোকে ২০১৩ সালে যে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন হয়, সেটা পরবর্তীতে গণআন্দোলনের মুখে পরিবর্তন করে শিক্ষামন্ত্রানালয় নিজেই প্রমাণ করে, আসলে তাদের কার্যক্রমে ষড়যন্ত্র ছিলো, এবং সেটা ধরে ফেলার কারণেই তাদের রিভার্স হাটতে হয়েছে।
শিক্ষানীতি-২০১০ ঘাটলে-অসাম্প্রদায়িকতা, মুক্তবুদ্ধির চর্চা, সংস্কৃতিমনা এ শব্দগুলো বেশি পাওয়া যায়। যা আগের শিক্ষা সেক্টরে এত অধিক পরিমাণে আলোচিত হতো না, কিন্তু নতুন সেই শিক্ষানীতিতে এ শব্দগুলো বার বার উচ্চারণ করে আসলে আমাদের নতুন প্রজন্মকে কোন দিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়াস চালানো হচ্ছে তা পাঠক শ্রেণী আশাকরি বুঝতে সক্ষম।
বাংলাদেশের শিক্ষাসেক্টরে ইউনেস্কোর একটি বিরাট প্রভাব আছে। নাহিদ নিজেও দুইবার ইউনেস্কোর ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়েছে। ইউনেস্কোর দিক নির্দেশনা মেনেই বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকগুলো তৈরী করা হয়। এক্ষেত্রে ফান্ড আসে বিশ্বব্যাংকসহ অনেক বিদেশী রাষ্ট্র থেকে। মন্ত্রনালয় নিজেও বিভিন্ন এনজিও সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। যেমন- ছাত্রীদের ফেমিনিস্ট বানাতে কিংবা বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে শিক্ষামন্ত্রী ‘স্বর্ণকিশোরী’ বা ‘ঋতু’র মত বেশ কিছু এনজিও সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
নাহিদকে আসলে কেন শিক্ষামন্ত্রী করা হয়েছে, এই প্রশ্নের উত্তর পেতে তিনটি দিকে লক্ষ্য করলে বুঝবেন-
১) মাদ্রাসা বই থেকে ‘জিহাদ’ অধ্যায় তুলে দেয়া – ইসলাম ভুলিয়ে দেয়া,
২) প্রশ্নপত্র ফাঁস – ছাত্রদের পড়ালেখার আগ্রহ নষ্ট করে দেয়া
৩) ভার্সিটি ভতি পরীক্ষায় গণহারে ফেল করা - ছাত্রদের কোয়ালিটি নষ্ট করে দেয়া।
আসলে এতদিনে বাংলাদেশের শিক্ষাসেক্টরের অনেকটাই তছনছ করে দিয়েছে বিদেশী ষড়যন্ত্রকারী। ১৪ই ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবি দিবস পালন করা হয় হাজারখানিক শিক্ষিত ব্যক্তিকে হত্যা করার জন্য। আমার তো মনে হয়, নুরুল ইসলাম নাহিদের মন্ত্রীত্বের ৯ বছর বিশ্বের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বুদ্ধিজীবি হত্যা হয়ে গেছে। কারণ এ সময় পুরো দেশের কোটি কোটি ভবিষ্যত শিক্ষিতকে হত্যা করা হয়েছে। এই ক্ষতি কবে শেষ হবে এবং বাংলাদেশ আগামী কত বছর লাগবে তা পোষাতে, সেই হিসেবটা করাই এখন জরুরী।
তথ্যসূত্র:
১) তুরষ্কের পাঠ্যবইয়ের খবর- http://bbc.in/2wBSRu5
২) শিক্ষানীতি-২০১০ - http://bit.ly/2k6S3df]
৩) এনজিও স্বর্ণকিশোরীর সাথে শিক্ষামন্ত্রনালয়ের চূক্তি - http://bit.ly/2kC5LUS
৪) এনজিও ঋতুর সাথে শিক্ষামন্ত্রনালয়ের চূক্তি - http://bit.ly/2BlG9U9
========================================
-----------------------------------------------------------------------
(https://www.facebook.com/Noyon-Chatterjee-6-202647270140320/)
-----------------------------------------------------------------------
-----------------------------------------------------------------------
No comments